আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একটি বিড়ি, গার্লফ্রেন্ড ও কুসুম কুসুম প্রেমের গল্প

কিচ কিচ কুচ কুচ কাচ কাচ কোচ কোচ!!! (সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণঃ সিগারেটের নিকোটিন পুরুষাঙ্গের রক্ত সরবরাহ ক্ষতিগ্রস্ত করে। সিগারেট খাইলে আপনি ইজাকুলেটরি ফেইলিওর এ ভুগতে পারেন। সত্যি কথা। ) আমার রুমমেট। রুমে সবার মধ্যে প্রেমের দৌড়ে সে তিন মাস আগে এক নাম্বার অবস্থান অর্জন করেছে।

তো বন্ধুরা আজ আমি আপনাদের সাথে এই রুমমেটের একটা মজার ঘটনা শেয়ার করব। আমার রুমমেট "পুরুষত্ব প্রদর্শন" ও তৎসংলগ্ন কারণে মাঝে মাঝে বিড়ি খায়। ব্র্যান্ডের মধ্যে বেনসন বিড়ি তার সবচেয়ে পছন্দের। তো সেদিন আমার রুমমেট প্ল্যান করল, তার জানটুসের সাথে একসাথে রিডিং রুমে পড়ালেখা করবে। পড়াও হবে, করাও হবে।

জানটুসের কাছে যাবার আগে কলেজের নিচে চায়ের দোকানে রুমমেটের দেখা হয়ে গেল আমাদের ব্যাচের সবচেয়ে বিখ্যাত ব্যক্তি মুরগি জাহিদের সাথে। এক সিটিঙ্গে একটা আস্ত মুরগি খাবার বিরল রেকর্ড আছে বলেই সবাই তাকে আদর করে মুরগি জাহিদ ডাকে। এই মুরগি জাহিদ মুরগি খায়, মুরগি না পেলে বিড়ি খায়। তো সেদিন চায়ের দোকানে সে তার সেদিনের সাতাশতম বিড়ি ফুঁকছিল। এমন সময় আমার রুমমেটের সাথে তার দেখা হয়ে গেল।

জাহিদ বলল, "কি রে প্রেমিক পুরুষ, বিড়ি খাবি?" রুমমেট মাথা ঝাঁকিয়ে বলল, "বিড়ি খাইলে তোদের ভাবি টের পেয়ে যাবে। টের পাইলে সর্বনাশ। আমারে থাপ্পড়ও মেরে বসতে পারে, যে চিজ"। জাহিদ আমার রুমমেটের মুখে ধোঁয়া ছেড়ে বলল, "শালা বিলাই। বউয়ের সামনে বিলাই সাজলে বউ সারাজীবন ঘাড়ে চইড়া থাকে, এইটা জানোস না তুই?" রুমমেটের নাক দিয়ে ধোঁয়া প্রবেশ করার ফলে তার হৃদয় বিড়ির জন্য হাহাকার করে ওঠার জন্যই হোক আর বিলাই জনিত উপমা শুনে রুমমেটের চ্যালেঞ্জিত পুরুষত্বানুভূতি চাগিয়ে ওঠার জন্যই হোক, রুমমেট হুঙ্কার দিয়ে বলে উঠল, "দে বিড়ি দে"।

মুরগি জাহিদ তার হাতের বিড়ির শেষ অংশ, যাকে প্রচলিত বাংলায় "পুটকি" বলা হয়, সেটা আমার রুমমেটের দিকে এগিয়ে দিল। রুমমেট পটাপট কয়েকটা টান দিয়ে মুরগি জাহিদের দিকে অন্তর্ভেদী দৃষ্টি হেনে বলল, "দেখলি, আমি বিলাই না"। ঠিক তখনই রুমমেটের ফোনে কল এল। ওপাশ থেকে রুমমেটের স্বপ্নচারিণী বলে উঠল, "জানুউ তুমি কই? এত টাইম লাগতেছে কেন?" এই কথা শুনে রুমমেট তাড়াতাড়ি পুটকিটা মুরগি জাহিদের হাতে ধরিয়ে দিয়ে রিডিং রুমের দিকে দৌড়াতে শুরু করল। রিডিং রুমের বাইরে এসে আমার রুমমেট তার ব্যাগ থেকে একটা চুইংগাম বের করল।

