আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাঙালির হাতের এত শক্তি?? (বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাল্পনিক তাৎক্ষনিক পতিক্রিয়ায় তারা বাঙালির দেহে এত পুষ্টি জেনে খুশি হয়েছেন)।

বিশেষ তেমন কিছুই আমার নেই। সাধারন একটা মানুষ আমি। সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণঃ রাস্তা ঘাটে দেয়াল দেখলেই নারা দিবেন না। এমন কি হিসু ও করবেন না। কোন দুর্ঘটনা ঘইটা গেলে আপনাকে দায়ী করা হবে।

২০২১ সালে হইতো রাস্তার মোড়ে মোড়ে এই টাইপের সাইন বোর্ড দেখা যাবে। আবার কোন কোন মাঠেও খেলা নিষিদ্ধ থাকবে। মাঠের নাড়া চারার প্রভাব যদি আশে পাশের বিল্ডিং এ প্রভাব ফেলে! আমার ভয় অন্য যায়গায়। যদি রাস্তা দিয়ে মানুষের হাঁটা বন্ধ করে দেয়, তখন?? আমি ভাই আড্ডা প্রিয় মানুষ। থাকতে পারব হয়তো ইট, বালু, রডের তৈরি তাসের ঘরে।

কিন্তু বাইরে না বেড়িয়ে থাকতে পারব না। অন্তত আমি পারব না। ফ্লাই ওভার ধস ভবনে আগুন ভবন ধসে পরা এগুলো তো আমাদের দেশে নিত্য দিনের ঘটনা। কিন্তু নাড়া চারা দিয়ে বিল্ডিং ভেঙ্গে ফেলা আসলেই একটা নতুন ইতিহাস। আমাদের মন্ত্রীর বানি।

আমাদের দেশের মন্ত্রিরা যেসব কথা বলেন তা শুনলে অন্যদের হয়তো হাসি পায়, আমার পায় না। আমি শুনে অভ্যস্ত। বিগত সরকারের আমলে বাবর বলেছিলেন, র্যা বের কোন বিশেষ ক্ষমতা নাই, তবে তাদের স্পেসাল পাওয়ার আছে। তিনি এই কথা দিয়ে কি বুঝিয়েছিলেন তা হয়তো আমরা বুঝতে পারিনি। তারা উপর লেবেলের মানুষ, তারাই ভাল জানেন।

তখন শুনেছিলাম কোন এক মন্ত্রিই বলেছিলেন দেশে কোন বেকার নাই, সুমন্ত আসলাম তার লেখায় ঐ মন্ত্রিকে চশমা কিনে দেয়ার কথা উল্লেখ করেছিলেন। কারন তিনি হয়তো ভাল চোখে দেখতেন না, যার ফলে বেকার দেখেন নাই। সুমন্ত আসলাম এখন আমাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রির কথা শুনে নিশ্চয়ই তাঁকে ও কিছু একটা দিতেন। আমরা এখন আর কিছুতেই অবাক হইনা। বর্তমান সরকারের আমলে টিপাইমুখী বাধ নিয়ে যখন সারা দেশ উত্তাল, যে এর প্রভাবে দেশ মরুভুমি হয়ে যেতে পারে, তখন তাদের মুখেই শুনেছিলাম, ফারাক্কা বাধ পাদ্মা নদীর কোন ক্ষতি করেনি।

পদ্মা নদী শুকিয়ে যাওয়া তো আসলেই ক্ষতিনা। যে দেশে লঞ্চ ডুবে হাজার হাজার মানুষ মারা যায়, সে দেশে পানি তো অভিশাপ, পানি না থাকাই তো ভাল। এটা বিবেচনা করলে তিনি ঠিকই বলেছেন। তারমানে এই বাধ হলে দেশে লঞ্চ ডুবি হবেনা। পানিই থাকবেনা, ডুববে কোথায়? যখন রানা প্লাজায় ফাটল দেখা গেল, প্রকৌশলী দেখা ওটা খালি করতে বলেছিলেন, তখন মিঃ রানা ( হিরো অফ দিস ট্রাজেডি) বলে ছিলেন, প্রকৌশলী নাকি বলেছেন সেটা শুধু প্লাস্টার খসে পরেছে।

ভবন ঠিক আছে। কি জানি ভাই, হবে হয়তো। ভবন মৌলবাদীরা নাড়িয়ে(!) ভেঙ্গে এখন দায় অন্যদের উপর চাপাতে চাইছে। একটা গল্প শুনেছিলাম, সিংহ নদীতে পানি খাচ্ছে, স্রতের উল্টো দিকে একটি শিশু হরিন ও পানি খাচ্ছে। তো সিংহ বলল হরিন আমি তোকে খাব।

হরিন- আমি কি অন্যায় করেছি হুজুর? সিংহঃ তুই আমার পানি ময়লা করে দিয়েছিস। হরিনঃ এটা কিভাবে সম্ভব? আমি তো স্রোতের পেছনে। আমি পানি নোংরা করলেও তা আপনার কাছে যাবে না। সিংহঃ তাহলে তিন বছর আগে তুই আমারে গালি দিয়েছিলি, তাই আমি তোকে খাব। হরিনঃ হুজুর তিন বছর আগে আমার জন্মই হয়নি গালি দিব কিভাবে? সিংহঃ তাহলে তোর বাপ দিয়েছিল, তাই আমি তোকে খাব।

