আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাইকো ফিকশন: দি স্ট্রেঞ্জ প্রবলেম অ্যান্ড দি আলটিমেট স্ট্রেঞ্জেস্ট সলিউশন (মডিফায়েড এডিশন)

কিচ কিচ কুচ কুচ কাচ কাচ কোচ কোচ!!! ডাঃ রাশেদ হায়দার, এমবিবিএস (ঢাকা ইউনিভার্সিটি), এমফিল (সাইকিয়াট্রি) তার চেম্বারে বসে বসে মাছি মারছেন। দুর্জনে অকর্মা লোকদের ডাকে “মাছি মারা কেরানি”; কিন্তু মাছি মারা যে কতটা কঠিন তা শুধু ভুক্তভোগীই জানেন। মানুষের মত মাছির চোখ শুধু সামনের কিছু অংশ দেখতে পায় না, তার পুঞ্জাক্ষির অসংখ্য অনুচোখ তাকে চারপাশের পুরো পৃথিবীটা সম্বন্ধেই জানান দেয়। এ কারণেই মাছিকে ধরতে গেলেই সে উড়ে চলে যায়। ডাঃ রাশেদ হায়দারও জানেন ব্যাপারটা।

পুঞ্জাক্ষি ব্যাপারটা পড়েছিলেন সেই ইন্টারে একবার, আর তারপর এক বিবাহিতা স্টুডেন্টকে পড়াতে গিয়ে মেডিকেলে একবার। এখনও মনে আছে। এ কারণেই মাছি মারার জন্য তিনি ব্যবহার করেন বিশেষ ভাবে নির্মিত জাল। জালের এক প্রান্তে লম্বা হ্যান্ডেল। যুতসইভাবে মারতে পারলে এক কোপে দুই তিনটাকেও ধরাশায়ী করা যায়।

এক ওষুধ কোম্পানি মাছি মারার প্রতি তার আন্তরিক আসক্তির কথা টের পেয়ে তাকে এটা উপহার দিয়েছে। ডাঃ রাশেদ হায়দারের শরীর টানটান হয়ে আছে। হার্টবিট বেড়ে গেছে। তার সমস্ত মনোযোগ নিবিষ্ট সামনের টেবিলের একটা মাছির উপর। মাছির নীলচে পাখা, রোমশ পা।

যেকোনো বিপদে উড়ে যাবার জন্য প্রস্তুত সে। রাশেদ হায়দার সপাং করে জালটা নামিয়ে আনলেন। দরজাটা খুলে গেল। ভিতরে প্রবেশ করল অচেনা এক আগন্তুক। মাছিটি ভনভন করে উড়ে চলে গেল রাশেদ হায়দারের মাথার উপর দিয়ে।

রাশেদ হায়দার প্রচণ্ড বিরক্ত ভাব নিয়ে আগন্তুকের দিকে তাকালেন। মানুষটা বলল, স্যার, আমি একটা সমস্যা নিয়া আসছি। বসুন। মানুষটা বসল। কেমন ইতস্তত ভাব তার সর্বাঙ্গে।

গ্রামের লোকজন হঠাৎ শহুরে মানুষজনের সামনে এলে যেমন কাঁচুমাচু করে থাকে এর ভাবও তেমনি। রাশেদ হায়দার মনে মনে কাকে যেন দশবার গালি দিলেন। তারপর অনেকটা রুক্ষস্বরেই নামধাম জিজ্ঞেস করে অতঃপর বললেন, আপনাকে কি কেউ পাঠিয়েছে? নাকি আপনি নিজেই এসেছেন? জি স্যার পাঠাইছে। আমার বাড়ি স্যার লক্ষ্মীপাশা গ্রামে। চেয়ারম্যান সাবের আমি খুব কাছের লোক।

রাশেদ হায়দারের চোখমুখ আগের চেয়েও শক্ত হয়ে গেল। এই চেয়ারম্যান ব্যাটা সম্পর্কে তার চাচাতো ভাই হয়। সুযোগ পেলেই মসজিদ উন্নয়ন, জমি ক্রয়, রাস্তা ঠিক ইত্যাদি কথা বলে তাকে ভাঙ্গিয়ে টাকা নিয়ে যাবার জন্য লোক পাঠায় ঐ হারামি চেয়ারম্যান। স্যার, উনি একটা চিঠি লিখে দিয়েছেন। দিব? রাশেদ হায়দার বিরক্ত মুখে চিঠিটা খুললেন।

ওতে লেখা আছে, স্নেহের ছোটভাই রাশেদ হায়দার (বাচ্চু), পত্রপাঠ তোমার এই বড়ভাইয়ের আন্তরিক সালাম গ্রহণ করিও। আশা করি মহান আল্লাহর কৃপায় ভালোই আছ। তোমার ভাবি ও ভাতিজাদ্বয় তারাও ভালো আছে। তুমি আমাদের জন্য একদম চিন্তা করিবে না। এই চিঠি যার হাত দিয়া পাঠাইলাম সে আমার অতি কাছের লোক।

