আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফারুকের হাজারীপ্রেম



জয়নাল হাজারীকে সন্ত্রাসীদের 'গডফাদার' বলে বিএনপি প্রচার চালালেও তাকে সমাজসেবক হিসেবে তুলে ধরে সংসদীয় কমিটির এক বৈঠকে বক্তব্য রেখেছেন সেই দলেরই নেতা জয়নুল আবদিন ফারুক। গত ২৬ আগস্ট তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিরোধীদলীয় প্রধান হুইপ ফারুক আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য হাজারীর প্রশস্তি করে বক্তব্য রাখেন বলের সভার কার্যবিবরণীতে দেখা যায়। প্রেস কাউন্সিল নিয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে ফারুক বলেন, "জয়নাল হাজারীকে শুধু একটি পত্রিকার সংবাদই ডুবিয়েছে। তিনি (হাজারী) যা রুজি করতেন, তার সবই গরিব মানুষের কাছে বিতরণ করতেন। কিছুই তার নাই।

তিনি ভিন্ন দলের হতে পারেন, তবে সমাজসেবায় তার যে অপূরণীয় দান আছে, সে কথা তো বলতেই হবে। " জয়নাল হাজারী ও জয়নুল আবদিন ফারুক পাশাপাশি এলাকার বাসিন্দা। হাজারী ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। আর বিএনপির প্রচার সম্পাদক ফারুক ফেনী লাগোয়া নোয়াখালী-২ আসনের সংসদ সদস্য। ২০০১ সালে নির্বাচনের আগে হাজারীর কর্মকাণ্ড তুলে ধরে বিএনপি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রচার চালায়।

দলের বিভিন্ন জনসভায় বলা হয়, আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় গেলে হাজারীর মতো কয়েকশ 'গডফাদার' তৈরি হবে। দলের ঠিক বিপরীত বক্তব্য সংসদীয় কমিটিতে দেওয়ার কারণ জানতে চাওয়া হলে ফারুক এ ধরনের বক্তব্য দেওয়ার কথা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম-এর কাছে অস্বীকার করেন; যদিও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম এর কাছে ওই সভার কার্যবিবরণীর অনুলিপি রয়েছে। ফারুকের এ বক্তব্যের বিষয়ে তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ওবায়দুল কাদের রোববার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "তারা (বিএনপি) রাজনৈতিক স্বার্থ সিদ্ধির জন্য এ ধরনের কথা (জয়নাল হাজারীকে সন্ত্রাসীদের গডফাদার বলা) বলেন। "তারা সরকারে থাকলে এক কথা বলেন, আর বিরোধী দলে থাকলে আরেক কথা বলেন", মন্তব্য আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাদেরের। চারদলীয় জোট ক্ষমতায় থাকাকালে নিজের নির্বাচনী এলাকা সেনবাগে সন্ত্রাসীদের মদদ দেওয়ার অভিযোগ ফারুকের বিরুদ্ধেও রয়েছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের গত মেয়াদে সন্ত্রাসী তৎপরতায় মদদ দেওয়ার জন্য সংবাদ মাধ্যমে আলোচিত ছিলেন হাজারী। হাজারীর অনুসারীরা এক সাংবাদিককে পিটিয়ে আহত করলে সারাদেশে নিন্দার ঝড় ওঠে। তখন সংসদে দাঁড়িয়ে সংবাদ মাধ্যমের সমালোচনা করেছিলেন হাজারী। ২০০১ সালে নির্বাচনের পরপরই দেশ ছাড়েন হাজারী। তবে ২০০৮ সালের নির্বাচনের ঠিক আগে দেশে ফেরেন তিনি।

তবে নির্বাচনের আগেই আওয়ামী লীগ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। সংসদীয় কমিটির ওই বৈঠকে ওবায়দুল কাদের সভাপতিত্ব করেন। নোয়াখালীতে তার নির্বাচনী এলাকা ফারুকের এলাকার পাশেই। বৈঠকে সংসদ সদস্যরা সংবাদ মাধ্যমের ওপর নজরদারি বাড়াতে প্রেস কাউন্সিলকে আরো গতিশীল করার পরামর্শ দেন। হাজারীকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করা সংবাদপত্রের নাম উল্লেখ না করে ফারুক বলেন, "এ পত্রিকার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

" ফারুক প্রেস কাউন্সিলকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানালে তার সঙ্গে সহমত পোষণ করে সরকারদলীয় সংসদ সদস্য সারাহ্ বেগম কবরী বলেন, তার বিরুদ্ধেও বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় 'অসত্য ও মানহানিকর' সংবাদ প্রকাশ হচ্ছে। এতে তিনি সামাজিকভাবে হেয় হচ্ছেন। বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য শাহিন মনোয়ারা হক ও এবিএম মোজাম্মেল হক।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.