ফাগুনকে আরো মনে পড়ে, মেঘ এলে ফাগুনে। সোনা সে তো খাঁটি সোনা হয়, পুড়ে গেলে আগুনে।
বাচ্চারা মনে হয় চশমা জিনিসটা খুবই পছন্দ করে। অধিকাংশ বাচ্চাই দেখি আমার চশমার লোভে পড়ে আমার কোলে আসতে চায়। আর কোলে উঠেই তার প্রথম ও প্রধান লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায় আমার চশমা হস্তগত করা।
আর তার কাজে বাধা দেওয়া মানেই বিকট চিৎকার। আমিও মনে হয় ছোটবেলায় চশমা পাগল ছিলাম। পরিস্কার মনে নেই আমি কারো চশমা নিয়ে টানাটানি করেছি কিনা। তবে আমার চশমা প্রাপ্তির কথা কিছুকিছু মনে আছে।
যতদুর মনে পরে, আমি ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে থাকাকালীন প্রথম চোখের সমস্যার জন্য ডাঃ রবিউল এর কাছে যাই।
যাওয়ার সময় মনে হয় চশমা নিয়ে জল্পনা কল্পনা খারাপ করি নাই। আমি আর আমার এক বছরের বড় বোন একসাথে গিয়েছিলাম। তো প্রথমে আপুকে দেখে ডাঃ চশমা সাজেস্ট করলেন। এইবারতো চশমা পাওয়া না পাওয়াটা আমার মান ইজ্জত এর ব্যাপার হয়ে দাড়ালো। আমাকে চশমা পেতেই হবে এমন মনোভাব নিয়ে আমি ডাঃ এর সামনে বসলাম।
এবং সফলতার সাথে চশমার লাইসেন্স আদায় করলাম। তারপর আমাকে আর পায় কে? "মুই কি হনুরে" টাইপ ভাব নিয়ে বাসায় ফিরলাম।
চশমা পাওয়ার পর আমার ভাবই পাল্টে গিয়েছিলো। সারাক্ষন চোখে চশমা লাগিয়ে মুখে একটা গম্ভীর ভাব নিয়ে ঘুরে বেড়াতাম। এমনকি রাতে ঘুমাতে যাবার সময়ও চশমা খুলতাম না।
ফলস্বরূপ ৩য় দিনের মাথায় আমার স্বপ্নভঙ্গ (চশমা ভেঙ্গে দুই টুকরা)। সাথে আম্মার ঝাড়ি। এর পরের চশমাটা আম্মার ঝাড়ির ভয়েই হোক আর চশমা হারানোর ভয়েই হোক খুব যত্নের সাথে ব্যবহার করেছিলাম।
এরপর এস.এস.সি. পরীক্ষার আগে আগের একটা ঘটনা মনে পড়ে। তখন আমি সেঙ্গুইন+ এ কোচিং করতাম।
একদিন বন্ধুর ভাব উঠলো, ক্লাস করবেনা। আর আমিতো ফাকির সুযোগ পাইলে ছাড়িনা। তাই সোজা জাতিসংঘ পার্কে। লেকের পাড়ে বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম এমন সময় বন্ধু আমার চশমা হাতে নিয়ে বলে, "ফালাইয়া দেই?", আমি বলি,"দে"
"না থাক, তুই আবার কানবি"
কি????? এতবড় কথা? আমার নব্য কৈশোরের স্পর্শকাতর অনুভুতিতে গিয়ে লাগলো। চশমা নিয়ে সোজা পানিতে ফেললাম।
তারপর যথারীতি আম্মার ঝাড়ি। এবং নতুন চশমা প্রাপ্তি। আহা, কি সুখ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।