ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিচ্ছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মন্ত্রী-এমপিদের পাশাপাশি এবার দলেও বিতর্কিতরা বাদ পড়ছেন। বিশেষ কাউন্সিলের মাধ্যমে দলীয় নেতৃত্বে আসতে পারে আমূল পরিবর্তন। বিগত পাঁচ বছরে ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব খাটিয়ে যারা বিতর্কিত হয়েছেন বিশেষ কাউন্সিলে তাদের ভাগ্য বিপর্যয় ঘটতে পারে। দলীয় সূত্রমতে, আসন্ন উপজেলা নির্বাচনের পর বিশেষ কাউন্সিলের চিন্তাভাবনা চলছে।
আগামী জুনে কাউন্সিলের তারিখ চূড়ান্ত হতে পারে।
সূত্রমতে, আওয়ামী লীগের আগামী দিনের নেতৃত্ব থেকে ঝরে পড়বেন সাংগঠনিকভাবে অদক্ষ ও ব্যর্থরা। দলকে আরও গতিশীল করতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। বিগত পাঁচ বছরে যারা কেন্দ্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকেও কোনো সাংগঠনিক দক্ষতা দেখাতে পারেননি বরং ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছেন এবার তাদের বিদায়ের পালা। সরকারের পাশাপাশি দলেও স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে চান শেখ হাসিনা।
বিগত সরকারের শেষ মুহূর্তে বিরোধী আন্দোলন মোকাবিলায় ব্যর্থ নেতাদের তালিকাও চূড়ান্ত করেছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী। সূত্রমতে, বিগত সরকারের শেষ সময়ে কর্মীবিচ্ছিন্ন যেসব নেতা নিজ এলাকায় পুলিশ ও র্যাব প্রহরায় গণসংযোগ করেছেন নতুন কমিটিতে তাদের ঠাঁই হচ্ছে না। দলের নীতিনির্ধারণী সূত্রে জানা গেছে, সাংগঠনিক কাজে ব্যর্থদের একজনকেও এবার কেন্দ্রীয় কমিটিতে রাখা হচ্ছে না। বিরোধী দলের সম্ভাব্য আন্দোলন-সংগ্রাম ঠেকাতেই এবার পরীক্ষিত নেতাদের নিয়ে দল সাজাবেন শেখ হাসিনা। সুবিধাভোগী, হাইব্রিড ও আদর্শচ্যুত নেতাদের বিদায় দিয়ে তৃণমূল কর্মীদের প্রত্যাশা পূরণে সাংগঠনিকভাবে পরীক্ষিতরাই আসছেন ভাগ্যবানদের তালিকায়।
এমন আভাস দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্র। সূত্রমতে, দলে অভিজ্ঞ ও প্রবীণ নেতাদের অনেককে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে কেন্দ্রীয় কমিটিতে। দলের প্রেসিডিয়াম পদে সিনিয়র নেতা আমির হোসেন আমু ও তোফায়েল আহমেদের অন্তর্ভুক্তির সম্ভাবনা অনেকটাই নিশ্চিত। পাশাপাশি তরুণদের মধ্যেও যারা মেধাবী ও সাংগঠনিকভাবে দক্ষ তাদেরও মূল্যায়ন করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র বলেছে, আওয়ামী লীগের বিশেষ কাউন্সিলে কাজের মূল্যায়নেই হবে নেতৃত্ব নির্বাচন।
একমাত্র কাজ দিয়েই দলীয় নেতাদের মূল্যায়ন করতে চান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী। সেক্ষেত্রে সবচেয়ে বিপদে পড়তে পারেন যারা বিগত সরকারের আমলে মন্ত্রী থেকেও দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় কিংবা ধানমন্ডির কার্যালয়ে আসেননি। দলীয় কর্মীদের উপেক্ষা করে যারা কেবল নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন এবার তারা দলীয় পদ হারাতে পারেন। দলের শীর্ষস্থানীয় একটি সূত্রের আভাস মতে, কর্মীবিচ্ছিন্ন ও সুবিধাবাদী নেতাদের কেউই নতুন কমিটিতে স্থান পাচ্ছেন না। দলের এ অংশটি পরিস্থিতি বুঝতে পেরে সম্ভাব্য কাউন্সিলের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে।
বিগত পাঁচ বছরে দলের যেসব নেতার বিরুদ্ধে তৃণমূল নেতাদের নানামুখী অভিযোগ রয়েছে তা গভীরভাবে পর্যালোচনা করছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী। সাংগঠনিক ব্যর্থতার দায়ে যারা মাঠপর্যায়ের নেতাদের কাছে বিগত পাঁচ বছরে বিতর্কিত হয়েছেন তাদেরও ঠাঁই হচ্ছে না এবারের কমিটিতে। সূত্রমতে, মাঠ ও কর্মীদের কাছে জনপ্রিয় নেতাদের সমন্বয়েই আগামীর নেতৃত্ব সাজাতে চান শেখ হাসিনা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।