আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কাঁচ দূরত্বে পৃথক পৃথিবীর দৃশ্যরা বেকে দূরে চলে যায়, অধরায়



কাঁচ দূরত্বে পৃথক পৃথিবীর দৃশ্যরা বেকে দূরে চলে যায়, অধরায় সাদি তাইফের 'আহ গোল্ডফিশ'র একটা ইন্টারএ্যাকটিভ পাঠ অভিজ্ঞতা (লেখাটিতে বিভিন্ন লেখকের এবং জনের মতামত দিকনির্দেশনাহীন ভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। ) কবিতারা অতিথি পাখির মতো, বছর বছর উড়ে আসে বায়বীয় পথে- কবিতার ক্লাসে আজ এই ছিলো প্রপাঠ্য প্রসঙ্গ। সংবেদন অনুভবেই জ্ঞান বা চৈতন্যের আওয়ায শোনা যায়। আবার মননশীলতা ছাড়া সংবেদনশীল মন সংগঠিত হয়না। সংবেদনশীল চর্চা চৈতন্যেকে মুক্তি দিতে পারে বলে মনে হয়।

আর এই মুক্তি প্রক্রিয়ায় প্রবেশ করেই এক নিরপেক্ষ 'আমি'র কন্ঠস্বর শোনা যায়- সচেতন অজ্ঞানতায় ঝুলে আছি, থেকেই যেতে চাই আমি আর আমার কবিতা সাদি তাইফের 'আমি'র চেতনা কবিতাকে আশ্রয় করে বেড়ে ওঠে, ভিন্ন ভাবে বললে কবিতা এই চেতনাকে প্রশ্রয় দেয়। পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক,রাষ্ট্রীয় এবং পরিবেশগত সব ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা জন্মকাল থেকে সাথে নিয়েই একটা শিশু বড় হয়ে ওঠে- তার সামনে আছে ধ্বংস অথবা আক্রান্ত হবার ভয়। তার অস্তিত্ত্বের উপর হুমকি প্রথম থেকেই বহুমাত্রিক পথে আসে। এই রূঢ় আর বাস্তব পরিস্থিতিতে শিশু শিক্ষিত হতে থাকে- এই শিক্ষাকার্যক্রম চলে পরিবার থেকে রাষ্ট্র ও প্রকৃতি অবধি, নিত্য নৈমিত্তিক আহা জোকাষ্টা নিয়তি এ স্তনাগ্রে পুত্র স্বয়ং, স্তনান্তরে পতি ........ অতঃপর ধীরে ধীরে হারিকিরি সূত্রে নিজেকে চৌচির করে বোঝালেন মৃত্যু শিশুটি এরপর শুধু নিজেকে খোজে যখন আধারেরা জ্যোস্নালোকে শরীর বিলায়। এই অনুসন্ধানরত চোখে আকাশের পরিধীতে গিয়ে ঠেকে- আকাশেকে তারাপূর্ণ দেখে মাঝে মাঝে পিতার বগলে ধরা ছাতা মনে হয় এই পাঠদান অব্যাহত থাকে, অজগরের বিরাট হা এর ভেতর থেকে আদর্শলিপিও দিকনির্দেশনা দেয়।