এটা চাবাতে থাকলে মুখের দুর্গন্ধ বোঝা যাবে না। তার ব্যাগের আরেকটা পকেট থেকে বেরুলো একটা First kiss - Women's Choice। এইটা একটা বডি স্প্রে। এইটা আমার রুমমেট তার জানটুসকে গিফট দেবার জন্য আড়াই মাস আগে কিনেছিল, কিন্তু একবার নিজের গায়ে মেরে নিজেরই পছন্দ হয়ে গিয়েছিল বলে আর গিফট দেয়া হয় নি। আমার রুমমেট চুইংগাম খেতে খেতে তার জামায় বডি স্প্রে মারা শুরু করল।

কিন্তু না! ইস! বডি স্প্রে শেষ! ওদিকে আবার ফোন, "জানুউউউ তুমি কইইইইই? আমি তো ওয়েট করতে করতে মরে গেলাম্মম্মম্মম্ম" আমার রুমমেট সাথে সাথে ঐ অবস্থায়ই রিডিং রুমে ঢুকে গেল। যা হবার হবে। ধরা খাইলে খাইলাম। রুমমেট গিয়ে তার জানটুসের পাশে বসল। জানটুসের গভীর ছলোছলো চোখের মধ্যে হারিয়ে যেতে না যেতেই মেয়েটা বলে উঠল, "সিগারেটের গন্ধ আসতেছে কোথা থেকে?" আমার রুমমেটের অবস্থা তখন কেরোসিন।

তার মনে তখন একটাই চিন্তা, এই রে, ধরা খাই গেছি! বিপদে পড়লে মানুষের মস্তিষ্ক সেটা থেকে বাঁচার নানাধরণের উপায় খুঁজে বের করে। আর বিপদটা যখন হয় গার্লফ্রেন্ডের কাছে ধরা খাওয়া তখন উপায় একটাই - মিথ্যা বল। লাই। আমার রুমমেট তার মাথার ভিতর দশ সেকেন্ডের মধ্যে একটা মিথ্যা সিন্থেসাইজ করে ফেলল। সে বলতে গেল - জানটুস দেখ আমার না নিচে বিড়িখোর জাহিদের সাথে দেখা...না জানটুস বিশ্বাস কর বিড়ি আমি খাই নি...বিড়ির গন্ধ তো আমি একদম সহ্য করতে পারি না...ওর সাথে শুধু কিছুক্ষণ কথা বলছি আর ও তখন বিড়ি খাচ্ছিল...ঐ বিড়ির ধোঁয়াটাই ও আমার দিকে ছাড়ছে বলে আমার গায়ে বিড়ির গন্ধ চলে আসছে...বিশ্বাস কর ঐ বাজে গন্ধে আমার বমি চলে আসছে প্রায়...কতবার বললাম বিড়ি খাইস না বিড়ি খাইস না...কে শোনে কার কথা...ইত্যাদি।

কিন্তু এসব কিছু বলার আগেই মেয়েটা তাকে বলে উঠল, "আজকাল না অনেক চুইংগামের মধ্যে নিকোটিন প্যাচ থাকে...যারা চেইন স্মোকার কিন্তু সিগারেট ছাড়তে চায় তারা এটা ইউজ করে...বাজারেও কিছু চুইংগামের মধ্যে এখন নিকোটিন প্যাচ দেয়...তোমার মুখেরটা মনে হয় ঐরকমই একটা...এইগুলা খাবা না...দেখবা Centre Fresh নামে একটা চুইংগাম আছে ঐটা খাবা...ঐটা ভাল..." আমার রুমমেট ততক্ষণে তার উপর গার্লফ্রেন্ডের বিশ্বাস দেখে টাসকিত ও তব্দিত। আর তার মুখে এই কাহিনী শুনে আমি টাসকিত ও তব্দিত তো বটেই, ব্যাপকভাবে ঈর্ষান্বিতও। ক্যান আমি এইরাম একটা গার্লফ্রেন্ড পাইলাম না? ক্যান? ক্যান? ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.