বি:দ্র: এই ব্লগারের কোথাও কোন মালটি নিক নেই এবং এই ব্লগার কাহারো মাল্টি নিক নয়।
ইউনুস কাজের আশায় শহরে আসে। ঢাকা শহরে। এই প্রথম এর আগে কখন সে ঢাকায় আসেনাই। এত মানুষ দেখে তার কেমন যেন লাগে।
গ্রামের সহজ সরল মানুষ সে। তাল মিলাতে পারেনা সহজে। তার পরিচিত এক বড়ভায়ের সাথে দেখা করে কাজও পেয়ে যায় একটা অফিসে। তেমন কিছু না। পিয়নের চাকরি।
তার মত কোন রকমে মেট্রিক পাশ দেওয়া এরচাইতে আর কি আশা করতে পারে? খুবি খুশি সে। ফোন ফ্যাক্স এর দোকান থেকে তার পাশের বাড়র সবুর চাচাকে ফোন দেয়। সবুর চাচা আপনাগো দোয়াই একখান কাম পাইয়া গিছি। ভাই সানুর মারে ফোনডা একটু দিবেন কয়ডা কথা কইতাম। সানুর মা অর্থাত তার স্ত্রির সাথে কথা হয়।
সামনে মাসের মধ্যে একটা ব্যাবস্থা করে ঢাকায় নিয়ে আসবে তাকে আর তাদের আদোরের মেয়ে সানু কে। খুজে পেতে একটা বাসাও পেয়ে যায় বেশ কম ভাড়ায়। বাসাটা একটু ছোট জায়গাটা একটু ঘিন্জি তাতে কি? এত কম টাকায় অফিসের কাছে এরচেয়ে ভাল আর হয়না। অফিসটাও ইউনুসের বেশ পছন্দ হয়। সবাই বেশ হাসিখুসি।
তার কাজ ও নেই এমন খুব বেশি। এইডা ওইডা ছোটখাট ফরমায়শ শোনা চা নাস্তা নিয়ে আসা। ফাইল পত্র আাগায় দেওয়া এই।
দেখতে দেখতে কয়েকমাস কেটে যায়। বেতন বেশিনা তবে চলেযায় ইউনুসের সুখের সংসার স্ত্রি আর আদোরের মেয়ে নিয়ে।
মেয়ে একদিন আবদার করে শিশুপার্কে যাইতে মনচায়। ইউনুস ভাবে তাইতো এতদিন হয়ে গেল শুধু কামই করি। ঢাকাত নাকি কত বেড়ানির জাইগা। কিছুই তো দেকলাম না। সামনে ছুটিছাটা পাইলেই সবাইরে নিয়া বাইর হব।
ঠিক করে সে।
রোজকার মত অফিসে যায় ইউনুস। আজকে বড় সাহেব আসার কথা অফিসে। তার যাতে যত্নআত্তি হয় ঠিক মত সেই দায়িত্ব তার উপর। সারাদিন ব্যাস্তায় কাটে তার।
বড়সাহেব যাওয়ার সময় বকসিস হিসাবে একশ টাকা ধরায় দেয় হাতে। ইউনুস কৃতজ্ঞতায় নতহয়ে যায়। এমন বকসিস সে প্রায়ই পায়। এইগুলো সে খরচ করে না। সামনে মেয়ের জন্মদিন ওরে একটা ভাল জামা কিনে দিবে ঠিক করেছে সাথে বৌর জন্য একটা ভাল শাড়ি।
বিয়ের পর তো ভালো একটা শাড়িও দিতেপারেনাই সে। এইভাবেই কাটছিল দিন ইউনুসের। তবে মেয়ের জন্য এখনো একটা দিন বেরকরতে পারেনি শিশুপার্কে যাওয়ার। এরপর হঠাৎ একদিন সে অফসে গিয়ে দেখে অফিস বন্দ। সবাই বলে সরকার নাকি বন্দ করে দিয়েছে অফিস।
প্রথমে সে বিস্বাশই করতে পারে না ভাবে সরকার কেন অফিস বন্দ করবে? তার মথায়ই আসেনা অফিসের সাথে সরকরের কি? কি করবে বুঝে উঠতে পারে না সে। বাসায় চলে আসে। বৌ দেখে বলে কি হয়েছে? সে বলে কিছুনা। চল শিশুপর্ক যাই, সানু কই?
ইউনুস প্রতিদিনই অফিস যাচ্ছে অফিসের সামনে চুপচাপ বসে থাকে। দুই একদিন মিছিল ও করে আর ভাবে সরকার বুঝি মিছিল দেখলেই খুলে দিবে অফিস।
কিন্তু অফিস আর খোলে না। এদিকে জমানো টাকা শেষ হয়ে গেছে। কোথাও যেয়ে যে কাজ চাইবে কে দিবে কাজ? যেই বড়ভায়ের কাছে সে এসেছিল তারই তো চাকরি নেই। আর তো কাউকে চেনেও না সে ঢাকা শহরে। তবে কি গ্রামে ফিরে যাবে আবার? আবার সেই কষ্টের দিন না খেয়ে থাকা।
কিনতু আজ কালকের মধ্য কোন কাজ না পেলে তো না খেয়েই থাকা লাগবে। চিন্তায় চিন্তায় দিশেহারা ইউনুস। উৎভ্রান্তের মত ঘুরে বেড়ায় রাস্তায় রাস্তায়। সমাধান পায়না কোন। শেষমেষ রাত নামে বাড়িফেরে সে।
বৌ বলে কিছু কি হল? নাহ্ দীর্ঘস্বাস ফেলে সে। আমি বাসা বাড়তে কাজ খুজবার পারি কিনতু সানুরে দেখব কে? কথা বলতে ইচ্ছা হয়না তার। মেয়ের মুখের দিকে তাকায়। জড়সড় হয়ে ঘুমাচ্ছে মেয়েটা। সানু খাইছে জিগগেস করে সে।
হ সুধু ভাত পিয়াজ মরিচ মাখাই দিসলাম তাই খাইসে একটু। তুমার মেয়ে তো আবার তরকারি ছাড়া খাইতে পারে না।
গভির রাত হঠাৎ অনেক মানুষের চিৎকারের আওয়াজ। ঘুম ভেঙেয়ায় ইউনুসের। প্রথমে বুঝতে পারেনা একটু পরে বোঝে আগুন।
তারাতারি বৌকে ডেকে তোলে। আগুন লাগছে আগুন। ওঠো বেরহও ঘর থেকে বলে দরজা খোলে সে সাথে সাথে বাইরে চিকন গলি পথ থেকে আগুনের কুন্ডোলি ধেয়ে আসে। ঝলসে যায় কিছু বোঝার আগেই। রক্ষা পায় না কেউ।
পুড়ে যায় ইউনুসের সংসার।
কি হলনা হ্যাপি এন্ডিং? একটু একটু করে মরার চেয়ে এভাবে মরাটাই তো ভালো। সব সমস্যার সমাধান। আরে বললামি তো মিথ্যা কাহীনি হ্যাপি এন্ডিং তো হবেই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।