সম্প্রতি সে একটা অদ্ভুত সমস্যায় ভুগিতেছে। তার সমস্যা হইতেছে – তার মাথার মধ্যে মাঝে মাঝেই কিছু দুষ্ট চিন্তা ভর করে। অনেক চেষ্টা করিয়াও সে এইগুলা দূর করিতে পারে না। ইতোমধ্যেই তার এ সমস্যা গ্রামে কিছুটা জানাজানি হইয়াছে এবং গ্রামের অশিক্ষিত মানুষজন ইহাকে জিনের আসর বলিয়া সাব্যস্ত করিয়াছে। আমি জানি তুমি পাগলের ডাক্তার, তোমার পড়াশুনা মানুষের মন নিয়া, তুমি হয়তো ওর সমস্যার সমাধান করিতে পারিবে।

সে অতি গরীব। দয়া করিয়া তার কাছ থেকে টাকা পয়সা নিও না। আর পারলে ওর মারফত পাঁচ হাজার টাকা আমার কাছে পাঠাইয়া দিও। গত বছর তোমার আব্বার নামে তোলা জামে মসজিদের কিনার ভাঙ্গিয়া পড়িয়াছে, ঠিক করিতে বিপুল সংখ্যক টাকা প্রয়োজন। ইতি তোমার রসুল ভাই (চেয়ারম্যান সাহেব) রাশেদ হায়দারের ইচ্ছা করল চিঠিটা প্রথমে কুটিকুটি করে ছিঁড়ে তারপর এই লোককে নিতম্বে লাথি মেরে চেম্বার থেকে বের করে দেন।

যতোসব জোচ্চুরি। রোগী না ছাই, খালি টাকা মারার ফন্দি। কিন্তু এর কোনটাই তিনি করতে পারলেন না। প্রফেশনাল ইথিক্স। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, আপনার সমস্যাটা কি? মানুষটি উত্তর দিল, স্যার, আমার মইধ্যে মাঝে মাঝে কুচিন্তা ভর করে।

কি ভর করে? কুচিন্তা। কুচিন্তা ভর করে। কেমন কুচিন্তা? মানে স্যার, এই ধরেন সেইদিন সাঁকোর উপর দিয়ে খাল পার হচ্ছি, আমার সামনে একটা কমবয়সী মেয়ে। আশেপাশে কেউ নেই। হঠাৎ করেই আমার ইচ্ছা হইল... কি ইচ্ছা হল? মেয়েটারে ধাক্কা মেরে নদীতে ফেলে দিই।

চিন্তাটা আসার পরই আমি আশ্চর্য হয়ে গেলাম, স্যার। এই চিন্তা আমার মধ্যে কেন আসবে? বিশ্বাস করেন স্যার, যতক্ষণ আমি সাঁকো পার হলাম, ততক্ষণই এই চিন্তা আমার মাথার মধ্যে ঘুরপাক খেতে লাগল। বারবার কে যেন আমাকে বলতে লাগল, কাদের, মেয়েটারে ধাক্কা মার, মার ধাক্কা। আমি স্যার তারপর... কি করলেন? মেয়েটারে বাঁচানোর জন্য নিজেই পানিতে লাফ দিলাম স্যার। হোয়াট! তারপর? তারপর আর কি? সাঁতরায়া বাড়িতে আসলাম।

বউ জিজ্ঞেস করল ভিজলাম কিভাবে। বললাম পা পিছলায় কাঁদায় পড়ে গেয়ছিলাম তাই গোসল করে আসছি। রাশেদ হায়দারের কানের উপর আরেকটা মশা ঘুরঘুর করছে। রাশেদ হায়দারের খুব রাগ হচ্ছে। সামনে বসা লোকটাকে এক লাথিতে আমেরিকা পাঠিয়ে দিতে ইচ্ছা করছে তার।

তার আসল মেজাজ প্রকৃতপক্ষে এতটা খারাপ নয়। সপ্তাহের প্রতি বুধবার রাতে তার অত্যাধুনিকা বউ একটা সোশ্যাল ওয়ার্কার্স পার্টিতে যায়। ওখানে নাকি সবই চলে। তার বউয়ের জন্য আরও বেশি চলে, কারণ রাশেদের বউ রাশেদের এক নাম্বার হলেও রাশেদ তার বউয়ের পাঁচ নাম্বার। আজ সেই বুধবার রাত।

