আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাশিয়ান কবি আনা আখমোতোভা’র দু’টো কবিতা



অনুবাদ: সকাল অনন্ত আনা আখমোতোভা বিংশ শতাব্দীর অন্যতম রাশিয়ান কবি ছিলেন । ১৮৮৯ সালে ওডেসার নিকটে তাঁর জন্ম । বেড়ে ওঠেন পিটার্সবার্গে। এই পির্টাসবার্গেই তিনি পরবর্তী জীবনের বেশীর ভাগ সময় কাটান। অবশ্য মাঝখানে যুদ্ধকালীন তিন বৎসর তিনি তাসখন্দে ছিলেন ।

১৯১০ সালে নিকোলাই গুমিলেভকে বিয়ে করেন এবং এই দম্পতিই তৎকালীন একমিস্ট আন্দোলেনের পুরোধা । যা (আন্দোলনে) কবিতার মূর্ত রূপক বা উপমা এবং প্রতীকীবাদী অধিবিদ্যা হতে মুক্ত হয়ে অর্থের সুস্পষ্টতা নির্দিষ্ট করে । আনা আখমাতোভা’র প্রথম বই ‘সন্ধ্যা (Evening)’ প্রকাশিত হয় ১৯২১ সালে । নিকোলাই গুমিলেভের সাথে বিবাহ বিচ্ছেদের তিন বছর পর সেই ১৯২১ সালেই গুমিলেভ বলশেভিক বিরোধী তৎপরতার কারনে নিহত হন । পরবর্তীতে তাদের পুত্র লেভকে অনেক বছর স্তালিনের বন্দী শিবিরে আটকিয়ে রাখা হয় ।

আনা আখমাতোভা নিজেও অভিযুক্ত হন এবং তাঁকে লেখক সংঘ হতে বিতাড়িত করা হয় । পরেও তিনি নানা রকম রাজনৈতিক হয়রানির শিকার হন । অনেক দিন পর্যন্ত তদানিন্তন সোভিয়েত রাশিয়ায় তাঁর লেখা প্রকাশ নিষিদ্ধ ছিল । ক্রুশ্চেভ ক্ষমতায় আসার পর তিনি সরকারীভাবে অন্যান্য জীবিত এবং মৃত লেখকদের সাথে পুনর্বাসিত হন । ১৯৬৪ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি দিয়ে সম্মানিত করে ।

১৯৬৬ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন । ক. আমি শিখিয়েছিলাম আমাকে বিচক্ষণতায় ও সহজভাবে বেঁচে থাকতে আকাশের দিকে তাকাতে প্রার্থনায় নত হতে ঈশ্বরের কাছে । বাড়তি বিষন্নতা অবসানকল্পে অতিক্রান্ত বিকেলে ঘুরে বেড়াতে । যখন ভাঁটই গাছ মর্মরিত হয় উপত্যকায় হলুদ লাল রাউনবেরির গুচ্ছ হয় আনত, তখনি আমি সুখী পংক্তিমালা রচনা করি জীবনের ক্ষয় এবং সুন্দরের । বাড়ি ফিরে আসি তুলতুলে বেড়ালটি চেটে দ্যায় আমার করতল আদুরে গরগরে কন্ঠে।

হ্রদের পাশে করাত কলের মিনারে আগুন ছড়িয়ে পড়ে নিঃশব্দময় চিলেকোঠায় অবস্হানরত সারস কান্নায় এই নিরবতা ভাঙ্গে। সৌন্দর্যের অসীমে এমনি মগ্ন আমি যদি তুমি কড়া নাড়ো দরজায় হয়তো আমি শুনতেও পাবো না। খ. আমার শালের নীচে ছিল তার দৃঢ় মুষ্ঠিতে ধরা হাত । বললাম, মনে হচ্ছে প্রচন্ড বিবর্ণ আজ তুমি । সে ছিল শোকে মাতাল আমি তাকে ঢেলে দিলাম তিক্ত পানীয়, কষ্ট।

ভুলিনি তার বেদনার্ত নীল মুখায়ব স্খলিত চরণে তার চলে যাওয়া পেছন পেছন দৌঁড়ে গেলাম তাকে ধরার জন্যে পারলাম না। দুঃখে ক্রোধে চিৎকার করে বললাম, তুমি আমায় হত্যা করবে। শান্ত অথচ ভয়ংকর হাসি ঠোঁটে টেনে সে বলেছিল, ‘দাঁড়িয়ে থেকো না এই কনকনে ঠান্ডায়’ ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.