আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার রান্না-বান্না

মানুষ ৩ রকম, ১। আগুনে পুড়ে যায়, ২। আগুনে গলে যায়, ৩। আগুনে ঋদ্ধ হয়

জী না! ইহা কোন recipe দেবার জন্য লেখা না। ইহা হছে জানাবার জন্য আমি কত বড় অঘটন ঘটন পটীয়সী।

বহুবছর আগে আম্মু এইটা confidently Sure করে lock করে দিসে। সব ঘটনা তো আর বলা যা, এমনি আমার বিয়ে হচ্ছে না এরপর সব জানাজানি হয়ে গেলে তো আমার বিয়েই হবে না। আমার আবার Aim in life বিয়ে করা। যাই হোক, আসল কথায় আসি, নয়তো দুষ্টলোক বলবে আমি বেশি কথা বলি। ৫/৬ বছর আগের কথা আম্মু তার মেঝ মেয়েকে সুকন্যা সুলক্ষনা আর সব রকম সু সু বানানোর সংকল্প নিয়ে মাঠে নামলেন।

এই লক্ষে তিনি এক কুরবানির ঈদে রান্না ঘরে আমাকে promotion দিয়ে helper থেকে সোজা Head Cook এর Post দিয়ে দিলেন। আমিও জীবন যৌবন কুরবানি দিয়ে ঝাপিয়ে পরলাম "project custard" এ। Custard? এটা এমন কি শক্ত কাজ? আমি কেক বানাতে পারি পুডিং পারি। পোলাও পারি আর এটা সামান্য custard! শুধু দুধ গরম করা আর তাতে custard powder দাও, একটু চিনি দাও, ঠান্ডা করে তাতে ফল দাও, সব শেষে স্ট্রবেরি আইসক্রীম আর জিলেটিন এর টপিং দাও ব্যাস! উরেএএএ..... আমি তারপর মুক্ত। সাজু-গুজু করে গেলাম রান্নাঘরে ( তখন আবার কাসৌতি, কিউকির যুগ! একটা মেয়ে সাজ ছাড়া রান্নাঘরে যাবে ভাবাই যায় না!) "দিলাম চুলায় দুধ, মন দিয়েছে ছুট পাশের বাসায় নাকি এসেছে একটা উট? উফ! কখন গরম হবে, এই ঘোড়ার মাথার দুধ?" বলক আসেছে উফফ! ইয়াহু এখন চিনি, আর? আর কি কি... জানি? উট? ধুত!!!!!!! Custard powder! কোথায়? কোথায়? Shelf এর ওই মাথায়? Right! এর পরেই আমার flight.... দিলাম custard powder! এবার নাড়াও! মোটি! যদি কিছু হয়! তুই শেষ! no matter! এই জাতীয় হুমকি শুনি always মাগার দুধ তো ঘন হচ্ছে না! রঙ এখনও সাদা! ঘটনা কি? মোটি গাধা! গাধা! গাধা! কানা!(আরও সুপার-ডুপার গালি ছিল! বললাম না, এমনি আমার বিয়ে হয় না!) মূর্খ (মিথ্যা কথা অবশ্যই! আমি তখন কিলাস এইট পাস! এই বিদ্যা নিয়ে এক অতি সুন্দরী মহিলা ২ বার প্রধানমন্ত্রী হইসেন!) এইটা custard powder? ছাগল...... দেখ এইটা baking powder! সেদিন আমার চোখ দেখলে কারো বলার সাহসই হত না বলতে যে আমার চোখ ছোট, উলটা ২/৪ জন আমার চোখ দেখে আমার প্রেমে পরে যেত এতা নিশ্চিত! কারন সেটা আসলেও বেকিং পাউডারই ছিল! এর পরের কাহিনী বড়ই বেদনাবিধুর! ২ লিটার দুধ, আধা সের চিনি, প্রায় আধা কৌটা বেকিং পাউডার! আম্মুর বেদনা জানানোর ভাষা আমার জানা নাই! আম্মুর ছিল! কারো জানার ইচ্ছা থাকলে এখনো আম্মু কে জিগেস করতে পারেন! সে একটুও ভুলে নাই, তার সামনে কেও আমার সুনাম করলেই তার এইসব আবার মনে পড়ে।

এমন কি আপুর আকত এর দিন যখন আমার মুরগির রেজালা চারিদিকে, আহা! উহু! সেকি! অসাধারন! আরে মেয়ে তো অনেক কাজের! যে ঘরে যাবে সে বাসায় electricity ছাড়াই ফ্লাড লাইটের মত আলোর বন্যা করে দিবে জাতীয় বাক্য উৎপাদন করছিল তখনো আম্মু ভাষা হারায় নাই! সে সঠিক ভাষায় আমার সেইদিনের অপকর্মের কথা প্রকাশ করে দিয়েছে! আম্মুকে শুধু উছিলা ধরিয়ে দিতে হয়! যাই হোক কোন লাভ নাই! এই যে আমি চামে আমার মুরগির রেজালার গল্প শুনিয়ে নিজের ঢোলে নিজে বাড়ি মারলাম এটা আম্মু এক পল্কায় উড়ায় দিবে! (এটা গত কুরবানির ঈদে নোট আকারে ফেইসবুকে লিখেছিলাম। আমার জীবনের প্রথম লেখা। আমার বন্ধু-বান্ধব্দের মধ্যে এটা বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। এর পরই লিখা লিখিটা পুরোপুরি শুরু করি। এখন লিখতে বেশ ভালই লাগে)


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.