আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কালের বিবর্তনে



আমরা প্রায় সবসময়ই কাল শব্দটার অর্থের গরমিল করে ফেলি। আগামীকালকেও কাল বলি আর গতকালকেও কাল বলি। যাই হোক আমার কোন আপত্তি নেই বাঙালি জাতির এই কালের গরমিল নিয়ে। তাহলে বলছি কেন? বলছি এই কারণে, যে আগামীকালের লেজের সাথে গতকালে মাথা আর গতকালের লেজের সাথে আগামীকালের মাথা জড়িয়ে ফেললেই কি দুনিয়া থেকে গতকাল বা অতীতকাল শব্দটা মুছে যাবে, নাকি আগামীকাল বা ভবিষ্যৎকাল শব্দটি পৃথিবীতে চির অমর হয়ে যাবে। আমার এই কথাগুলো বলার কারণ একটু পরে বলছি।

তার বলি একটা গল্প। গল্পটা আমি মোজাম্মেল হোসেন ত্বোহার লেখা “একুশ তুমি কোথায়” হতে নেয়া। এই গল্পের মধ্যে তাদের স্কুলের প্রধান শিক্ষক জনাব নুরু সাহেবকে নিয়ে। এই গল্পের মধ্যে নুরু সাহেব তার স্কুলে ২১শে ফেব্রুয়ারীর বন্ধ না দেওয়ায় লেখক নিজে গিয়ে এর কারণ জিজ্ঞাসা করলে জানা যায় নুরু সাহেব ভুলেই গিয়েছেন আজ একুশে ফেব্রুয়ারীর কথা। আবার নিজের মন থেকে কোন রকম দুঃখ প্রকাশ না করে সে বলল থাক এক বছর বন্ধ না দিলে কিছু হবে না।

আপনারা অনেকে হয়তো বলবেন যে বন্ধ দিয়ে কি আসে যায়। কিন্তু এখানে প্রশ্ন বন্ধের না প্রশ্ন হল ভাষা শহীদদের স্মরণ করা। যাই হোক শেষের দিক দিয়ে লেখক বলেছেন একদিন হয়তো ২১শে ফেব্রুয়ারীর অস্তিত্ব খুজঁতে কাউকে রাজপথে চিৎকার করে গাইতে হবে “ও একুশ, তুমি কোথায়?” আমার মতে শুধু লেখকের লিবিয়াতে নয় আমাদের মাতৃভুমি বাংলাদেশেও আজ কালের বিবর্তনে এসব আন্তর্জাতিক দিবস গুলো হালকা হয়ে যাচ্ছে। আমরা যদি আমাদের শহীদদের আত্মত্যাগ আর দানের কথা স্মরণ রেখে দেশের জন্য দরদ দিয়ে কিছু করতাম তাহলে হয়তো বা আমাদের দেশটা ক্ষণস্থায়ী কোন স্বর্গে পরিণত হতো। কিন্তু আমাদের কার কাছেই বা এতো সময় যে আমরা শহীদদের কথা স্মরণ করব।

আমরা শহীদদের আসল দান ভুলে গিয়ে শুধু দিবসটা পালন করি। দিবস শেষ তো শহীদরা আবার ১ বছরের জন্য আমাদের মধ্য থেকে বিদায় নেয়। আমি বলি আমরা সামান্য একটা শব্দ কালের গরমিল করতে করতে সত্যি সত্যি আমাদের অতীত আমাদের আসল অস্তিত্বকে পদতলে দুমড়ে মুছড়ে নষ্ট করে দিচ্ছি। সেই লেখক মোজাম্মেল হোসেন ত্বোহা আমার বন্ধু। তাই আমি বলতে চাই সে হয়তো এখনো বড় কোন লেখক হয়নি, হয়তো বা খুব শীঘ্রই হবে।

কিন্তু তার এই কথা “ও একুশ, তুমি কোথায়?” আমাদের বাঙালি জাতির জন্য লজ্জাদায়ক ভবিষ্যৎবাণী হিসেবে চিরকাল থাকবে। তাই আসুন এই ভবিষ্যৎবাণীকে নষ্ট করার জন্য আমরা আমাদের ইতিহাসকে পুণর্জীবিত করি।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।