রাশেদের মাছি মারা দিবস। আজকে রোগীও বেশি হয় নি, কামাই রোজগার কম। মেজাজ খারাপ হওয়াই স্বাভাবিক। আর তার উপর যদি অর্থনাশের মূর্তিমান সম্ভাবনা চোখের সামনে রোগী সেজে এভাবে বসে থাকে। রাশেদ সমস্ত মনোযোগ মাছির দিকে দিয়ে বললেন, বলতে থাকুন।

তার স্যার দুই সপ্তাহ পরের ঘটনা। আমি স্যার মোটরভ্যানে করে গঞ্জে যাচ্ছি, চাকার কাছে বসেছে এক বোরখা পরা মেয়ে। তার ওড়না ঝুলছে চাকার একদম পাশেই। একবার প্যাঁচ লেগে গেলেই শেষ। হুম।

ভ্যানের মইধ্যে লোক মাত্র চারজন, আমি, ঐ মেয়ে আর আরও দুইজন। তারা যেদিকে বসছে সেদিক থেকে আমাকে দেখতে পাবে না। হুম। তখনই আমার মনে হইল, দেই ওড়নাটাকে চাকার ভিতর ঢুকায়ে। কে যেন কানের কাছে ফিসফিস করতে লাগল, “কাদের, দে, ওড়নাটারে প্যাঁচ লাগাইয়া দে।

মাইয়াটারে শ্যাষ কইরা দে”। স্যার চিন্তা করেন আমার হাত চাকার কাছে, আমি ইচ্ছা করলেই কাজটা করতে পারব, কেউ দেখব না। আমার শরীর কেমন থরথর করে কাঁপতে লাগল। আমি যতই এদিক ওদিক তাকাই কিছুতেই ব্যাপারটারে মাথার ভিতর থেকে সরাইতে পারলাম না স্যার। পুরা পথ এই চিন্তা আমার মাথার মধ্যে গাঁথা থাকল।

তারপর কি করলেন? যখন আর পারলাম না, তখন স্যার আমি ভ্যান থামায়ে মালপত্র নামাইলাম। ভ্যানটারে টাকা দিয়া ছাইড়া দিলাম। ভ্যানটা যখন যাইতেছিল তখনও আমার বারবার মনে হচ্ছিল মেয়েটার ওড়নার কথা। হুম। তারপর? বলুন, বলতে থাকুন।

এর পরের ঘটনা স্যার গত মাসের সাত তারিখ। আমার দোস্ত আসগরের ছেলের আকিকা, আমাকে দাওয়াত দিছে, বউ নিয়ে আমি ওখানে পৌঁছুলাম দুপুর বারোটার দিকে। গিয়ে দেখি স্যার এলাহি কাণ্ড, বিশাল হাড়িতে বিরানি আর আলাদা করে গরুর ভুনা রান্না হচ্ছে। মাটির বড় চুলায় নারিকেল গাছের বড় বড় শুকনা পাতা জ্বালানি হিসেবে দেয়া হচ্ছে। একটু পাশেই অনেকগুলা শুকনা পাতা একসাথে রাখা।

ব্যস, শুরু হয়ে গেল আমার শয়তানি বুদ্ধি। আমার মাথার মধ্যে কে যেন বলতে লাগল, “একটা জ্বলন্ত পাতা বাইরে নিয়ে আয়। আগুন ধরায়া দে শুকনা পাতার স্তূপে”। স্যার বিশ্বাস করবেন না ভয়ে তখন আমার সারা শরীরে কাঁপাকাপি অবস্থা। এই চিন্তা আমার মাথায় কেন আসল? আমি কেন আসগরের ক্ষতি করব? ছি ছি।

কিন্তু মরার কুচিন্তা আমার মাথা থেকে গেল না। বারবার মনে হতে লাগল শুকনা পাতা পুড়াতেই হবে আমাকে। তারপর আপনি কি করলেন? একটা মিথ্যা কথা বললাম। বললাম, আমার এইমাত্র খবর পাইলাম যে আমার মা অসুস্থ। এই কথা বইলা তখনই ফিরতি পথে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম।

রাশেদ হায়দার এর মধ্যে বউকে সাতটা মেসেজ পাঠিয়েছেন। একটারও রিপ্লাই আসে নি। রাশেদ হায়দারের ভীষণ বিরক্তি লাগছে। এই ব্যাটা যত তাড়াতাড়ি বিদায় হয় ততই মঙ্গল। আজকে রাতে একটু ড্রিঙ্ক না করলে হবেই না।

প্রতি বুধবার রাতেই তিনি ড্রিঙ্ক করেন। তিনি বললেন, খাওয়া মিস দিয়ে চলে আসলেন? জি স্যার। আর কি করব? যতক্ষণ ঐ বাড়িতে ছিলাম ততক্ষণ আমার মাথার মইধ্যে শুধুই শুকনা পাতা আর আগুন ঘুরঘুর করতেছিল। যদি সত্যিই আগুন ধরিয়ে দিতাম? তখন কি হত? আচ্ছা আচ্ছা আরও ঘটনা বলেন কি ঘটেছে। আমার বড় ভাইয়ের এক পোলা, মফিজ নাম।