আমাদের শিক্ষাদান রীতি ও জ্যামিতি মেনে মুখোশের কেড়ামতিতে পরিজনসহ আপামর সকলেরই সম্মতি। সম্মতির এই প্রচলিত পথে প্রতিশ্রুতি থাকে কড়ির হিসাবে- অসাধ্য সাধন তবে নিতান্ত সহজ বাষিনীর দেহে পাবে সঙ্গম সম্মতি স্বগতোক্তির মত সাদি উচ্চারণ করে- ঢাকা থাক বোধিবৃক্ষ স্বরচিত চোখ যাক নদী ভেসে যাক নিজ প্রতিকূলে কিন্তু সমাজ সংসারের সৃষ্টি করা আলোর জরায়ুতে অন্ধকারের ভ্রুনটিও লুকিয়ে থাকে, কবির মুক্ত সংবেদনা তাকে ঠিকই চিনে নেয়। এখানেই জন্ম নেয় কবির দূর্ভোগ ও যন্ত্রণার চেতনা- আলোর সন্ধানে আমি অন্ধকারে হাটি সমুচিত নয় বুঝি এমত ভ্রমন নিতান্ত বিনীত আহা সহজ সরল সূর্যালোকে খুজে মরি তারার জ্বলন সাদি কথা বলতে পছন্দ করেন খুব। এই কথা বলতে বলতেই তিনি প্রতিকূল পথে শবদ ও শব্দবন্ধের এক আশ্চার্য বিস্ময় তৈরি করেন। সুচোষ্য আগুন, তৃষ্ণাতরু, পরানবাশি, মুক্তোমূখী ঝিনুকের প্রান, মেঘমাখা পা, মোমের মনন, রাজহাসঢেউ, শাড়িশুদ্ধ নারী, সূবর্ণ সংশয়...... তরুন প্রানটি প্রেম ও অপ্রেমের অসুখে ভুগে সুচোষ্য আগুনে পুড়ে ক্রমাগত অতিশয় দায্য হয়ে ওঠে।

আর কোন গভীর প্রদেশে বেড়ে ওঠে তৃষ্ণাতরু, শিকড় সমেত। এ অবস্থায় মায়াবী তিলকদ্বয় অধরার অতিকাছে সন্ধ্যাতারা হয়ে জ্বলে প্রেমিকার মুখে। যথারীতি কবি তখন ভাষাহীন প্রথম আদম। রক্তে রাধার কঙ্কণ বেজে উঠলে সাদি কিন্তু কৃষ্ণকেই ডাকে- কৃষ্ণ ওগো, বলো ভাই; যথাশীঘ্র বলো যাদুর পরানবাশি বেমনে বাজায়? বলো, কতোটা উষ্ণতা দিলে নিতান্ত বাশিটি কথা বলে সুরের ভাষায়? মুক্তোমূখি ঝিনুকের সন্ধানে মরুযাত্রীর পিপাসিত অধরের প্রার্থনা শোনা যায়- ঝরুক না হয় দুই-এক ফোটা প্রভাতী শিশির এ যেন আয়নার সাথে লুকোচুরি খেলা। আপত বাক্যের ন্যায় সাদি যখন বলে- সামুদ্রিক লাবনিক জলে সশীরীরে নেম না কখনো বাম বুকে যদি থাকে প্রণয়ের রক্তাক্ত আচড় তখন এই প্রেমময় জ্ঞানে যথেষ্ট মজাদার স্মৃতি তর্পনের ঢেউ এসে লাগে।

পরাগপিয়াসী ভ্রমরের কানে লাজবতী রহস্যকুসুমের সব কথাই প্রচারিত হয়। লাজবতী'র উড়ালকাঙ্খী মনের বরাবর তাই প্রশ্ণ রাখা যায়- ঝড়ো হাওয়া কেন রাখো মেঘমাখা পা'এ? আর প্রেমিকের মনন তখন গলে যায় ধুলোমাখা পথে। সাদি কী আর করে- আড়ালে আড়ালে থাকি, নৃত্য করি মেঘে আকাশে উড়াই মেধা- ঘুড়ির মতন। দূর থেকে দেখি রোজ চোরা চোরা চোখে ভ্রমরের সখী আজ লাজবতী মেয়ে। আবেগসীমার বহু উচু দিয়ে এই প্রেম প্রবাহিত হয়ে গেলে পর, রমনরঙা দুপুরে স্মৃতির তরিকা ভেঙে কবি নেচে ওঠে শতেক মুদ্রায়।

আর পয়মন্ত সেইসব সুদৃশ্যগুলো নিখোজ হয়ে গেলে রেটিনায় ধরা পরে শুধু মুখের ফসিল। মেঘমেয়ে আড়াল ডাকে বিরহী লালন। নির্দ্বিধায় ঠোট যায় শামুকের ঠোটে আর তামুকের ওমে নির্বেদের উপাদান খুজে চলে মোমের রোদন। এ অবস্থায় সে যেন এক উল্টানো কাছিম, অদৃষ্টে বিশ্বাসী-দৃশ্যাতীত দৃশ্যে। শাড়িশুদ্ধ নালির কাছেই তার যাতীয় প্রানের প্রনতি।

