আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব। বিএনপির সামনে এখন একটাই পথ। সংসদ থেকে পদত্যাগ, না হয় যোগদান। সংসদ সদস্যপদ রক্ষা করতে হলে আগামী বাজেট অধিবেশনে যোগ দিতেই হবে বিএনপিকে। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়াসহ বিএনপির সংসদ সদস্যরা পদ হারানোর ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
দলটির একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্রই আভাস দিয়েছেন, এখনই সংসদ থেকে পদত্যাগের মতো চরম ঝুঁকিতে যাবেন না তাঁরা। একদিনের জন্য হলেও সংসদ অধিবেশনে যোগ দিয়ে সদস্যপদ রক্ষার সিদ্ধান্তই নেবে বিএনপি।
বাংলাদেশের ইতিহাসে চলতি নবম জাতীয় সংসদ ইতোমধ্যে বর্জনের রেকর্ড সৃষ্টি করেছে বিএনপি। এর আগে বিভিন্ন সংসদ অধিবেশনে বিরোধী দলগুলো এভাবে এত বেশিদিন সংসদ বর্জন করেনি। সংসদ বর্জনের ক্ষেত্রে অতীতের সকল রেকর্ডও ভঙ্গ করেছেন বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া।
বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে বর্তমান নবম জাতীয় সংসদে এ পর্যন্ত ৩৭০ কার্যদিবসের মধ্যে মাত্র আটদিন উপস্থিত ছিলেন তিনি।
সংবিধানের বিধান অনুযায়ী, সংসদে টানা ৯০ দিন কার্যদিবস অনুপস্থিত থাকলে সংসদ সদস্যপদ খারিজ হয়ে যায়। সংসদ সচিবালয়ের তথ্যানুযায়ী, সংসদে বিরোধী দলের অনুপস্থিতি সদ্য শেষ হওয়া সপ্তদশ অধিবেশন পর্যন্ত ৮৩ কার্যদিবস ছুঁয়েছে। আগামী বাজেট অধিবেশনটি হবে দীর্ঘ। তাই আর মাত্র ৭ কার্যদিবস সংসদে অনুপস্থিত থাকলে বিএনপি ও জামায়াতের সংসদ সদস্যরা তাঁদের পদ হারাবেন।
যে হিসেবে সদস্য পদ রাখতে হলে আগামী জুন মাস থেকে শুরু হওয়া বাজেট অধিবেশনে যোগ দিতেই হবে বিএনপি ও জামায়াতের সংসদ সদস্যদের।
মাত্র ক’দিন আগেই হেফাজতকে সামনে রেখে বিরোধী দল বিএনপি-জামায়াতের সরকার উৎখাতের পরিকল্পনা ফাঁস হয়ে গেলেও শনিবার এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও তাদের সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়েছেন। আসন্ন বাজেট অধিবেশনে যোগ দেয়ারও আহ্বান জানিয়ে বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে সংসদ নেতা বলেন, সরকার উৎখাতের নামে মানুষ হত্যা ও তা-ব বন্ধ করে সংসদে আসুন। যা বলার সেখানেই বলুন। সব কথা আমরা শুনবো।
আলোচনার মাধ্যমেই সব সমস্যার সমাধান হবে।
সংলাপে বসতে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানের প্রতিক্রিয়ায় শনিবার বিরোধী দলের নেতার উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, আমরা সংলাপের বিপক্ষে নই, সংলাপের পক্ষে। এ জন্য পরিবেশ থাকতে হবে। নেতাদের আটক রেখে সংলাপ হবে কীভাবে? তাই প্রধানমন্ত্রীকে বলব, পরিবেশ ঠিক করে আপনি সংলাপের কথা বলুন। আমাদের আপত্তি থাকবে না।
কিসের জন্য সংলাপে যাব, তাও স্পষ্ট করে বলুন।
বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিএনপির পক্ষ থেকে এখনো সংসদে ফেরার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আগামী নির্বাচনের এখনও সাত মাস বাকি রয়েছে। এখনই সংসদ থেকে পদত্যাগ করলে উল্টো বেকায়দায় পড়তে হবে বিরোধী দলকেই। নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়াকে বিরোধী দলের নেতার পদও হারাতে হবে।
এসব দিক বিবেচনা করে সংসদ থেকে এখনই পদত্যাগ নয়, বরং বাজেট অধিবেশনে যোগ দিয়ে বিভিন্ন দাবিতে ঝড় তোলার পক্ষেই বিএনপির অধিকাংশ সংসদ সদস্যরা।
নতুন স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীও বিরোধী দলকে বাজেট অধিবেশনে যোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। আগামী অধিবেশনে তাঁর সভাপতিত্বেই পরিচালিত হবে জাতীয় সংসদ। সেক্ষেত্রে বিরোধী দল সদস্যপদ রক্ষায় অধিবেশনে যোগ দিলে নতুন এই স্পীকারের জন্য অগ্নিপরীক্ষায় হবে। সদস্যপদ রক্ষায় অতীতের মতো একদিনের জন্য সংসদে যোগ দিয়েই বিএনপি বর্জনের পথে গেলে তখন কিছুটা কম চাপ সইতে হবে স্পীকার শিরীন শারমিনকে।
বিএনপির সব পক্ষের সঙ্গেই কথা বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে, আগামী বাজেট অধিবেশনেই যোগ দিচ্ছে বিএনপি। তবে একদিনের জন্য, নাকি বাজেট অধিবেশনের পুরোটাই থাকবে, সংসদীয় দলের বৈঠক থেকেই সে সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। সুত্র ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।