মফিজরা একদিন আমাদের বাসায় বেড়াতে আসছে, রাতে মফিজ আমার সাথে ঘুমাইছে, গভীর রাতে ঘুম ভেঙ্গে দেখি সে আমার মাজার উপর পা তুলে ঘুমাচ্ছে। চেহারাটা ভাইস্তার বড় মায়া, যেই একটু আদর করতে যাব, আর তখনই কে যেন আমার কানে কানে বলে উঠল, "মাইরা ফেলা। মাইরা ফেলা পোলাডারে”। বিশ্বাস করেন স্যার এই কথা শুনে আমি ধড়ফড় করে উঠে বসছি। এই চিন্তা আমার মাথায় কেন এল? আমি যত চিন্তা করি চিন্তা তত বাড়ে।

ডানে তাকালে মনে হয় গলা টিপে মারলে ভালো হবে, বামে তাকালে মনে হয় দা দিয়ে কোপায়ে মারলে ভালো হবে। চিন্তা এমন চিন্তা, চিন্তা আর কমে না। তারপর স্যার আমি... কি করলেন? ভাতিজাকে লাথি মেরে ঘুম থেকে উঠালাম। ভাতিজা ব্যথায় কান্নাকাটি শুরু করে দিল। ভাবী এসে আমাকে কিছু গালিগালাজ দিয়ে ওকে নিয়ে চলে গেল।

আল্লাহ, বাঁচলাম। আপনার তো আসলেই অনেক বড় সমস্যা। জি স্যার। এই সমস্যার কারণে স্যার আমার অনেক অসুবিধা। কাজকর্ম ঠিকমত করতে পারি না।

সবসময়ে ভয়ে ভয়ে থাকি কখন আবার নতুন কোন কুচিন্তা এসে মাথার মধ্যে জেঁকে বসে। লোকজনও এখন আমার সাথে আগের মত কথা বলে না। আমাকে ভয় পায়। জিনভুতের নজর লাগছে মনে করে। আপনি মনে করেন না? আমিও করতাম, তবে চেয়ারম্যান সাহেব বুঝাইছিল যে এইগুলা সাধারণ রোগের মতই রোগ, ডাক্তারিতে এই রোগের চিকিৎসা আছে।

যাক চেয়ারম্যান জীবনে একটা ভালো কাজ করেছে। যাই হোক, আমি শুনলাম আপনার সমস্যা। আমার মনে হল... না স্যার আসলটাই তো শুনেন নাই। দেখুন আমার হাতে আজকে সময় নেই... স্যার ঐটা না শুনলে হবেই না। গরীবের অনুরোধ।

রাশেদ হায়দার মনে মনে চেয়ারম্যানের বাচ্চাকে একশবার আর তার সামনে বসা লোকটাকে একবার হারামজাদা বলে গালি দিলেন। এইমাত্র তার বউয়ের একটা মেসেজ এসেছে, মেসেজের ভাষায় বোঝা যাচ্ছে আজ রাতে বউয়ের বাসায় আসার কোন সম্ভাবনাই আর বিদ্যমান নেই। তারমানে আজকের রাতটা রাশেদ হায়দারকে একা কাটাতে হচ্ছে। হ্যাভিং হিজ ওয়াইফ ইন হু নোজ হুজ বেড। নিঃসন্দেহে খুবই দারুণ একটা খবর।

আচ্ছা বলুন। আমি স্যার এমনিতে নামাজ কালাম তেমন পড়ি না। তবু সেদিন খোদার কাছে দোয়া করলাম, খোদা, তুমি আমাকে এই ভয়াবহ চিন্তাগুলো থেকে মুক্তি দাও। আমার কুচিন্তাগুলো দূর করার সামর্থ্য দিয়ে দাও। খুব ভালো লাগতে শুরু হল, জানেন স্যার? মনে হল এতদিন খোদার কাছে কিছু চাই নাই কেন? সবাই যে বলে, খোদার কাছে খুব মন থেকে কিছু চাইলে তিনি তা দিয়ে দেন, সেটা হঠাৎ করেই সত্যি মনে হতে লাগলো আমার কাছে।

এটা তো ভালো লক্ষণ। স্যার তারপরেই শুরু হইল আমার নষ্ট ব্রেইনের খেলা। আমার হঠাৎ করে মনে হতে লাগল খোদা আমার বউ। আমি খোদার স্বামী। নাউজুবিল্লাহ তওবা তওবা।

