আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একটি কবিতা - ফেলে আসা অতীত, বিস্মৃতির পাতায় স্মৃতির আলোড়ন........

"আমি যে নজরুল, রবীন্দ্র, ফররুখ আমি যে সুকান্ত; নির্ভয়ে হেঁটে চলি নির্জনে অসহায়, আমি এক পান্থ। "

[Don't waste ur valuable time reading this worthless writing if u r busy. Just my mind wished, so i wrote it some days ago] সেই '৯৭ এর কথা । আমি তখন অনেক বড় পা .....চঁ (০০০০৫) বছর বয়স। আমি কি ছোট ছিলাম কোনদিন? মনে তো হয়না । এই আমিতো চিরদিন এমনই ছিলাম।

আর ভাইয়ার বয়স তখন ৯ বছর, আফনান তো তখন ছিলইনা । হয়তো সপ্ত আসমান উপর থেকে দেখতো আমাদের কর্মকাণ্ড। যাই হোক সে সময়টা ঢাকায় আব্বুর মাদ্রাসায় পড়তাম আমি আর ভাইয়া(মারছুছ)। আমি class 1 এ ভাইয়া class 4 এ। বাবা টিচার হেতু একটু সুবিধা বেশিই পেতাম।

আমাদের চির সংগ্রামী মা তখন গোপালগঞ্জ থেকে যতদূর সম্ভব অনার্স পরীক্ষা দিচ্ছিল। ফলে আমরা ২ ভাইবোন নানাবাড়িই কাটিয়েছি শৈশবের সিংহভাগ তখন final exam এর marks দিয়েই রোল নির্ধারিত হতো । বাবার খাতিরে বছর শেষে final exam টা ঢাকায় এসে দিয়ে যেতাম। ওই 1st এই রোল হয়ে যেত ১। মেয়েদের জন্য শ্বশুরবাড়ি মধুর হাঁড়ি না হলেও নানাবাড়ি তো সবার জন্য বরাবরই মধুর হাঁড়ি।

ফলে পড়াশোনার বালাই ছিলনা বললেই চলে । আম্মুই তো সারাদিন পড়ে আমরা আর কি পড়বো ? গ্রামের আনাচে কানাচে সব জায়গাতেই ছিল আমাদের অবাধ বিচরণ । নানার এলাকা বলে কথা যেখানেই যাই সবাই মামা, খালা, নানা, নানু। -(কোন বাড়ি থেকে আসছো) কাগে বাড়ির তে আইছো? -আইয়ুব মিয়ার বাড়ি -ও তুমি আইয়ুব মিয়ার নাতিন? তুমি জেসমিনির মাইয়ে? মেলা ডাঙ্গর (বড়) হয়ে গেইছ দি ! ভিতরে আইসে বসো। ...... এইরূপ সমাদরেই কেটে যেত প্রহর ।

কোরবানীর ঈদে নানা আমাদের জন্য ৩-৪ হাঁট আগেই ২ টা বলদ গরু কিনে নিয়ে আসত আমাদের পালার সুবিধার্থে । প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আমরা নানা নানুর বড় নাতি নাতনি তাই আদরটা তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি পেতাম আমরা আমি আর ভাইয়া । তো ২ রাখাল- রাখালনি গরু নিয়ে চলে যেতাম ঘেরে, কখনো বিলের ধারে, সাথে থাকত আশেপাশের সমবয়সী মামাগুলো । ফিরতে ফিরতে কখনো বেলা গড়িয়েও যেত । বর্ষায় যখন ঘেরগুলো পানিতে একাকার হয়ে যেত, তখন ঐ পাড়াত মামারা নৌকা নিয়ে আসত ।

সবাই মিলে একসাথে নৌকায় উঠতাম । কখনোবা নিজের চেয়ে বড় বৈঠা নিয়ে চালাবার বৃথা প্রয়াস চালাতাম । কি উদ্দাম স্বাধীন ছিল সেই সোনালী দিনগুলো !জীবনের অনেকটা পথ হেঁটে এসেছি । এখনো প্রতি বছরই নাড়ীর টানেই নানাবাড়ি যাই । কিন্তু হারিয়ে গেছে দাড়িঁয়াবাধাঁ, সাতচাড়া খেলার সেই প্রহর ।

ওরাও আজ হয়ে উঠেছে অনেকখানি যান্ত্রিক । পাড়াত সেই মামাগুলো আজ ধরেছে সংসারের হাল । আর পুকুরে একসাথে লাফিয়ে পড়ে সাতাঁর কাটা, দাপাদাপি করার, চাড়াবাটি খেলার, আম কুড়ানোর সেই সমবয়সী পাড়াত খালাগুলো আজ আর সময় দেয়না । ওরা নিজেরাই এখন এক একটি সংসারের গৃহকর্ত্রী । অনেক কাজ ওদের ।

