লেখার চেয়ে পড়ায় আগ্রহী। ধার্মিক, পরমতসহিষ্ণু।
বন্ধু-১: তা কেমন আছেন? অনেক দিন পর দেখা...
বন্ধু-২: আর বলবেন না। একেবারে নাকাল...
বন্ধু-১: তাই তো শুনতে চাই...
বন্ধু-২: আমাকে তো ওরা বের করে দিতে চাইছিল।
বন্ধু-১: ওরা মানে কারা?
বন্ধু-২: শিক্ষকরা, সবাই একজোট হয়ে...
বন্ধু-১: কেন? দোষ কী আপনার?
বন্ধু-২: আলিয়ায় মাদরাসায় পরীক্ষা দিচ্ছি, এই অভিযোগে...
বন্ধু-১: এখনো এ অবস্থা আছে নাকি?
বন্ধু-২: ১০০%।
বন্ধু-১: তারপর কী হল? বের করে নি কেন?
বন্ধু-২: তাদের সম্মিলিত প্রস্তাব কমিটি মেনে নেয় নি। কমিটি বরং বলে দিয়েছে, শিক্ষক হিসাবে যেহেতু ভাল, থাকতে থাকুক। তাছাড়া বছরের মাঝখানে বের করে দিলে ছাত্রদের পড়াশোনার ক্ষতি হতে পারে।
বন্ধু-১: ভাগ্যের জোরে বেঁচে গেলেন তাহলে?
বন্ধু-২: শুনুন না শেষপর্যন্ত। শর্তযুক্তভাবে পরীক্ষার অনুমতি দেওয়া হল।
শর্তগুলো হল: (ক) কোনো ছাত্রকে এ-ব্যাপারে কিছুই জানতে দেওয়া যাবে না। (খ) শিক্ষক বা ছাত্র কাউকে এ-ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করা যাবে না। (গ) এ সম্পর্কিত কোনো বই ছাত্রদের সামনে পড়া যাবে না। (ঘ) ভবিষ্যতে এখান থেকে আর কোনো পরীক্ষায় অংশ নেওয়া যাবে না। (ঙ) পরীক্ষার দিন সকালে ফজরের পরপর মাদরাসার নির্ধারিত ক্লাসগুলো করে পরেই তবে বের হতে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি...
বন্ধু-১: তবুও আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করুন।
যে-কোনোভাবেই হোক, আপনি পগার পাড়।
বন্ধু-২: আরো হাস্যকর কাহিনি শুনুন। আমার তারবিয়াতের জন্য কাকরাইল-সংশ্লিষ্ট এক মুরব্বিকে দাওয়াত দিয়ে আনা হল। তিনি ‘ইলমি মাশগালা’র শ্রেষ্ঠত্ব, দুনিয়ার মোহত্যাগ ইত্যাদি বিষয়ে ওয়াজ করেন। কিন্তু ফাঁকে বলে ফেলেন, তাঁর এক মেয়ের জামাই খুব ভাল আলেম।
দাউরায়ে হাদিস পাশ; মুফতি। উপরন্তু দাখিল, আলিম, অনার্স ও মাস্টার্সে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট!
বন্ধু-১: খুব মজার তো!
বন্ধু-২: অবশ্যই! আরো শুনুন। মাদরাসায় ল্যাপটপ ব্যবহার করা যাবে না! সেখানে আমার ছাড়া অন্য কারো ল্যাপটপ নেই।
বন্ধু-১: তাহলে আমার ডেস্কটপটা নিয়ে যান।
বন্ধু-২: পাগলে পাইছে না-কি আমারে? তখন হয়ত বেরই করে দেবে!
বন্ধু-১: পরীক্ষার প্রশ্ন-টশ্ন কীভাবে করেন তাহলে?
বন্ধু-২: বাইরে থেকে করে নিয়ে আসা হয়।
বন্ধু-১: ‘মোহতামিম’ মনে হয় খুব বয়সী, আদ্যিকালের মানুষ?
বন্ধু-২: তরুণ, তরুণ। এক শিল্প-উদ্যোক্তার ছেলে! সাম্প্রতিক সময়েই তিনি দাওরা পাশ করেন। প্রসিদ্ধ (?) এক জায়গা থেকে ইফতায় পড়েছেন।
বন্ধু-১: যতদূর জানি, সম্প্রতি প্রসিদ্ধ (?) এ জায়গাটি দলছুট কওমি আলেম ও তালাবা অর্থাৎ যারা কওমি থেকে পড়াশোনা করে আলিয়া, কলেজ-ভার্সিটিতে পড়াশোনা করছে বা সম্পন্নকারী, তাদের নিয়ে একটি সেমিনার করেছে।
বন্ধু-২: এরা কি এগুলো সমর্থন করে? কে এর উদ্যোক্তা? আমাকে তথ্য দিন।
এই কেন্দ্রের কথা বললে আমার হয়ত ছাড় মিলতে পারে। আমার মাদরাসার ‘মোহতামিম’ আবার এদের খুব ভক্ত!
বন্ধু-১: আপনাদের ছাত্রসংখ্যা কত?
বন্ধু-২: অনেক, অনেক। পার্শ্ববর্তী মাদরাসার তুলনায় অনেক বেশি। খাবার ও পড়াশোনার মান খুব ভাল।
বন্ধু-১: পরীক্ষা তো শেষ।
এবার দেখুন, অন্য কোথাও ভাল সুবিধা হয় কি-না?
বন্ধু-২: মসজিদে যেতে চাচ্ছি না। ‘ইলমি মাশগালা’য় থাকতে চাই।
বন্ধু-১: আমি আপনার পাশে সব-সময়ই থাকব, ইনশা আল্লাহ।
বন্ধু-২: আমার কথা তো অনেক শুনলেন। এবার ভাবী-বাচ্চার কথা বলুন...
টীকা-১: ‘ইলমি মাশগালা’ মানে পাঠদান-বিষয়ক পেশা
টীকা-২: ‘মোহতামিম’ মানে প্রধান পরিচালক/ হেড মাওলানা
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।