আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমরা কি মধ্যযুগের চাইতেও পিছিয়ে আছি ?

সময়, কবিতা, ছোটগল্প, দেশ, দেশাচার

অভিযোগ করার আগে অভিযুক্তকারীকে তা প্রমান সহ অভিযোগ দাঁড করাতে হয়। এটা তার আইনগত ও অভিযোগকারী যদি সৎ হন, তাহলে নৈতিক দ্বায়িত্বের পর্যায়ে পড়ে। তারপরই অভিযুক্তের ইচ্ছে ও দ্বায়িত্বের উপর নির্ভর করে, সে অভিযোগকে খন্ডন করার। আমাদের বাঙ্গালীদের সেসব বালাই নেই। আমরা প্রমাণ ছাড়াই ভুড়ি ভুড়ি অভিযোগ দাঁড করাতে জানি।

কথায় ও মাঝে মাঝে শক্তির ব্যাবহারে অভিযুক্তকে ছিন্নভিন্ন করতে পারি। অভিযোগ করার আগে নিজেদের চেহারা একবার আয়নায় দেখে নেয়ার কোন প্রয়োজন অনুভব করি না আমরা। যাত্রাদলের অভিনেতার মতো গলা কাঁপিয়ে, জান গেল মান গেল বলে মুখর হয়ে উঠি। এ দিক দিয়ে আমরা অনেকটাই আমেরকিার বুশ চরিত্রের কাছাকাছি দাঁড়াতে পারি। ওখানেও নাকি অভিযুক্তকেরই দ্বায়িত্ব, নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার।

ব্লগেও আমাদের এই চরিত্রের প্রতিফলন ঘটছে প্রতিবারই। ছোট উদাহরণ দিচ্ছি: অবলীলায় বলে যাচ্ছি, ব্লগার 2, ব্লগার 8, ব্লগার 6 সবাই একই ব্যাক্তি। আমাদের এসব বলতে প্রমান লাগে না। প্রমান ছাড়া এসব বলতে আমাদের সামান্যও গলা কাঁপে না। "এর কারণে এটা হচ্ছে, পাঁচ এর জন্যে সতেরো দায়ী, বারোর জন্যে একুশ"- আমাদের নামতার শেষ নেই।

এ নামতার জন্যে কোন প্রমান লাগে না, এ নামতা আমাদের মজ্জাগত। আমরা একেকজন একেকটা বিচারক, শুধুমাত্র নিজেদের বিচারটুকু করতে জানি না। মাঝে মাঝে প্রশ্ন জাগে, আমরা কি আমাদের চিন্তা করার শক্তি হারিয়ে ফেলেছি? নাকি আমরা জাতিগতভাবেই এমন? এজন্যেই কি বলা হয়, হুজুগে বাঙ্গালী ? কতগুলো প্রবাদ মনে পড়ছে তাই। ভাঙ্গা কলসী নড়ে বেশী। চিলে কান নিয়েছে ভেবে কানে হাত না দিয়ে চিলের পেছনে দৌড়ানো আমাদের স্বভাব।

মধ্যযুগে পাথর ছুড়ে মারা হতো অপরাধীদের। সবাই বেশ আনন্দের সাথে অংশ নিত তাতে। অপরাধীর রক্তাক্ত চেহারা দেখে পৈশাচিক আনন্দের সাগরে ভাসতো। এক বুদ্ধিমান বিচারক নিয়ম করলেন, যে জীবনে কোন অপরাধ করে নি, একমাত্র তারই অধিকার আছে পাথর ছোড়ার। তখন কেউ আর পাথর ছুড়তে এগিয়ে আসতে সাহস পেলো না।

হয়তো এটা মধ্যযুগ বলেই সম্ভব হয়েছে, নিদেনপক্ষে তারা পাথর ছোড়া থেকে বিরত হয়েছে। আমাদের বাঙ্গালীদের বেলায় এরপরও থামতো না কেউ। আমরা কি মধ্যযুগের চাইতেও পিছিয়ে?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.