চলো আবার সবুজ গড়ি
এত্ত দুঃসাহস তোমাদের??
তোমরা কি ভুলে গেছো তোমাদের পূর্বপূরূষদের কথা??? আজ সেক্যুলার হয়েছো?? কে শিখিয়েছে??? যখন দেশের পরিবেশ খারাপ হবে তখন কি ওরা এসে তোমাকে উদ্ধার করবে??
আসুন আমাদের আলোচনায় ফিরে আসি। ওদেরকে এতো চেঁচিয়ে লাভ হবেনা। নিজেরা একটু বুঝার চেষ্টা করি ব্যাপারটা কি...
আমাদের পুরো শিক্ষা ব্যাবস্থার দিকে একটু তাকাই। কি দেখতে পাচ্ছি?? কিছুই না। কারন শিক্ষা ব্যাবস্থা টা সবাই বুঝে ও না দেখে ও না।
সাধারনত গ্রামের মানুষরা ভাবে কিছু একটা পড়লেই হইলো। কয়েকদিন পড়ে তো বলদ নিয়া হাল চাষই করবো। কিন্তু যারা শিক্ষিত তারা কি ভাবছেন? তারা ভাবছেন ছেলেমেয়েগুলো দিনদিন বেয়াদপ হয়ে যাচ্ছে কারন কি?? এটা হচ্ছে নানা বয়সি মানুষদের ভাবনা। আর বাবা বয়সি রা ভাবছেন বয়স কম একটু আধটু এরকম করতেই পারে... আর নিজেরা অর্থাৎ যে প্রযন্ম এসব করছে তারা কি ভাবছে??? তারা আসলে কিছুই ভাবছে না বা ভাবতে পারছে না। কারন তাদের ভাবনার বিশাল একটা যায়গায় বসবাস করছে নায়ক নায়িকা বা গায়িক গায়িকা অথবা নতুন ফ্যাশন... আর জেল না থাকলেও তেল দিয়ে চুলগুলোকে কোনোরকম আজগুবি টাইপের একটা শেপ দেয়া...।
খেয়াল করে থাকলে জেনারেশনের এই পরিবর্তন ও তাদের অনুভুতিটা টের পাবেন।
এবার আমাদের আলোচনা কিছুটা টার্ন করবে। বলুনতো একটি শিশু কিভাবে কথা বলতে শেখে? খুবই সহজ উত্তর মায়ের বলা দেখে। মানব মস্তিস্কের আকৃতি বা গঠন এবং নেচার ই হচ্ছে যে সে যা দেখবে তা অনুকরনের চেষ্টা করবে। আর এই অনুকরনের নেচারে বানর মানুষের সবচেয়ে কাছা কাছি অবস্থান করছে বলেই হয়তো ডারউইন সাহেব তার মত টা প্রকাশ করেছিলেন।
আবার মাঝে মাঝে আমার আফ্রিকান বার বছরের একটা ছাত্রের বিচিত্র অংগভঙ্গী ও দুষ্টামি দেখে মনে হয় ডারউইন খুব একটা মিথ্যা বলেননি। এবার বলুন এই ছেলেটি কেনো এত দুষ্টুমি করে??? বলবেন অনেকের মাঝে জেনেটিক সমস্যা আছে... তা আছে বটে কিন্তু এই সমস্যা কে আরো প্রকট করে তোলে অবিভাবক ও শিক্ষকদের চরম অবহেলা। কারন যারা দুষ্টামি একটু বেশী করে তারা তুলনা মুলক ভাবে অন্য সবার চেয়ে মেধাবী হয়ে থাকে।
আর এই দুষ্টুমিটাকে স্থায়ী ভাবে জীবনে অবস্থিত করার ক্ষেত্রে শিক্ষা অনেক বিরাট ভুমিকা রাখে। শিক্ষা যদি কাউকে না শেখায় যে... কোনটা ভালো আর কোনটা মন্দ তাহলে তো সে কোনোদিনই চিনবেনা ভালো এবং মন্দ কি।
আবার সব শিক্ষা কিন্তু শেখায় না কোনটা ভালো আর কোনটা মন্দ। যেমন বিজ্ঞান... এটা মানশষকে জ্ঞান দেয় সত্য কিন্তু এটা সত্য ও মিথ্যার, ন্যয় ও অন্যায়ের পার্থক্য করতে পারেনা। এটা পারে কেবলমাত্র ধর্মীয় ও নৈতীক শিক্ষা।
শিক্ষার ইতিহাসের দিকে যদি আমরা তাকাই তাহলে দেখবো অনে--ক প্রাচীন কাল থেকেই শিক্ষা নামক জিনিষটির সাথে মানুষ পরিচিত। আর এই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সাথে মানুষ জড়িত হয় মিশরে খ্রিষ্টপূর্ব ৩০০০ সাল থেক ।
আধুনিক শিক্ষার এই সিষ্টেমের জন্ম ১৭৭০ সালের গোড়ার দিকে। মৌলিক অধিকার হিসেবে জেনেভা কনভেনশনে এর স্বিকৃতি পায় ১৯৫২ সালে। শতেরোশো শতকে যখন ইন্ডাস্ট্রিয়ান রেভুলেশন শুরু হয় তখন থেকেই মুলত এর প্রতি মানুষের মনযোগ ও প্রয়োজন বেড়ে যায়। বিভিন্ন শিল্প কারখানায় জব পেতে হলে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার স্বিকৃতি লাগতো। তখন থেকে শুরু হয় শিক্ষার জন্য অন্ধকার একটি যুগ যা এখনো চলছে।
সবাই শিক্ষার ফিলোসফিকে ভুলে সার্টিফিকেটের প্রতি এতোটা অধিক পরিমানে ঝুঁকে পড়েছে যে সে ঝোঁক থেকে তাদেরকে তুলে আলোর দিকে মুখ ফেরানো অনেক কষ্টা সাধ্য কাজ।
আমাদের ডিপার্টমেন্টার প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মির্জা তজাম্মল হক স্যার আমাকে তার রূমে ডেকে নিয়ে প্রশ্ন করেন তোমাদের ক্লাশে কোনো সমসায় হচ্ছে নাতো??
