মুভি ক্রিটিক ব্লগ (প্রথম বাংলা মুভি ব্লগ) ★★★★★ © ২০০৭ - ২০১৩ ওয়েবসাইট: www.saifsamir.com
আমার একটি জবের অফার এসেছে। বিষয়টা ফ্যামিলিতে জানে। আমার ছোট বোনটিও জানে। কোন প্রতিষ্ঠানের জন্য এটাই আমার প্রথম কাজ নয়। এর আগে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের জন্য ফ্রিল্যান্স কাজ করেছি।
কিন্তু এটাতে নিয়মিত অফিস করতে হবে। তাই ফ্যামিলির আগ্রহটা বেশি। অবশ্য বেতনের অংকটা নিয়ে তারা একটু অসন্তুষ্ট! হাঃ হাঃ হাঃ আমি অবশ্য এই সব বেতন-টেতন নিয়ে এখনই ভাবছি না। ভাবলে চাকরিটা হয়তো করতে রাজিই হতাম না। কাজটা আমার প্রিয় ক্ষেত্র মুভি সম্পর্কিত দেখেই করছি।
কাজ করতে গিয়ে যদি দেখি পোষাচ্ছে না তখন কর্তাদেরকে জানাব। আপাতত করেই দেখি। অবশ্য ঢাকাই থাকলে হয়তো এখানে যে সম্মানীর কথা বলা হচ্ছে তার চেয়ে অধিকগুণ সম্মানী নিয়ে এতো দিনে কোন একটি পত্রিকার সিনিয়র সাব-এডিটর হয়ে বসতাম! কতো রহিম-মধুকে দেখলাম মিডিয়াতে গুরুত্বপূর্ণ পদে বসে আছে! আমি একজন যোগ হলে মন্দ কি! এই যা, একজন সাব-এডিটরের কথা মনে পড়ে গেল! যায়যায়দিনে রেজাউর রহমান রিজভী নামের এক বিভাগীয় সম্পাদক (বিনোদন) ছিল, যে আমার এক মাসের (এপ্রিল, ২০০৭) সাড়ে চার হাজার টাকার মতো লেখক বিল মেরে দিয়েছিল! আমার নামে বিলটা করাই হয়নি - যেহেতু আমি ফিচার এডিটর মোহাম্মদ মাহমুদুজ্জামান ও সম্পাদক শফিক রেহমানের সমর্থক ছিলাম। ঘটনাটা মাহমুদ ভাইকে টার্মিনেট ও শফিক ভাইয়ের যাযাদি থেকে প্রস্থান সময়কার। শুনেছি বিল নাকি রিজভী তার এক বন্ধু কন্ট্রিবিউটারের নামে করে দিয়েছিল!!
তো, যা বলছিলাম।
চাকরিতে এখনও জয়েনই করিনি কিন্তু এরিমধ্যে ফ্যামিলিতে প্রত্যাশার হাওয়া আমাকে ঘিরে ফেলেছে! আমি ঘরের বড় সন্তান। এই প্রথম মাসিক বেতনের চাকরিতে ঢুকছি। তাই বাবা-মার ধারণা সংসারের চাহিদা পূরণ করতে যাচ্ছি! হাঃ হাঃ হাঃ বুঝতে পারছি হতচ্ছাড়া চাকরি আমার বয়স বাড়িয়ে দিবে। মধ্যবিত্তের এই মনোভাব আমার খুব মজা লাগে! কিভাবে কঠিন বাস্তবতা স্বপ্নগুলোকে পায়ে দলিয়ে এগিয়ে যেতে শেখায় কিংবা বাধ্য করে। সেই ছোটবেলা থেকে আমাদের স্বপ্ন আর বাস্তবতার মধ্যে নিরন্তর যুদ্ধ।
নিম্নবিত্তের চাইতে মধ্যবিত্তের পরিস্থিতি জটিল। মধ্যবিত্ত হওয়া মানে মাইনকার চিপায় পড়ার মতো। নিম্নবিত্তের যে স্বাধীনতা সেটা মধ্যবিত্তের নেই। উচ্চবিত্তের সঙ্গে সদ্ভাব বজায় রাখার খাতিরে এখানে স্বাধীনতা মার খায়। এই অদ্ভূত মধ্যবিত্তের সুখ-দুঃখগুলোও অদ্ভূত।
যাযাদির সেই টাকাগুলো পাওয়ার জন্য আমি কখনও রিজভী ম্যাডামের (!) সঙ্গে খাতির জমাতে চাইনি। তার সঙ্গে এই বিষয়ে কথাই বলিনি, যা সে চেয়েছিল। ভেবেছিল তার কাছে অনুরোধ করবো, কিন্তু তা হয়নি। যদিও আমি টাকাটা না পাওয়াতে ফ্যামিলি দুঃখ করেছিল। কিন্তু আমার এই আপোষহীনতাই মধ্যবিত্তের অহমিকা, এটাই আমার সুখ।
আবার যখন আমার ক্লাস সিক্স পড়ুয়া ছোট বোন মীম আজ সকালে আমাকে ছোট্ট এক চিরকূট দিল, যেখানে লেখা ছিল:
"একটা চশমা কিনে দিবা। MFC তে খাওয়াবা। [তুমি যখন প্রথম টাকা পাবে তখন] হাঃ হাঃ হাঃ"
...যা পড়ে আমার মধ্যবিত্ত দুঃখগুলোকে কেন যেন তুচ্ছ মনে হলো! জীবনের ছোট ছোট সুখগুলো কিভাবে যেন বড় দুঃখগুলোকে পরাভূত করে! ছোট বোনের ছোট এই প্রত্যাশা অদ্ভূত সুখী করলো আমাকে। যা আমার উচ্চবিত্তের বন্ধুরা কখনই অনুভব করতে পারবে না! অদ্ভূত মধ্যবিত্তের সুখগুলো মধ্যবিত্তের মতোই অদ্ভূত মধ্যমানের!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।