পিনপতন নিস্তধ্বতা
শহরটা জীবনানন্দের। অনেকবছর তিনি থেকেছেন এখানে। এই শহরের রাস্তা ধরে তিনি আনমনে কত সন্ধ্যায় হেঁটে গেছেন, হাঁটতে হাঁটতে হয়তো নতুন কোন কবিতার কথা ভেবেছেন। তাই যখনই এই শহরটাতে আসি জীবনানন্দের সাথে একটা প্রত্যক্ষ আত্মিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়। শহরটা শুধু কবি জীবনানন্দ দাশের নয়, শহরটা পুরোপুরি আমারও।
আমার মত আরও অনেকেরই। এই শহরেই আমার বেড়ে ওঠা, স্বপ্ন দেখা। বর্তমানে রাজধানীতে থাকলেও আমি নিজেকে বরিশালের ছেলে হিসেবে পরিচয় দিতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি, স্বস্তি লাগে।
তবে জীবনানন্দের শহরে বসে কবির কবিতা বা ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে তেমন কোন ধারণা ছিলোনা। ছোট ছিলাম তাই হয়তো, তবে জীবনের প্রথম আবৃত্তি করা কবিতাটা ছিলো জীবনানন্দ দাশের ‘আবার আসিব ফিরে’।
বরিশাল শহরটা অন্তরঙ্গ এক শহর। আর কবি জীবনানন্দ দাশের বাড়ির নাম ‘ধাঁনসিড়ি’। আমি বিশ্বাস করি বরিশালের যারা সংস্কৃতি চর্চা করেন বিশেষ করে কবিতার সাথে যাদের সখ্যতা আছে তাদের মধ্যে কবি জীবনানন্দ দাশের একটা প্রভাব থাকবেই। আমি যতবার জীবনানন্দের কবিতা পড়েছি ততবারই মনে হয়েছে অনুভূতিগুলো এখনও সক্রিয় আছে, হৃৎপিন্ড চলছে, কারণ জীবনানন্দের কবিতা বুঝতে পারছি। কবিতার ক্ষেত্রে ছোট্ট এই শহরটার একটা প্রচ্ছন্ন প্রভাব আছে বলে আমি মনে করি।
পরিপাটি শহরের শেষ প্রান্তে কীর্তনখোলা, শহরের ছোট ছোট গলি, রিকশা, ছিমছাম সাজানো বাড়িঘর, চার রাস্তার মোড়, বিবির পুকুর সবকিছু নির্জনতা প্রিয় মানুষকে আপন করে নিবে। সবকিছু মিলিয়ে শহরটার পরিবেশ এমন যে ভালো লাগতে বাধ্য। তাই এই শহর ছেড়ে যতদূরেই থাকিনা কেন, যত ঝলমল সড়ক ধরেই হাটিনা কেন মনের মধ্যে বরিশালের রাস্তাগুলোই গেঁথে আছে। যেসব রাস্তা ধরে বিকেল বা সন্ধ্যায় অনেকদূর হেঁটে যেতে ভীষণ ভালো লাগে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।