সাবধান দেশবাসী!
বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করার নতুন ষড়যন্ত্র হলো “অ্যানথ্রাক্স”।
অ্যানথ্রাক্স নতুন কোন রোগের নাম নয়। অ্যানথ্রাক্স স্বাভাবিক কিছু।
গত বছর অ্যানথ্রাক্স রোগের নিদর্শন পাওয়া গেলেও উদ্দেশ্যমূলক ও দুরভিসন্ধিমূলক ষড়যন্ত্র হিসেবে গরু কুরবানী বাধাগ্রস্ত করার লক্ষ্যে- এ বছর কুরবানীর ঠিক প্রায় তিন মাস আগে এ রোগের ব্যাপক প্রচারণা চালনা হচ্ছে।
দেশের প্রায় পাঁচ কোটি গরুর মধ্যে মাত্র তিনশ’ গরু মারা যাওয়া নিতান্ত স্বাভাবিক ব্যাপার।
অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত গরুর গোস্ত চেনাও একান্ত সহজ। বার্ড ফ্লু, সোয়াইন ফ্লু’র ষড়যন্ত্রের পর অনুরূপ অ্যানথ্রাক্স প্রচারণাও নতুন ষড়যন্ত্র। সঙ্গতকারণেই এদেশের মুসলমানকে নতুন ষড়যন্ত্র ‘অ্যানথ্রাক্স’ প্রচারণা শক্তভাবে প্রতিরোধ করতে হবে।
অ্যানথ্রাক্স রোগের ভীতিকর ফলাও প্রচারণা মুলত বার্ড ফ্লু, সোয়াইন ফ্লু’র মতই এক নতুন ষড়যন্ত্রমূলক প্রচারণা। আন্তর্জাতিক বেনিয়াগোষ্ঠী এবং বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র করার ষড়ন্ত্রকারীরা সোয়াইন ফ্লু’র প্রচারণা দ্বারা এদেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করতে চেয়েছিলো।
পোল্ট্রি শিল্পে ৫০ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি করতে সক্ষম হয়। পরিণতিতে ভারত থেকে কোটি কোটি ডিম আমদানি করতে হয় এবং যে ফার্মের মুরগি নিম্নবিত্তের নাগলের মধ্যে ছিলো তা এখন মধ্যবিত্তেরও নাগালের বাইরে চলে গেছে। লাখ লাখ যুবক বেকার ও সর্বস্বান্ত হয়ে গেছে। পথে বসেছে হাজার হাজার পরিবার।
‘অ্যানথ্র্যাক্স’ গ্রিক শব্দ থেকে উৎপত্তি।
যার অর্থ কয়লা। কারণ অ্যানথ্রাক্স রোগীর চামড়ায় যে ক্ষত হয় তা কালো ছাইয়ের মতো দেখায়। অ্যানথ্রাক্স বা তড়কা রোগের ইতিহাস অনেক পুরনো। ঈসায়ীপূর্ব ১৪৯১ সালেও মিসরে এ রোগের প্রকোপ ছিল বলে জানা যায়। শুধু মিসর নয়; গ্রিস, রোম এমনকি ভারতবর্ষেও এ রোগের প্রকোপ ছিলো।
অ্যানথ্র্যাক্স জীবাণু আবিষ্কারের পর শুরু হয় একে অস্ত্র হিসেবে যুদ্ধে ব্যবহার করার বিরাট হীনপরিকল্পনা। ১৯৩০ সালে প্রথম জাপানের মানুচরিয়ার জাপানিজ কোয়ান্টাং আর্মি যুদ্ধে বন্দিদের উপর এটি প্রয়োগ করে হাজার হাজার বন্দিকে মেরে ফেলে। এরপর থেকে একে যুদ্ধকালীন জীবাণু অস্ত্র হিসেবে আমেরিকা, ইংল্যান্ড, জার্মানি, রাশিয়া, ফিনল্যান্ড প্রভৃতি জঙ্গি হানাদার দেশ বিভিন্ন নামে (যেমন, এন এজেন্ট, এন বোমড) ব্যবহার করতে থাকে।
জীবাণু অস্ত্র হিসেবে অ্যানথ্রাক্স স্পোরের ব্যবহার ২০০১ সালে আমেরিকায় বেশ আলোড়ন তুলেছিল।
জৈবসন্ত্রাসের এজেন্ট হিসেবে অ্যানথ্রাক্স নিয়ে বেশ আলোচনা হয় ২০০১ সালে আমেরিকায়।
ডাকের মাধ্যমে চিঠিতে অ্যানথ্রাক্স জীবাণু মিশ্রিত পাউডার শ্বাসের সঙ্গে গ্রহণ করে ২২টি অ্যানথ্রাক্স আক্রমণ ঘটেছিল। অর্থ্যাৎ অ্যানথ্রাক্স রোগ অনেক আগ হতেই এবং দীর্ঘদিন যাবৎ দুরভিসন্ধিমূলক ষড়যন্ত্রের একটি বড় বাহন হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
ন, বাংলাদেশে অ্যানথ্রাক্স রোগ নিয়ে ষড়যন্ত্রের পত্তন ঘটানো হয় গত বছর অর্থাৎ ২০০৯ সালে। তখন ৯টি আক্রমণের কথা প্রচার করা হয়। কিন' উদ্দেশ্যমূলকভাবে এই দুরভিসন্ধিমূলক ষড়যন্ত্রের প্রকাশ হয় এ বছর কুরবানীর প্রায় তিন মাস আগে।
, ইতোমধ্যে এদেশের সংবিধান থেকে ‘সর্বশক্তিমান আল্লাহ পাক উনার প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস্থ এ বক্তব্য উঠিয়ে দেয়ার পাঁয়তারা চলছে। (নাউযুবিল্লাহ)
