এর মধ্য দিয়ে ৯১ হাজার ২৪ জন শিক্ষকের চাকরিও সরকারি হবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী আফছারুল আমীন মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ৩৯টি জেলার এমপিওভুক্ত বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তথ্য-উপাত্ত মন্ত্রণালয়ে এসেছে। সব জেলার তথ্য আসার পর তা পর্যালোচনা করে বিদ্যালয়গুলো অধিগ্রহণ এবং শিক্ষকদের চাকরি সরকারিকরণ করে আলাদা আলাদা প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
গত ৯ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের ঘোষণা দেন।
এসব বিদ্যালয়ে এক লাখ তিন হাজার ১৯২ জন শিক্ষক কর্মরত আছেন।
প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরপর প্রতিটি জেলার প্রশাসককে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের ‘জেলা যাচাই-বাছাই কমিটি’ গঠন করা হয়, যারা ওই সব বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ থেকে শুরু করে তাদের এমপিও ও সনদ পরীক্ষাসহ বিভিন্ন বিষয় যাচাই করে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠাচ্ছে।
আফছারুল আমীন জানান, আগামী জুনের মধ্যে ২২ হাজার ৯৮১টি বিদ্যালয়কে জাতীয়করণের পর দ্বিতীয় ধাপে স্থায়ী/অস্থায়ী নিবন্ধনপ্রাপ্ত, পাঠদানের অনুমতিপ্রাপ্ত, কমিউনিটি এবং সরকারি অর্থায়নে এনজিও’র নির্মিত/পরিচালিত দুই হাজার ২৫২টি বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করা হবে।
আর তৃতীয় ধাপে পাঠদানের অনুমতির সুপারিশ ও পাঠদানের অনুমতির অপেক্ষায় থাকা ৯৬০টি বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফায় যাদের চাকরি সরকারি হবে তারা যথাক্রমে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি, ১ জুলাই এবং আগামী বছরের ১ জানুয়ারি থেকে সরকারি বেতন-ভাতা পাবেন।
তিন দফায় বেসরকারি শিক্ষকদের জাতীয়করণে সরকারের অতিরিক্ত ৬৫১ কোটি টাকা ব্যয় হবে।
এসব বিদ্যালয় চূড়ান্তভাবে জাতীয়করণের আগে জেলা যাচাই-বাছাই কমিটির সুপারিশ করা বিদ্যালয়ের নথিপত্র ও সংশ্লিষ্ট তথ্য সরেজমিন পরিদর্শন করে যাচাইয়ের জন্য সাতটি পরিদর্শন দল গঠন করার আদেশ জারি করা হয়েছে বলেও জানান আফছারুল।
পরিদর্শন দলকে আগামী ২২ মের মধ্যে জাতীয়করণের জন্য প্রাথমিক তালিকাভুক্ত বিদ্যালয়ের ন্যূনতম এক শতাংশ সরেজমিন পরিদর্শন করতে বলা হয়েছে। প্রত্যেক উপজেলা বা থানায় অন্তত একটি বিদ্যালয় পরিদর্শন করতে হবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম জানান, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এস এম আশরাফুল ইসলামকে ঢাকা বিভাগের, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শ্যামল কান্তি ঘোষকে চট্টগ্রাম বিভাগের, বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ ইউনিটের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল হালিমকে রাজশাহী বিভাগের এবং উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. আলমগীরকে খুলনা বিভাগের পরিদর্শন দলের প্রধান করা হয়েছে।
এছাড়া রিচিং আউট স্কুল চিলড্রেন (রস্ক) প্রকল্পের পরিচালক মো. শওকত আকবরকে বরিশাল বিভাগের, বিদ্যালয়বিহীন গ্রামে ১৫০০ বিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্পের পরিচালক সিরাজুল ইসলামকে সিলেট বিভাগ এবং উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর প্রশাসন বিভাগের পরিচালককে রংপুর বিভাগের পরিদর্শন দলের প্রধান করা হয়েছে।
উপ-সচিব জানান, বিদ্যালয় জাতীয়করণের সার্বিক কাজ সমন্বয়ের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক উপ-সচিবের নেতৃত্বে একটি সেল গঠন করা হয়েছে। এজন্য আরো একটি সেল গঠন করা হবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে ৩৬ হাজার ১৬৫টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করেন। তাতে এক লাখ ৫৫ হাজার ২৩ জন শিক্ষককের চাকরি সরকারি হয়।
পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে আরো এক হাজার ৫০৭টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হলেও চলতি বছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একসঙ্গে ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের ঘোষণা দেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।