এসো, গল্প শোনাই।
অন্তরে মোর কর্মচেতনা,
কন্ঠে আছে শুভাষীশ,
৮ নং ওয়ার্ডের জাগ্রত জগদীশ।
এই রকম লেখা বা চিকা আমরা দেখতাম ক্যাম্পাসে ঢোকার আগে দেয়ালে দেয়ালে। এই জগদীশ ওরফে জগো ছিলেন অত্র এলাকার ওয়ার্ড কমিশনার। সিনিয়রদের কাছে শুনেছি, বিশাল কাব্য প্রতিভার অধিকারী এই জগো একবার আমাদের ডিপার্টমেন্টের ল্যাব ভাংচুর করে বলেছিল "এই স্কুল(!!!!শাবিপ্রবি) কবে হইলো? এইডার প্রিন্সিপাল(!!!ভিসি) কে? ডাকো তারে।
"
যাই হোক জগোর কর্মচেতনা ছিল কতটুকু সেটা না হয় বাদই দিলাম। কিন্তু করিম ভাইয়ের ইন্জিনিয়ার ডিগ্রীর সাধ ছিলো এবং বিপ্লবী সব কর্মচেতনার উদহারণ ছিলো অগনিত। একাধারে উনি ক্যাডার, থুক্কু; ছাত্রনেতা এবং পরীক্ষা পাশের ব্যাপারে আন-কম্প্রোমাইজিং। অংশগ্রহনই মূলকথা এই অমূল্য বানী উনি গোড়া থেকেই মান্য করেন।
করিম ভাই কে নিয়া এইটা আমার ৩য় লেখা।
মহৎ এই ছাত্রকে আরও ভালো ভাবে জানতে আপনারা আগের লেখা গুলো পড়তে পারেন।
ছাত্র নেতার ছাত্রজীবন-২
ছাত্র নেতার ছাত্রজীবন-১
যাই হোক মূল গল্পে ফিরে যাই। করিম ভাইয়ের সার্কিট এনালাইসিস ল্যাব ড্রপ ছিলো। গত দুইবার পরীক্ষা দিন কইরা ল্যাবে আসছেন এবং স্যার উনাকে আনন্দ সহকারে ফেল করাইছেন।
উনি স্রস্টার কাছে বারবার প্রার্থনা করেছেন যেন কোর্স টিচার মন নরম হয়।
২য় অপশনও দিয়েছেন স্রস্টাকে । অন্তত যেন স্যার উচ্চ শিক্ষার্থে বৈদেশ যাত্রা করেন। কোনোটাই গ্রান্টেড হয় নাই।
যাই হোক এইবার উনি স্যারের কাছে গিয়া তুমুল মূলামুলি করা শুরু করলেন।
করিম ভাই: স্যার, একটা ভাইভা নিয়া ছাইড়া দেন স্যার।
কোর্স টিচার: তোমার কী ভাইবা নিব আমি? তুমি তো কিছুই জানো না।
করিম ভাই: স্যার, যা মনে চায় জিগান। আমিও মনে যা আসে কইয়া দিমু।
কোর্স টিচার: হুমম। বুঝলাম।
আচ্ছা তুমি তো হুন্ডা চালাও, তাইনা? তইলে কও দেখি হুন্ডার সামনের চাকায় কয়ডা স্পোক থাকে।
করিম ভাই: এইডা ক্যামনে কমু স্যার? আমি কি আর গুনছি।
কোর্স টিচার: আইচ্ছা। বাদ দাও। শোনো।
পোলাপানরে একটা এসাইনমেন্ট দিছি। ঐটা জমা দিও। দেখা যাউক কি করা যায়।
করিম ভাই: স্যার, আমারে বাচাইলেন স্যার।
কোর্স টিচার: দাড়াও!দাড়াও! তুমি তো এসাইনমেন্ট করার লোক না।
এক কাম করো। পোলাপান এসাইনমেন্ট কইরা আমার বক্সে জমা দিছে। ঐখান থাইকা একটা লইয়া কপি কইরা জমা দিও। ঠিক আছে?
করিম ভাই: জ্বী, স্যার।
কোর্স টিচার: শুনো।
আবার ফটোকপি কইরা দিওনা কিন্তু।
করিম ভাই: না স্যার। কি যে কন? লিখ্যাই জমা দিমু স্যার।
করিম ভাই হাসি মুখে স্যারের রুম থাইকা বাইর হইলেন। সোজা অফিস রুমে চইলা গেলেন।
স্যারে বক্স থাইকা কাগজ বেশী এমন একটা এসাইনমেন্ট বাইছা নিলেন।
একটান দিয়া কভার(কভারে নামধাম রেজিস্ট্রেশন নাম্বার লেখা থাকে) পেজ ছিড়া ফেইলা কলম দিয়া নিজের নাম, রেজিস্ট্রেশন নাম্বার লিখা জমা দিলেন।
বিদ্র: এরপর থাইকা আমরা প্রতিটা এসাইনমেন্টের প্রতিটা পাতার নিচে রেজিস্ট্রেশন নাম্বার লিখা জমা দিতাম।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।