ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ তহবিলের অর্থ শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনভাতা আর অন্যান্য কল্যাণে ব্যয় করা হচ্ছে। সীমিত পরিমাণ অর্থ বৃত্তি হিসেবে প্রদান করায় বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। গত ১৫ বছরে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা এবং ছাত্রকল্যাণ বাবদ ভর্তির সময় নেওয়া টাকার পরিমাণ দ্বিগুণ হলেও বৃত্তির সংখ্যা এবং টাকার পরিমাণ বাড়ানো হয়নি। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ৩১ বছর হলেও কর্তৃপক্ষ এখনও গড়ে তোলেনি কোনো বৃত্তি প্রদান ফাউন্ডেশন। ছাত্রকল্যাণ তহবিলের পৃথক কোনো ব্যাংক সঞ্চয়ী হিসাব নম্বর না থাকায় এমনটি হচ্ছে বলে জানা গেছে।
একাডেমিক দফতর সূত্রে জানা যায়, ছাত্রকল্যাণ তহবিলের জন্য ১৯৮৫-৮৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে
প্রতিটি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে টাকা নেওয়া হলেও ছাত্রছাত্রীদের ছাত্রকল্যাণ তহবিল থেকে আর্থিক সাহায্য প্রদানের নীতিমালা প্রণয়ন করা হয় ১৯৯৫-৯৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে। সে সময় নীতিমালা প্রণয়ন কমিটি ছাত্রকল্যাণ তহবিলের জন্য অগ্রণী ব্যাংক ইবি শাখায় একটি পৃথক সঞ্চয়ী হিসাব খোলা ও প্রতি বছর ৬০ ছাত্রছাত্রীকে বার্ষিক ৬শ' টাকা প্রদানের
সুপারিশ করে। যার ধারাবাহিকতায় প্রত্যেক শিক্ষাবর্ষের ছাত্রছাত্রীরা প্রতি বছর ৫০ টাকা করে ভর্তির সময় ছাত্রকল্যাণ তহবিলে জমা দিয়ে আসছে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১১ হাজার। শিক্ষার্থীদের দেওয়া টাকার পরিমাণ প্রতি বছর প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টাকা।
এছাড়াও ইউজিসি থেকে প্রতি বছর ছাত্রকল্যাণ বাবদ দেওয়া হয় ৫০ হাজার টাকা। অথচ ৬০ শিক্ষার্থীকে ৬শ' টাকা করে দেওয়া হচ্ছে মাত্র ৩৬ হাজার টাকা। ছাত্রকল্যাণ তহবিলের নিজস্ব কোনো সঞ্চয়ী হিসাব নম্বর না থাকায় বাকি টাকা ব্যয় করা হয় শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন দেওয়ার পেছনে।
হিসাব শাখা জানায়, ছাত্রকল্যাণের অবশিষ্ট টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অভ্যন্তরীণ আয় দেখিয়ে অন্যান্য খাতে ব্যয় করা হয়। ১৯৯৫-৯৬ শিক্ষাবর্ষে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ছিল সাড়ে চার হাজার।
বর্তমানে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ১১ হাজার হলেও ছাত্রকল্যাণ তহবিল থেকে আর্থিক সাহায্য প্রাপ্তির সংখ্যা বাড়েনি। ফলিত পদার্থ, ইলেকট্রনিক্স বিভাগের ছাত্র শরিফুল ইসলাম সমকালকে জানান, ছাত্রকল্যাণের ৬শ' টাকা উত্তোলন করতে ৬ জনের স্বাক্ষর নিয়ে কয়েকশ' টাকা খরচ করে ৬ মাস ঘুরতে হয়। নামমাত্র এ কয়টা টাকা উত্তোলন করতে শিক্ষকদের দ্বারে দ্বারে ঘোরার চেয়ে অন্য কাজ করা অনেক ভালো। '
আবার ছাত্রকল্যাণের বৃত্তির দরখাস্ত আহ্বান সংক্রান্ত কোনো বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয় না। এতে কিছু সংখ্যক সচ্ছল ছাত্রছাত্রী দরখাস্তের মাধ্যমে বার বার বৃত্তির টাকা পেয়ে থাকে।
ফলে প্রকৃত অভাবী শিক্ষার্থী বঞ্চিত হচ্ছে। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধাবী ও গরিব ছাত্রছাত্রীদের বৃত্তি প্রদানের জন্য কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় বিভিন্ন ফাউন্ডেশন গড়ে উঠলেও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আগ্রহ ও উদ্যোগের অভাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ৩১ বছরেও তেমন কোনো সুযোগ সৃষ্টি হয়নি। এ ব্যাপারে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আলাউদ্দিন সমকালকে জানান, ছাত্রকল্যাণ বাবদ টাকা কীভাবে, কখন, কতজনকে দেওয়া হয় তা আমার এ মুহূর্তে সঠিক জানা নেই। তবে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করব যাতে দরিদ্র ও মেধাবী ছাত্ররা ছাত্রকল্যাণ বাবদ ঠিকমতো টাকা পায়। আর আগামীতে ছাত্রপ্রতি ৬শ' থেকে ২ হাজার টাকা প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।