ওহ নো! নড়েচড়ে বসলেন রাশেদ হায়দার। আমি কিছুতেই নিজেকে ঠেকাইতে পারলাম না, স্যার। অনেক কিছু করলাম, অনেক কিছু, কিছুতেই চিন্তাটা গেল না মাথা থেকে। নিজের আঙ্গুল কামড়াইলাম, কনকনে ঠাণ্ডা পানিতে গোসল দিলাম, সাঁতার দিলাম, কিছুতেই কিছু হল না। আমার চিন্তাটা রয়েই গেল।

কয়দিন রইল জানেন স্যার? পুরা এক সপ্তাহ। এক সপ্তাহ আমি পাগলের মত ঘুরলাম ফিরলাম। কোন কাম করতে পারলাম না। আত্মহত্যার চেষ্টা নিলাম দুই তিনবার। পারলাম না।

বিছানায় দড়ি দেখে বউ পায়ে পড়ল। আমি দড়ি ফালায়া দিলাম। তারপর? তারপর আর কি? এইভাবেই আমার দিন যাইতেছে স্যার। কাজকর্মে মন বসতেছে না। কারও সাথে কথা বলতে ইচ্ছা করতেছে না।

যদি যার সাথে কথা বলি তারে নিয়েও কোন কুচিন্তা আসে? সারাদিন স্যার আমি একা একা ঘরের মইধ্যে বইসা থাকি। বউ আমার কাছ ঠিকা ধারাল দা বটি ছুরি সব সরাইয়া রাখসে। স্যার আমি স্যার...আমাকে বাঁচান... হঠাৎই আবেগাপ্লুত হয়ে অঝোর ধারায় কেঁদে উঠল কাদের। আকস্মিকভাবেই উঠে গিয়ে সে পা ধরল রাশেদ হায়দারের। আর ঠিক এ মুহূর্তেই আরেকটা মেসেজ এল রাশেদ হায়দারের মোবাইলে, amake ar disturb koro na।

সেন্ডার তার বউ। রাশেদ হায়দার প্রচণ্ড বিরক্ত হলেন। গ্রামের মানুষের আদিখ্যেতা ও গায়ে পড়া ভাব তার কখনই ভালো লাগে না। এই যে লোকটা তাকে জড়িয়ে ধরেছে, তার হাতে নিশ্চয়ই একগাদা ময়লা। একগাদা জীবাণু।

এরা তো পায়খানা করেও হাত ভালমত ধোয় না। আর সারাদিনের জার্নির রাজ্যের ময়লা তো আছেই। রাশেদ হায়দার ঠেলে কাদেরকে একটু দূরে সরিয়ে দিলেন। কাদের আবার তার পা চেপে ধরল। রাশেদ হায়দারের মনে হল, এটা হয়তো শয়তানের বাচ্চা চেয়ারম্যানের দেয়া বুদ্ধি।

তার কাছ থেকে টাকা বের করার ফন্দি। রাশেদ হায়দার বললেন, আপনি চুপ করে ঐখানে বসেন। নাইলে কিন্তু টাকা দিব না। সাবধান। কাদের কেমন যেন মিইয়ে গেল।

সে মিনমিন করে বলল, আমি এখন কি করব স্যার? কেমনে বাঁচব? রাশেদ হায়দার কিছুক্ষণ একমনে চিন্তা করলেন। সমস্যাটা অবসেশন। কিছু দুষ্ট চিন্তা বিভিন্ন সময়ে রোগীর মাথা অধিকার করে নেয়। বেশ কিছুটা সময় তারা রোগীর মনোজগৎ অধিকার করে রাখে। এগুলোর ট্রিটমেন্ট করার বেস্ট উপায় কাউন্সেলিং।

কাউন্সেলিং না করলে একসময় রোগী ডেলিউশনে চলে যাবে। তখন তাকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা কঠিন হয়ে যাবে। কিন্তু কাউন্সেলিং অনেক সময়ের ব্যাপার। বেশ কয়েকবার সিটিং দেয়া লাগবে সেটার জন্য। কিন্তু এই রোগী, যে তাকে কোন টাকা দেবে না, বরং তার কাছ থেকে টাকা নিয়ে যাবে, তার জন্য কি অনর্থক এতগুলো মূল্যবান সময় খরচ করে উচিৎ? কাদেরকে তিনি যতবারই চেম্বারে ঢুকতে দেবেন ঐ হারামি চেয়ারম্যান ততবারই তার কাছে টাকা চাইবে।

হারামির বাচ্চা হারামি। রাশেদ হায়দারের ঠোঁটের কোণে একটা ধূর্ত হাসি খেলা করল। তিনি চাইলেই এখন একটা এক্সপেরিমেন্ট করতে পারেন। এক্সপেরিমেন্টে সফল হলে হয়তো অবসেশন ফাইট করার নতুন কোন কার্যকরী পদ্ধতি আবিষ্কৃত হবে। হয়তো তিনি নতুন পদ্ধতিটার পেটেন্টও নিতে পারবেন।