আমাদের মন্ত্রি এখানে সিংহের অবস্থানে ছিল বলে কেউ মনে করবেন না যেন। এখন আবার সুন্দরবন উজারের প্রক্রিয়া হচ্ছে। বাধা আসলে সাহেবরা যা বলবেন। ১। ঐ বনে বসে ককটেল বানানো হয়।

তাই তা কেটে বিদ্যুৎ কেন্দ্র বানানো হবে। ২। বন দিয়ে করবেনটা কি? মানুষজন বনে হেগে তা নোংরা করে, তার চেয়ে বিদ্যুৎ এলে আলো পাবেন। ৩। মৌল বাদীরা গাছ ধরে নাড়াচাড়া করাতে গাছ ভেঙ্গে পরে, আমরা তো ভাঙ্গা গাছ গুলই কাটছি।

এবার সাহেবদের জন্য কিছু ইউনিভারসেল কথা যা, যে কোন দুর্ঘটনাতে বলতে পারবেন। ১। আল্লাহর মাল আল্লাহ নিয়ে গেছে। আমরা কি করতে পারি। ২।

আল্লাহ যা করেন ভালর জন্যই করেন। টিপস তো দেয়া হল, এবার তাহলে নির্দ্বিধায় বলা শুরু করুন সাহেবরা। তবে যদি সময় পান কখনো, একটু ভাবুন তো। রানা প্লাজার ঘটনায় মৃত কয়েক শত মানুষের জন্য হয়তো বাংলাদেশ থেমে থাকবেনা। কিন্তু থেমে গেছে কয়েক শত পরিবারের আয়।

তারা তিন বেলা খেতে পারবে কিনা সেই নিশ্চয়তা নেই। কত মা হয়েছে সন্তান হারা, ভাই হারিয়েছে বোন। হয়ত কোন বাসায় দুধের শিশু বসে আছে কখন মা আসে। তাঁকে খাওয়াবে। তার মা যে না ফেরার দেশে চলে গেছে তা হয়তো তার বুঝে আসবেনা।

ঘটনার আজ কয়েকদিন পেরিয়ে গেছে, গ্রেফতার করা হয়নি কাউকে। তাহলে এই আর্তনাথের, চোখের জলের কি কোন মূল্য নেই? রানার মত লোকেরা কি অন্যায় করে বার বার পার পেয়ে যাবে? সন্তান হারা মায়ের, ভাই হারা বোনের আহাজারি একটু শুনে দেখুন। জানিনা আপনাদের মত সাহেবদের কোন কিছু হবে কিনা। কিন্তু আমি দেখতে দেখতে বুঝতে পেরেছিলাম আমার চোখের কোনে জল। না, ঐ বিল্ডিং এ আমার কেউ নেই।

কিন্তু আমি মানুষ, মানুষের আর্তনাত, আমার অজান্তেই চোখে জল এনে দিয়েছে। সাহেবদের কাছে আমার এখন আর কোন চাওয়া নেই। শুধু আমি একটি জিনিস চাই, স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি দিন আমাদের। এখনও সময় আছে, রানা টাওয়ারে নাকি ফাটল দেখা গেছে। আরও কয়েক জায়গায় বিল্ডিং এ ফাটল ধরেছে।

সময় থাকতে তাদের বাঁচান, না হলে হয়তো আবারও কেউ বিল্ডিঙয়ের পিলার ধরে নাড়াচাড়া করে সেটা ও ধসে পরতে বাধ্য করবে। প্লীজ, কেউ পিলার নিয়ে নাড়া দেয়ার আগেই আপনার কিছু করুন। এভাবে চলতে থাকলে বছরে ৩৬৫ দিনই শোক পালন করতে করতে যাবে। এবার বিগত ৪ বছরের পরিসংখান ঘটনা মৃত মানুষ পিলখানা ৭৪ নিমতলী ১৫৮ মিরসরাই ৫২ তাজরীন ১২৪ ফ্লাই ওভার ধ্বস ২৬ হরতাল ও অন্যান্য গণহত্যা ৮০ রানা প্লাজা ৩০০+ -শতকোটি টাকার মিগ-২৯ জঙ্গীবিমান কেনার সামর্থ্যআছে -রাশিয়া থেকে ৮০০০ কোটি টাকার অস্ত্র কেনার সামর্থ্য আছে -বাংলাদেশ গেমস এ ১০ কোটি টাকার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান করার সামর্থ্য আছে -হাজার কোটি টাকার টিয়ারশেল, বুলেট, পিপার স্প্রে কেনার সামর্থ্য আছে -ভারতকে ৩০০ কেজি ইলিশ মাছ গিফট দেবার সামর্থ্য আছে -ভারতীয় কোম্পানীকে দয়া দেখিয়ে বিনাশুল্কে বাণিজ্য করতে দেবার সামর্থ্য আছে -শতকোটি টাকা খরচ করে বিমানবন্দরের নাম পরিবর্তনকরার সামর্থ্য আছে অথচ, কয়েকলাখ টাকার কাটিং মেশিন কেনার সামর্থ্য নেই???!!!!! ঘোষণা সাভারে ভবন ধসের ঘটনায় জীবিত উদ্ধার হওয়া রাজবাড়ীর নূরজাহান, দিনাজপুরের শিবলু, গাইবান্ধার মোবারক ও ময়মনসিং এর নিলুফার ঢাকার সিএমএইচ-এ আছেন। তাদের আত্নীয় স্বজনরা (০১৭৬০ ৫২৩ ৪৭১ - ডা. আবির) এই নাম্বারে যোগাযোগ করতে পারেন।

 ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ২৪ বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.