আমাদের দিক থেকে কোনো ত্রুটি থাকলে বলতে পারো। অথবা কোনো শিক্ষকের সমস্যা থাকলে...
বলেছিলাম...স্যারঃ সেই সব দিকথেকে কোনো সমস্যা নেই। তবে অন্য একটা সমস্যা আমি ফিল করছি। তা হচ্ছে আমরা শিক্ষার মূল উদ্ধ্যেশ্য থেকে ধীরে সরে যাচ্ছি।
স্যারঃ ক্যামন??
বললামঃ স্যাররা যে ষ্টাইলে পড়াচ্ছেন তাতে প্রাতিষ্টানিক শিক্ষা প্রদান হচ্ছে। কিন্তু সেই শিক্ষার সাথে আত্মিক উন্নতির যে একটি বিষয় সম্পৃক্ত তা আমাদের শিক্ষকেরা কোনোভাবেই আলোকপাত করছেননা। স্যার, শিক্ষার উদ্দ্যেশ ছিলো আলোকিত কিছু মানুষ তৈরি করা কিন্তু আমাদের ভার্সিটি কি আজো তেমন একটি আলোকিত সন্তান উপহার দিতে পেড়েছে??
আজ এতো গুলো বছর হয়ে গেলো... এখান থেকে কতো ছাত্রইতো বেড়িয়েছে... কই একজন কি মনে রাখার মত মানুষ হয়ছে??
স্যার উড়িয়ে দেয়ার ভঙ্গিতে বাঁকা একটা হাসি দিলেন। তার প্রশস্ত চিবুকে কোথাও হয়তো বেদনা লুকিয়ে ছিলো অথবা তাও না... কারন আমরা তো সবাই রোবট হয়ে গেছি। আমাদের চেহারায় এখন মানবিক অন্যভুতি গুলো আর ফুটে ওঠেনা।
স্যারঃ বান্না তুমি তো ফিলোসফিকাল কথা বলছো। আমি বলছিলাম রিয়েলিটির কথা।
বললামঃ স্যার শিক্ষাটা সম্পূর্ণই একটি ফিলোসফিকাল বিষয়। আমাদের শিক্ষা ব্যাবস্থা আজো পাড়েনি একটি সু সন্তান উপহার দিতে... দূখ ভরা হৃদয়ে স্যারকে সালাম দিয়ে বেড়িয়ে আসি। ভার্সিটির বারান্দায় হেটে যাচ্ছি আর একুশ শতকের উদ্ভ্রান্ত যুবক যুবতীদের ভিরে নিজেকে খুব একা মনে হচ্ছিলো।
এদের হাসি দেখে কোখনো মনে হয়না যে এরা মানুষ।
এই হচ্ছে বর্তমান শিক্ষা ব্যাবস্থার হাল যেখানে এখনো ধর্ম শিক্ষা বহাল আছে স্বগৌরবে।
শুনেছি আরো একটু আধুনিক করতে এদেরকে ললিত কলা শেখানো হবে। আরে সেয়ানা... কাঁচ কলা তো জাতিকে কম দেখাওনি এখন আবার ললিত কলা দেখাতে এসেছো। এই সব শিক্ষায় শিক্ষিত পশুরা যখন তোমাদের নিজেদের চামড়া ছিলে খাবে তখন টের পাবা ললিত কলা কতটা মিষ্টি ছিলো।
ধর্মীয় শিক্ষার গলা টিপে কোনো জাতি কোনোদিন শ্বাস নিতে পারেনি। ধর্মীয় শিক্ষার গলায় ফাঁস দিলে নিজেকেই মরতে হবে। স্বরণ রেখ... যুগে যুগে ব্ল্যেক, ওর্ডসোওর্থ রা যেভাবে ধর্ম ও ধার্মিকতা কে রক্ষা করতে রক্তবমি করেছে সেভাবেই আমরাও জেগে আছি। তোমাদের এই সব নষ্টামি আর ভন্ডামীর অবস্থান আমার এই সোনার বাংলাদেশের মজবুত ধর্মীয় অনুভুতি সম্পন্ন মানুষের জমিনে হবেনা...
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।