আর ব্যর্থ হলে সো হোয়াট? একটা ডাক্তারের সব রোগী ভালো হবে এমন কোন কথা নেই। আর চেয়ারম্যান কখনই তার বিরুদ্ধে কিছু বলবে না, কারণ তিনি তাদের বিশ্বস্ত টাকার সোর্স। রাশেদ হায়দার তার রোগীদের উপদেশ দেয়ার আগে ভারিক্কি চালে দুইবার গলা খাকারি দেন। এখনও দিলেন। তারপর বললেন, কাদের মিয়া, আপনার যে সমস্যা, মানে কুচিন্তা, এইটা শুধু আপনার না, এই পৃথিবীতে আরও অনেকের আছে।

আপনার সমস্যা হচ্ছে আপনি একটা কুচিন্তা আসলে সেইটা থেকে নিজেরে সরিয়ে আনেন। পালিয়ে আসেন। আপনি কুচিন্তাটাকে ভয় পান। আপনি নিজেকে বিশ্বাস করেন না, নিজের বিবেক বিচারবুদ্ধিকে বিশ্বাস করেন না তখন। আপনার সবসময় ভয় হয় যদি এই কাজ আপনি আসলেই করে ফেলেন! তখন কি হবে? ঠিক বলেছি না? কাদের মাথা নেড়ে বলল, জি স্যার ঠিক।

একদম ঠিক। কিন্তু সেটা তো আপনার সমস্যার সমাধান নয় কাদের মিয়া। কুচিন্তাকে ভয় পাওয়া যাবে না। কুচিন্তাকে আসতে দিতে হবে। ফেস করতে হবে সকল কুচিন্তাকে।

স্যার, বুঝলাম না। যেমন ধরেন আপনার মধ্যে কুচিন্তা আসল কাউকে পানির মধ্যে ফেলে দিবেন। পালায়েন না। দেন ফেলে। তারপর দেখেন কি হয়।

ফেলে দেবার সাথে সাথেই অথবা ফেলে দেবার আগেই আপনি বুঝতে পারবেন কতটা ভুল কাজ আপনি করছেন। তখনই আপনার মধ্যে অনুতাপ হবে। আপনি ভালো হয়ে যাবেন। এইটা আপনি কি বললেন স্যার? আমি...ওরে পানিতে ফালায়া দিবো? হুম। দিবেন।

দিয়েই দেখেন কি হয়। এইরকম করলে...আমি ভালো হয়ে যাব তো? আগেই তো বললাম তো আপনি ভালো হয়ে যাবেন। কোন দুর্ঘটনা যদি ঘটায়ে বসি? আরে ঘটাবেন না। আপনার তো বিবেক আছে, নাকি? সেটাই ঐ মুহূর্তে আপনাকে রক্ষা করবে। এখন আপনি আসুন।

আর এই এক হাজার টাকা দয়া করে নিয়ে যান। চেয়ারম্যানের হাতে দিবেন। বলবেন বসে বসে খেয়ে আর কতদিন? কি বলব? কিছু না। এখন উঠেন। কাজ আছে।

কাদের বিভ্রান্তভাবে হেঁটে চলে গেল। রাশেদ হায়দার নিজের মধ্যে একটা অন্যরকম উত্তেজনা টের পেলেন। আজ রাতে হবে মাল উৎসব। বিদেশী মাল। *** এক মাস পর।

হঠাৎই মিষ্টি নিয়ে চেম্বারে হন্তদন্ত হয়ে প্রবেশ করল এক লোক। রাশেদ হায়দার প্রথম দেখায় তাকে চিনতে পারলেন না। কে আপনি? স্যার আমাকে চিনলেন না? আমি কাদের। কাদের স্যার। ঐ যে... ও আচ্ছা, চিনেছি।

তা কি খবর? স্যার আমি ভালো হয়ে গেছি! আমার কুচিন্তা একদমই নাই! আমি পুরা ভালো হয়ে গেছি। তাই? রাশেদ হায়দার একটু অবাক হলেন। তার আবছা মনে পড়ছে এই লোকটাকে তিনি একটা এক্সপেরিমেন্টাল সলিউশন দিয়েছিলেন। সেটা কি কাজে লেগে গেছে? তাহলে তো ভালোই। কাদেরকে সামনের চেয়ারে বসালেন তিনি।