আর এতক্ষনের বর্ণনাকৃত 'সে' হচ্ছে এক নিরপেক্ষ 'আমি'। সাদির ব্যবহৃত অনুষঙ্গ দৃশ্যকল্প, উপমা, উৎপ্রেক্ষা এখানে সেই স্পর্শগ্রাহ্যতা অর্জন করেছে যা তার কবিতা পাঠ মাত্রই পাঠক টের পেতে পারে। আর শিক্ষিত মধ্যবিত্ত চৈতন্যে কবির আধ্যাত্মবাদের দিকে চোখ ফেরানোর প্রথমিক ধাপটিও গোচরে আসে এই কবিতায়। তা হলো এক মানবিক বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে। প্রসঙ্গত বলা যেতে পারে শ্রেনীচেতনা থেকে শুরু করে যে কোন ধরনের বিপর্যস্ত অবস্থা অথবা জীবনের কোন উৎকর্ষতা থেকেও এই মরমী পথের সন্ধার লাভ করা যেতে পারে।

বহুবিচিত্র অভিজ্ঞতার উন্মোচন ও বিশ্লেষনের প্রজ্ঞা মানবজীবনের যে কোন কালখন্ডকে আশ্রয় করেই চালানো যায়- জরায়ুর মেঘে যখন বংশের বিদ্যুৎ জ্বলে ওঠে তখনই পুরুষ পৃথিবীর প্রার্থনা শুরু হয়ে যায় সম্ভাব্য সন্ততি যেন হয় পুরুষবোধক, আহা! যেন হয় আপাদমস্তক কিন্তু জন্ম প্রক্রিয়ার সেই মিথ উদ্ধার হয়না- কোন রসে, আহা! কোন যাদুজোরে হাড়ের গুহায় নাচে প্রানের নূপুর সাদি বিলাপ করে ওঠে ভ্রুন হত্যা দেখে- সুকান্ত দা, ঢেকে রাখো চোখ, চোখের দোয়াত... দেখো না, দেখো না এমন কপাল,; ভ্রুনের নিয়তি তবু যদি ভ্রু রক্ষা পায়, তবু দি জন্ম নেয় শিশু; খুব অসহায়- নাভীর সংলগ্নে ঝোলে মায়ের শেকল, তল তথা তলানীবিহীন আদরে সাদে মধুরসে খুলে যায় তার স্বাদের ভুবন। এতো সেই সময় যখন নগ্নতাও ভিষন পবিত্র। দুগ্ধপানের অপারমহিমাময় দিন গুলোও অল্পায়ু হায়। একদিন জননীও লজ্জ্বাবতী হয়ে পরে শিশুর চাহিদায়- কোনবিধ জোয়াড় দীর্ঘমেয়াদী নয়- বোঝে,মানে শিশুজন বুঝেও মানে না শুধু স্তন্যপায়ী পুরুষের মন, বারমাস তরা চায় বুকের ফলন... আরো বিপর্যয়ের মোড়ক খুলেদেয় রাতের অস্মাৎ জাগরণ। শিশুজন দেখে নেয় ছায়া ছায় কায়াদের আদিম ম্যাজিক... ভেসে গেছে তারা সুখের চূড়ায় খুবভয়াবহ ভাবে... শিশুটিও শিখে নেয়- পালঙ্কের স্বল্পদৈর্ঘে কোন কামাসন উপযোগী অতিশয় আর বুঝে নেয়- সে নেহাত জননীর বেগানা স্বজন! আর পিতাজীই তলে তলে প্রণয় প্রধান শুরু হয় তার অভিমান আর বিচ্ছিন্নতার দিন- বেজোড় শালিক যেন তার আপন দর্পণ শিশুতোষ চোখে বুবুদের আলাপ অর্থহীন লাতবু প্রজাপতি ওেড়ে, ওড়ে ফড়িং চোখের তারায়।