ওদেরকে আজ আর বান্ধবী বলে মনে হয়না । অনেক বড় মনে হয় । ওরা অন্য দলের মানুষ, বিবাহিত । কোথায় হারিয়ে এসেছি সে জীবন ! মনে হয়, সেই মায়াবী ক্ষণগুলো হায় অনেক দূরে....... কি বলছিলাম, কই চলে গেলাম? সেই অনাবিল স্বাধীনতার কোন এক প্রভাতে আমি আর ভাইয়া নানাবাড়ির বারান্দায় বসে খিচুড়ি খাচ্ছিলাম । সেই মুহুর্তে নানা নিয়ে এল একটা বকের ছানা -বয়স দিন পাচেঁক হবে ।

কি একটা কাজে বাশঁ কাটাতে গিয়ে নানা ওকে পেয়ে বলেছিল- 'বকটা আমারে দিয়ে দাও, আমার সাধু (ভাইয়া), তান্নুর (আমি) পেলে খুব খুশি হবে । ' যথারীতি খাচাঁ কেনা হলো । শুরু হলো পাখি অভিযান । নাম রেখেছিলাম টুনি । আমরা ওই নামে ডাকলেই কোলে চলে আসতো ।

ওদের জন্য আমরা প্রতিদিন মাছ মারতে যেতাম । সে অনেক ইতিহাস । অবশেষে কোন এক ভয়ঙ্কর দুপুরে অনেকগুলো মাছ ধরে নিয়ে আসলাম । কিন্তু ততক্ষণে ও আর নেই। ঘাতক বিড়াল খাচাঁর দরজা খুলে নিষ্ঠুর দাঁত দিয়ে ছিঁড়ে খাচ্ছিল ওকে ।

সহ্য করতে পারিনি আমরা সে দৃশ্য । কতযে কেদেঁছি আমি আর ভাইয়া ২-৩ দিন । ভুলিতে পারিনা কোন মতে..... সেই স্মৃতি বিজড়িত পাখিটিকে নিয়েই লিখেছিলাম আমার জীবনের প্রথম কবিতা । অবশ্য কবিতা জিনিসটা কি তাও তেমন বুঝতাম না । ৫ বছরের ওয়ান এ পড়া বাচ্চাটি আর কি বুঝে? মনে চাইল তাই একটা কিছু লিখলাম ।

কিন্তু সবাই এত আনন্দিত হয়েছিল যে আমিই অবাক হয়ে গিয়েছিলাম । আব্বুকে ফোন করে sorry, চিঠি লিখে জানানো হলো সে ইতিহাস । ফোনতো তখন আকাশের চাঁদ । চিঠিই ছিল একমাত্র বার্তাবাহন । আজকের দিনে চিঠির কথাতো কল্পনা করতেও অবাক লাগে ।

সময়ের কি অদ্ভূত পরিবর্তন! সেই সময়ের যান্ত্রিক হাত ধরে হেঁটে চলেছি আমরা, যুগ থেকে যুগান্তরে, চলে এসেছি বহুদূর । তবুও পেছন ফিরে তাকালে কিছু স্মৃতি, কিছু কথা, কিছু অজানা মুহুর্ত আজও নাড়া দেয় বারে বারে, ক্ষণে ক্ষণে - হয়তো শুধু আমাকেই নয়, অতীতকে পেছনে ফেলে আসা প্রতিটি মানুষকেই........... এই সে ঐতিহাসিক কবিতা- 'একটি পাখি' আমার কাছে একটি পাখি আসে, তাকে সবাই অনেক ভালবাসে। পুটি মাছ আর চিংড়ি খায়, পেট ভরে সে আবার চায় । ...........(ভুলে গেছি)........ ................................... আসলে সে বক, সে সবাইকে দেয় ঠোঁক । তার নামটা হল টুনি, তাকে সবাই বলে খুনি ।

-তানজিমা জাহিদ (তখন আমার নাম এইটা ছিল, যা পরে change হয়) -রচনাকাল - ১৯৯৭ সেই থেকে ছুটে চলেছি এ পথে । যানিনা আর কতদিন পথিক বেশে ছুটে যেতে পারবো এ পথেই । পথিকের তো কোন গন্তব্য নেই, পথ চলতে চলতেই জীবন সূর্যের ঊদয় -পথ চলতেই চলতেই অস্ত । হয়তো এরই মাঝে কিছু পথিকের দেখা পাওয়া, কিছু মানুষকে কাছে টেনে নেওয়া, ভুলে যাওয়া, আবারো ছুটে চলা চিরচেনা গন্তব্যের পানে ......... - অচিন পথিক ০৪.০৪.১০

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.