আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্কুলের গল্প- ২

এখন যেখানে লিখি : http://shorob.com/author/yaad/

আমার ২য় স্কুলের নাম ডনভিউ গ্রামার স্কুল। গ্রামের বন্ধুদের এই নামেও আপত্তি ছিল! কি আর করা! আজকের পর্বে এই স্কুলের যা যা মনে পড়বে সে গুলো লিখবো। .............. স্কুলে একটা বিষয় ছিল সাধারণজ্ঞান। আমি অসাধারণ ভাবে সে বিষয়টা পারতাম। প্রতিবার মৌখিক পরীক্ষায় ১০০ করে পেতাম।

একবার আমি কিছু স্টিকার পাই আলাদীনের। পুরাই এক্সক্লুসিভ! ক্লাসের এক বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী আমার কাছে একটা স্টিকার চেয়ে বসে! না! না! মাগনা না! বিনিময়ে সে সাইনপেন দিয়ে ছবি এঁকে দিবে। আমি তো আবার বিশিষ্ট শিল্প অনুরাগী! আমি রাজী হয়ে গেলাম। সে ছবি এঁকে দিল। আমি স্টিকার দিলাম।

বাসায় আসার পর ভাইয়া-আপু দিলো বকা! (সবার কি আর শিল্পজ্ঞান থাকে নাকি!) বলে, এমন ছবি তো আমরাও আঁকতে পারি! আমার মনটাই খারাপ হয়ে গেল! ক্লাস ৩ এ থাকতে এক স্যার এসে বললেন, কে কে কিন্ডারগার্টেন বৃত্তি পরীক্ষা দিতে চাও? আমি কিছু না বুঝেই হাত তুললাম। বাসায় এসে বললাম। পরের দিন বৃত্তি পরীক্ষার জন্য স্কুলের বিশেষ কোচিং এ ভর্তি হলাম। সুখে থাকতে ভুতে কিলায় কথার মর্মার্থ কিছুটা বুঝতে পারলাম তখন! ইয়া বিশাল বিশাল গুন ভাগ করতে হতো! আরো কতো বাড়তি পড়া! তার উপর বার্ষিক পরীক্ষার পরেও পড়তে হচ্ছে! কষ্ট আর কষ্ট! তারপর বৃত্তি পরীক্ষার দিন আসলো। আমার জীবনের একটি স্মরনীয় দিনও বটে! আমার পাশে সিটে বসলো এক অপরূপ সুন্দরী! আমার তখনকার ৯ বছরের জীবনে এত সুন্দর কোন মানুষ দেখিনি! এত দিনের কষ্টের কোচিং হাওয়ায় ভাসিয়ে দিলাম।

আমার মনে তখন আকুপাকু অবস্থা! বৃত্তি পরীক্ষা ছিল দুইদিন। ঐ দুইদিন শুধু দেখি তাকে। আমার তখন ঘুমের মধ্যে কথা বলার অভ্যাস ছিল। এটা নিয়ে ভাইয়া-আপু বেশ হাসাহাসি করতো। আমি যেন ভুল করেও ঘুমের মধ্যে ঐ মেয়ের নাম না বলি, সে জন্য ঘুমানোর আগে আমার জানা সব দোয়া-দুরুদ পড়ে ঘুমাতে যেতাম।

.............................. এই স্কুলে ছিলাম চার বছর। কেজি, ১, ২, ৩। .................. কচু স্যার ছাড়া বাকি সব স্যার-ম্যাম অনেক ভালো ছিলেন। স্কুলের সামনে ছোটখাট একটা মাঠ ছিল। সে মাঠে আমাদের সে কি দৌড়াদৌড়ি! (এখন মাঠ ছাড়া প্রচুর স্কুল দেখি।

মাঠ ছাড়া স্কুল নিষিদ্ধ করা উচিত)। টিফিনের সময় পুরো স্কুলের অবস্থা পাল্টে যেত! রকমারি খাবারের ঘ্রাণে স্কুল মৌ-মৌ করতো। পিয়াল নামে একটা ছেলে ছিল যার মা ছিলো না। সে কখনো টিফিন আনতো না। আমরা সবাই আমাদের টিফিন ওর সাথে টিফিন ভাগাভাগি করতাম।

এখনও মাঝে মাঝে স্কুলের সামনে দিয়ে গেলে অনেক কথা মনে পড়ে। কখনো মন খারাপ হয়ে যায়, আবার কখনো ভালো লাগে পুরনো কথাগুলো মনে পড়লে। ................ ক্লাস ফোরে অন্য স্কুলে ভর্তি হই। সে গল্প আরেকদিন। চলবে............


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.