বললেন, কিভাবে ভালো হলেন বলেন তো? কাদের উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে বলতে লাগল, স্যার আপনি তো বললেন যে কুচিন্তা মনে আসে সেইটাই করার চেষ্টা করতে। তো আমি বাসায় গিয়া প্রথমেই যে চিন্তার শিকার হইলাম সেইটা হচ্ছে আমার বউরে ঘুমের মইধ্যে খাট থেকে ফেইলা দেয়া। গর্ভবতী বউ। তো আপনি কি করলেন? তো অন্য সময় হইলে আমি তখনই নিজে উইঠা উঠানে গিয়া দাঁড়ায়া থাকতাম। কিন্তু তখন আমার আপনার কথা মনে পড়ল।

আমি বউয়ের পেটে হাত দিলাম। দিলাম একটা ধাক্কা। ডেঞ্জারাস! তারপর? বউ একটা গড়ান দিল। আর এক গড়ান দিলেই উলটায়া পইড়া যাইত। আমি পড়তে দিলাম না।

নিজে টের পাওনের আগেই দেখলাম আমার নিজের হাত বউরে শক্ত কইরা ধইরা ফেলছে। বউ কি টের পেয়েছে কিছু? জি স্যার পাইছে। মেয়েমানুষ মনে করছে আমি তাকে গভীর রাতে ইয়ে...মানে... করার জন্য ধাক্কা দিছি। যাক, বেঁচে গেলেন তাহলে। জি স্যার।

তারপরের ঘটনা শুনেন, পাশের বাড়ির এক পোলা আছে, ওর অনেক খেলনা। এর মধ্যে একটা বড় গাড়ি আছে, সুতা দিয়ে টানতে হয়। ঐ গাড়ি পোলাটার যক্ষের ধন, কেউরে ধরতে দেয় না ঐ গাড়ি। আমার মইধ্যে কুচিন্তা আসল, ঐ গাড়িটা আগুনে পোড়াব। পোড়ালেন? পোড়াতে গেছিলাম।

পোড়াইতে গিয়া নিজের হাত পুইড়া গেল। পোলার বাপে টের পায়া আমারে এক চড় লাগায়ে দিল। আমি নিজের ভুল বুঝলাম। পোলার কাছে ক্ষমা চায়া নিলাম। তারপর? তারপর স্যার আরও দুই তিনবার কুচিন্তা আসছিল, কিন্তু করতে গেলেই কুচিন্তা শেষ।

গত বিশ দিনে আর কোন কুচিন্তা আসে নাই স্যার। স্যার আমি ভালো হইয়া গেছি। গুড, ভেরি গুড। মিষ্টি রেখে কাদের বিদায় নিল। রাশেদ হায়দার মুচকি হেসে কেস ফাইলে ক্লোজড লিখে দিলেন।

আরও লিখলেন, দি বেস্ট ওয়ে টু চেক এ থট ইজ টু ফাইট ইট, নট এসকেপ ইট। অ্যান আনইথিকাল এক্সপেরিমেন্ট বাই ডক্টর রাশেদ হায়দার। কাদের মিয়া ছিল তার এক্সপেরিমেন্টের গিনিপিগ। কিন্তু তার কাছে আসে সব মালদার রোগী। তারা সমাজের নানা উচ্চস্তরে প্রতিষ্ঠিত।

তাদের উপর আর যা-ই হোক, এক্সপেরিমেন্ট করা সম্ভব নয়। ঠিক এ কারণেই, এই ঘটনার মোটামুটি পাঁচ দিনের মাথায় পুরো ব্যাপারটা ভুলে গেলেন তিনি। *** শীতের এক নিস্তব্ধ সন্ধ্যা। ডাঃ রাশেদ হায়দার বউয়ের পাশে শুয়ে আছেন। তার বউ বেঘোরে ঘুমাচ্ছে।

মেয়েটা নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে। কদিন আগেই স্বামীর কাছে ক্ষমা চেয়েছে সে। আর কখনও কোন পার্টিতে না যাবার ও অন্য কারও সাথে সম্পর্ক না করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করেছে সে। এমনকি বিয়ের পনের বছর পর এই বয়সে তাকে একটা সন্তান উপহার দেবারও প্রতিজ্ঞা করেছে সে। রাশেদ হায়দারের সমস্ত মস্তিষ্কে এখন একটাই চিন্তা।

এই চিন্তাটা গত এক মাস ধরে তাকে কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে। চিন্তাটা হচ্ছে এই, তিনি তার বউয়ের গলাটা ঘ্যাঁচ করে কেটে ফেলবেন। চিন্তাটা এসেছিল নিভৃতে, নীরবে। চিন্তাটা আসার পর রাশেদ হায়দার অনেক চেষ্টা করেছেন মনোযোগ অন্যদিকে দিয়ে চিন্তাটা দূর করতে, পারেন নি। হয়তো বউয়ের প্রতি প্রতিশোধের আকাঙ্ক্ষাটা অনেক অনেক দিন ধরে জমা হচ্ছিল তার অবচেতনে, তিনি বুঝতেই পারেন নি।