এরই মধ্যে পর্দা পালন তথা বোরকা পরিধানের বিরুদ্ধে আইন করা হয়েছে। শিক্ষানীতিতে ইসলাম বৈরী মনোভাবের প্রতিফলন হয়েছে। ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক নারীনীতি গ্রহণ করা হয়েছে। পোশাকসহ সংস্কৃতির নামে সব কিছুতেই বলিউড নায়ক-নায়িকাদের পুঙ্খানুপুঙ্খ অনুসরণ-অনুকরণ করা হয়েছে।
১৪৩০ হিজরীর রোযার ঈদে মুসলমানদের বাড়িতে হাই ভলিউমে বেজে উঠেছে ‘হরে কৃষ্ণ হরে রাম’ গান। (নাউযুবিল্লাহ)। অর্থাৎ অত্যন্ত দুরভিসন্ধিমূলকভাবে এদেশের মুসলমানদের অন্তর থেকে ইসলামী অনুভূতির বিপরীতে হিন্দুয়ানী বিশ্বাস ও সংস্কৃতিতে পর্যবসিত করার পাঁয়তারা চলছে। এরই অংশ হিসেবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমল থেকেই জোর তৎপরতা চলছে কুরবানীর বিরুদ্ধে। তখন কুরবানী না দিয়ে কুরবানীর টাকা সিডরে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য রবানী না দিয়েলিউমে বেজে উঠেছে,পাঠিয়ে দেয়ার প্রচারণা চলেছে।
কিন্তু ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের তাতেও বিভ্রান্ত করা যায়নি।
এবারে নেয়া হয়েছে অ্যানথ্রাক্স অস্ত্র। আগে অ্যানথ্রাক্স জীবাণু অস্ত্র সামরিক যুদ্ধে ব্যবহার করা হতো। কিন' এবারে অ্যানথ্রাক্স অস্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে মুসলমানদের বিরুদ্ধে সংস্কৃতিক যুদ্ধে। মুসলমানদের ঈমান-আমল নষ্ট করার যুদ্ধে।
সর্বোপরি মুসলমানদের মৌলিক বৈশিষ্ট ‘গরু কুরবানীর’ বিরুদ্ধে। তথা বার্ড ফ্লু’র মত ফার্মের মুরগি শিল্প নষ্ট করার পর এখন এদেশের গরু-ছাগল ব্যবসা ধ্বংস করার গভীর ষড়যন্ত্রমূলক হীন উদ্দেশ্যে।
অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত গরু চেনাও যেমন খুব সহজ তেমনি অ্যানথ্রাক্স রোগাক্রান্ত গরু যবাইয়ের পর তার গোস্ত চেনাও আদৌ কষ্টকর নয়। অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত পশু যবাই করার ঘণ্টাখানেক পরই গোস্তের বর্ণ ফ্যাকাসে হয়ে যায়। উৎকট গন্ধ বের হয়।
আক্রান্ত গোস্তে চাপ দিলে বুদবুদ বের হয় ও দেবে যায়। এছাড়া গোস্তের দোকানে ঝোলানো কলিজা থেকে যদি আলকাতরার মতো কালো রক্ত ঝরে তাহলে বুঝতে হবে যবাই করা পশুটি অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত। সুতরাং অ্যানথ্রাক্স আতঙ্ক বলে কোন কিছু প্রচারণার প্রয়োজন পড়ে না।
বর্তমানে অ্যানথ্রাক্স নিয়ে যে ষড়যন্ত্রমূলক প্রচারণা চলছে তা সরকারের তরফ থেকে শক্ত ও কঠিনভাবে প্রতিহত না করলে আসন্ন কুরবানী ঈদে গরু-ছাগল কুরবানী দিতে দারুন অনীহা তৈরি হতে পারে। তাতে ‘কুরবানীর পরিবর্তে টাকা দুঃস্থদের দান করা উত্তম’ এ গুমরাহী কুফরী প্রচারণাকারীরা সুযোগ নিতে পারে।
আর তারপরেও যারা কুরবানী করবে তারা ভারতীয় গরুকে পছন্দ করবে। কুরবানীর বাজার হয়ে পড়বে ভারতীয় গরুর উপর নির্ভরশীল। দেশীয় চামড়া শিল্পও তাতে মারাত্মক মার খাবে। বাংলাদেশের হাজার হাজার কোটি টাকা চলে যাবে সীমান্তের ওপারে।
অ্যানথ্রাক্স জীবাণু অস্ত্রের ব্যবহার সাময়িকভাবে বন্ধ হলেও তার চেয়েও ভয়ঙ্কর মারাত্মক অস্ত্র নিয়ে আবির্ভূত হয়েছে বর্তমান অ্যানথ্রাক্স ব্যবহারকারীরা, প্রচারকারীরা।
অ্যানথ্রাক্স জীবাণু অস্ত্র ব্যবহারকারীরা ইতঃপূর্বে কিছু সংখ্যক লোককে ক্ষতিগ্রস্ত করেছিলো। কিন' এদেশে এবার অ্যানথ্রাক্স ব্যবহারকারীরা- এদেশের শতকরা ৯৫ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমানদের ইসলামী অনুভূতি নষ্ট করার তথা কুরবানীর মত মৌলিক আমল বাধাগ্রস্ত করার পাশাপাশি এদেশের গরু-ছাগল ভিত্তিক অর্থনীতি এদেশের চামড়া শিল্প নষ্ট করাসহ গোটা অর্থনীতি তথা বাজারই ভারতনির্ভর করে দিতে চাইছে।
কাজেই এদেশের শতকরা ৯৫ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমানদের এ হীন ও কূট ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সম্যক অবগত হতে হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।