আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অবিশ্বাস বিষয়বস্তু

তোমাকে ছাড়া বাচতে পারবো না.....

মানুষগুলো দিনকে দিন কি হচ্ছে টেরতো পাচ্ছেন। চারপাশে ঘুরঘুর করতে থাকা মানুষের একটারও আসল চেহারা আপনি ধরতে পারছেন না। কাকে বিশ্বাস করবেন বা করবেন না তা নির্ণয় করার কোন প্রক্রিয়ায় কিন্তু আপনার কাজে লাগছে না। টাকা পয়সার লেনদেনে এ বিশ্বাসের চৌদ্দগোষ্ঠী উদ্ধার হচ্ছে নিয়ত, এ বিষয়ে লেখার কোন উদ্দেশ্য নেই আপাতত। প্রেম, বিয়ে এসব নিয়ে যে সব অবিশ্বাসের কারবার চলে তারই কিছু লিখবার চেষ্টা করব।

কালের কণ্ঠে গত ২৬ অক্টোবর প্রিয় দেশ পাতায় একটা রিপোর্ট পড়ে এ লেখাটি লিখতে বসেছি। রিপোর্টটির শিরোনাম ছিল “মোবাইলে ভালো কথা কতো বিয়ের পর আসল চিহারা দেহি ”। মাগুরার শিমু বেগম নামের এক মহিলা খোকা মুন্সি নামের একজনকে বিয়ে করেছে মোবাইলে পরিচয়ের সূত্র ধরে। ভালোবাসার সেই মানুষটার ভেতর যে একটা পশু লুকিয়ে থাকতে পারে তা নির্যাতিত হবার আগে মাথায় আসেনি। তার স্বামীটি যৌতুকে জন্য তার উপর নির্মম নির্যাতন চালায়।

আগুনে বাটি গরম করে পিঠে লাগিয়ে দেয়, সিগারেটের ছ্যাকা দেয় এমনকি গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে দিতেও চায়। ভালোবাসা অন্ধ বলে যারা বলেন তাদের কথা ধরলে বলতে হয় আসলেই ভালোবাসা মানুষকে অন্ধ করে দিয়ে তার যৌক্তিক বুদ্ধিকে নাশ করে দেয়। নির্যাতন নয় শুধু, এসিড নিক্ষেপ সহ নির্মম খুনের শিকারও হতে হচ্ছে প্রেমিকের হাতে। অনেক বছরের প্রেমের পর্যায় ফেলে কোন জুটি হয়ত বিয়ে করেছে। বিয়ের বয়স বছর না পেরুতেই গুণধর প্রেমিকবর আবির্ভূত হন হন্তারক রূপে।

তখন সময় থাকেনা সে মানুষটাকে ভুল হিসেবে ধরে নিয়ে শুধরে নেয়ার। পরিচিত এক মহিলা বিশ্বাস ভঙ্গ নিয়ে তার একান্ত একটি ঘটনা জানিয়ে ছিলেন। স্কুল লাইফ থেকেই প্রেম করতেন ক্লাসমেট এর সাথে। সে সময় গুলোতে তার প্রেমিক ছিল তার ধ্যান জ্ঞান, তাকে যে কখনো ভুলতে হবে, তাকে ছাড়া যে কখনো তাকে বাঁচতে হবে এমন কল্পনাও তিনি করতে পারতেন না। প্রেমিকের জন্য তিনি বহুদিন ধরে পরিবারের সাথে যুদ্ধ করে চালিয়ে ছিলেন।

সাতটি বছরের প্রেমের অধ্যায় অতিক্রান্ত হবার সময় প্রেমিক তার প্রতি অবহেলা শুরু করে। সে অবহেলা এক সময় সম্পর্ক ধ্বংসের কারণ হয়। পরে জানতে পারেন প্রেমিক অন্য একজনের সাথে জড়িয়ে আছে। তিনি এখন বিশ্বাস করেন প্রকৃত বিশ্বাস ব্যাপারটি দুনিয়া থেকে হারিয়ে গেছে। ছুটির দিনগুলোতে প্রেমিক জুটিরা কলকল করে বেড়ায়, দেখতে বেশ লাগে।

তাদের কজনই বলুন শেষ পর্যন্ত জোড় পাততে পারবে। অথবা জোড় পাততে পারলেও যে সেই ফারজানা যে তার দু সন্তান সমেত আত্মহত্যা করেছিল তার মত পরিণতি বরণ করবে না তার গ্যারান্টি কি। তা হলে কি সকল বিশ্বাসকেই প্রশ্নবিদ্ধ করতে হবে? সত্য বিশ্বাস নির্ণয় করতে চাইলে কোন সূত্র প্রয়োগ করা উচিত? বাস্তব জ্ঞান না হারালে আপনার সিদ্ধান্ত পজিটিভ হতে বাধ্য। আবেগের বাড়াবাড়িকে নিয়ন্ত্রণ করুন, চূড়ান্ত অবস্থায়ও আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে। আমি নিজে বিশ্বাস করি ভালোবাসার অপরপিঠে থাকে প্রতিহিংসা।

পয়সার এ পিঠ ওপিঠ দূরত্ব কতটুকুইবা। একটু এদিক ওদিক হলেই প্রেমিক জানোয়ার হয়ে যায় যার নজির তো দেখছেনই। মিতাত যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নিয়ে তার প্রেমিককে ফিরিয়ে দিয়েছিল, তার বদলে সে মরল প্রেমিকের প্রতিহিংসার খেসারত দিতে গিয়ে। গ্রহণ করুন বা বর্জন করুন, সতর্কতার সাথে করুন। প্রেম ও প্রেমিককে গোপন করতে গিয়ে অনেক সময় নিজের জন্যই তৈরি করছেন বিস্তর বিপদের সুযোগ।

আব্বাস কিয়ারোস্তামির একটি ফিল্ম দেখলাম, নাম - টেন। সেখানে একটা অংশে ফিল্ম এর প্রধান চরিত্রের সাথে কথা হচ্ছিল একজন সেক্স ওয়ার্কার এর সাথে। সে তাকে একটা অভিজ্ঞতা শেয়ার করল “কিছু বিবাহিত পুরুষ যখন আমার সাথে বিছানায় যায় তখন তাদের মোবাইলে তাদের স্ত্রীর ফোন আসে, তারা তাদের সুইটহার্ট বলে ডাকে, বিদায় বেলায় আই লাভ ইউ বলে। “বিবাহ করে তুমি তোমার স্বামীর প্রতি বিশ্বাস রাখছ, কিন্তু তুমি বুঝছ না যে তারও রক্ষিতা আছে”। ফিল্মটিতে ইরানের পরিবর্তীত পরিবেশে মহিলাদের যে সব সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে তারই কিছু আলোকপাত করা হয়।

অবিশ্বস্ত দুনিয়ায় চোখ কান খুলে রাখা চাই, অন্য সবকিছুর চেয়ে নিজের প্রতিই বেশি ভালোবাসা থাকা চাই। একটা জীবন মাত্র, কারো উপর বেশি বিশ্বাসী হওয়া যেমন ঠিক নয় কাউকে বেশি উজাড় করে দেয়াও ঠিক নয় যেন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।