রাশেদ হায়দার চিন্তাটা দূর করার অনেক চেষ্টা করেছেন। সাইকোলজির বই ঘেঁটে সম্ভাব্য যা যা করা সম্ভব তার সবই করেছেন তিনি। দেখিয়েছেন বাংলাদেশের সেরা দুই সাইকিয়াট্রিস্টকে। তারা বলেছে কাউন্সেলিংএর কথা। অথচ দুই তিনটা কাউন্সেলিংএ কোন কাজই হয় নি।

বরং তার মধ্যে চিন্তাটা আরও পাকাপোক্ত হয়েছে। রাশেদ হায়দারের সামনে আত্মহত্যা ছাড়া আর কোন পথ খোলা নেই। তিনি কোনোভাবেই চিন্তাটা থেকে দূরে থাকতে পারছেন না। বউকে দেখলেই তার কাটা জুগুলার দিয়ে ছলকে বেরুনো রক্তের স্রোত কল্পনা করেই কেমন একটা উত্তেজনা হচ্ছে তার। অনেকটা হঠাৎ করেই রাশেদ হায়দারের মনে পড়ল কাদেরের কথা।

সেই কাদের, যে কিনা তার এক্সপেরিমেন্টের গিনিপিগ ছিল। কি যেন ছিল তার সমস্যা? কিভাবে যেন সে ভালো হয়ে গিয়েছিল? ডাঃ রাশেদ পাগলের মত নিজের পুরনো ফাইলপত্র ঘাঁটলেন। হ্যাঁ, এই তো। পাঁচ বছর আগের ঘটনা তার নিজের হাতে লিপিবদ্ধ। হ্যাঁ, এটাই।

রাশেদ হায়দার বুঝতে পারলেন তাকে কি করতে হবে। ইয়েস, দিস ইজ ইট। রাশেদ হায়দার তার বাসার সমস্ত ধারালো যন্ত্রপাতি আলমারিতে ঢুকিয়ে তালা মেরে রেখেছিলেন। চাবিটা দিয়েছিলেন বউয়ের কাছে। বউ জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়েছিল, তিনি কিছু বলেন নি।

বউ কি কিছু আন্দাজ করতে পেরেছে? মনে হয় না। কোথায় আছে চাবিটা? বউকে গুঁতিয়ে ঘুম থেকে তুললেন তিনি। পেয়ে গেলেন চাবির ঠিকানা। সন্তর্পণে আলমারি খুলে একটা ফলকাটা নাইফ বের করে আনলেন তিনি। দি বেস্ট ওয়ে টু চেক এ থট ইজ টু ফাইট ইট, নট এসকেপ ইট।

হ্যাঁ, এটাই। রাশেদ খুব আস্তে আস্তে পা টিপে বউয়ের দিকে এগিয়ে গেলেন। হঠাৎ করেই বউকে অসাধারণ সুন্দরী মনে হতে লাগল তার। নাইফের ধারালো প্রান্ত আলতো করে স্পর্শ করল মেয়েটি ঘাড়। ঠিক যেখানে জুগুলার ভেইন থাকে।

রাশেদ হাতের চাপ বাড়ালেন। তার বাস্তব আর কল্পনা একাকার হয়ে গেল। তার কল্পনায় নানারকম রক্তকণিকা খেলা করতে লাগল। রাশেদ বুঝতে পারলেন না, তার বউয়ের জুগুলার থেকে বেরিয়ে আসা রক্তের স্রোত তার কাছে রংধনুর মত মনে হচ্ছে কেন? তার বউয়ের চিৎকার বিটোফেনের নাইন্থ সিম্ফোনির মত লাগছে কেন? রাশেদ বুঝতে পারলেন না, এটা বাস্তব নাকি কল্পনা। কল্পনা নাকি বাস্তব।

*** এই ঘটনার ঠিক পাঁচ ঘণ্টা তিন মিনিট সাতচল্লিশ সেকেন্ড পর, সাইকিয়াট্রিস্ট ডাঃ রাশেদ হায়দারকে যখন পুলিশ নিজ স্ত্রীকে নৃশংসভাবে হত্যার জন্য হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল, তখন নাকি তাকে বিড়বিড় করে একটা কথাই বারবার বলতে শোনা গিয়েছিল, "দি বেস্ট ওয়ে টু চেক এ থট ইজ টু ফাইট ইট, নট এসকেপ ইট। দি বেস্ট ওয়ে টু চেক এ থট ইজ টু ফাইট ইট, নট এসকেপ ইট। দি বেস্ট ওয়ে টু চেক এ থট ইজ টু ফাইট ইট, নট এসকেপ ইট..." বলা বাহুল্য, এ ঘটনার কোন ব্যাখ্যা বরাবরের মতই পুলিশ দিতে পারে নি। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ৩২ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।