বাশঝাড়ে ইলিশের ভুত অথবা শাকচুন্নী বটের মাথায় ঘর বাধে। সব কিছু কেমন যেন কারন, শিশুটি যে দেখে ফেলেছে দৃশ্যের অধিক। একদিন ব্রীড়ারত কুকুরের দৃশ্য দেখে বোধন হয় যে- নিশ্চয় এ অন্তরঙ্গতা নির্দোশ কোন প্রফুল্ল প্রকাশ। এদিকে বালকের চোখে তদিনে ধরা দেয় রজঃস্বলা রমনীদের সম্মিলিত স্নান আর ভেজা ভেজা ঘরমুখী শাড়িদের অপার মহিমা। তখন সে যেন চতুর বলাই।

শিশুমনে প্রশ্ন জেগে ওঠে- শরীরে শরীরে কেন হায় বৈশাদৃশ্য এমন? আরো আরো এসবের উত্তর না পেলেও বালক বোঝে- সাবধান! বুবুদের গল্পঘরে হুট হাট প্রবেশ নিষেধ। ঘুড়িমুখি দিনগুলো স্বভাব স্বরূপ লাটাইবিহীন কেটে যায় মুদ্রাদোষে। হঠাৎ হঠাৎ মাঝরাতে- ঘুমন্ত সম্ভোগে তুলে আনে স্বর্গানন্দ সুধা তুলে আনে বিন্দু বিন্দু মুক্তকণা, ঝিনুকবিহীন। ভোরবেলা জননীর সন্দিহান চোখের সামনে কুকড়ে যেতে যেতে অস্ফুটে বলে ওঠে- অতিশয় উপভোগ্য ছিল জরায়ুনগর ততদিনে সে জেনে গেছে প্রত্যন্ত ক্ষরণে- প্রণয়ের নেপথ্য নিহিত শিল্পশুদ্ধ রতির পিয়াস যার উল্টপিঠে থাকে অতিতীব্র নীলের বিস্তার। এক সময় সাদি আফসোস করে- যুবকেরা ভুলে থাকে আছে তাহারও একটি বোধ ও বীর্যময় মনুষ্যশরীর; নারীনেত্রে যাহা মোটামুটি রহস্যজনক।

এখানেই কবি আরশিনগরের খোজ করেন। আর নিরীহ সতীত্ত্বটিকে সাপেকাটা রোগীর মত কলার ভেলায় ভাসিয়ে দিয়ে নোটিশ টাঙিয়ে দেন- লবণের নিরীহ দানাটিও কিন্তু রক্তস্থান পেলে দারুণ বিধ্বংসী হয়ে ওঠে। বাংলা কবিতায় বয়সন্ধীর মনস্তাত্ত্বিক অনুসন্ধানে এটা একটা উল্লেখযোগ্যকাগ। বলা যায়, চাবি হারানোর কালে চাবিটি যে ছিলো এ যেন বহুদিন পরে সেটা বুঝে ওঠা। কবিতাটা সবিস্তারে এমন বর্ণনা করলাম বলে অনেকে বিরক্ত হলেও আমি এ কাজটা ইচ্ছাকৃতই কররাম কারন ওই যে বয়সন্ধীর এমন উপস্থাপন এর আগে আমার চোখে পড়েনি।

পুরুষপৃথিবীর সাম্রাজ্য ও ভোগের অন্ধকার ময় দিক চিহ্হত করে দিলে তাকে পস্তাতে হয় কারণ পিতৃতন্ত্রের ভোগে কম পড়লে বা হুমকি দেখাদিলে ভোগবাদী দুনিয়ার নর্মসগুলো ধারালো হয়ে আক্রমণ করে বসে। মূল্যবোেধর লঙ্ঘনতো ভয়াবহ অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়। কোন কবি বা লেখকের মনের তল দেশে যখন একটি বাক্য বা কথা তৈরি হয় তখন তা স্বীয় (লেখকের,কবির) গোপন পুলিশী তৎপরতা পার হয়েই তা ছাড়পত্র পায়। এই পুলিশী কার্যক্রম এক দিনেই তৈরি হয় না। অনির্দিষ্ট অতীত থেকে যে অভিজ্ঞতা তাকে বহন করতে হয় এবং এর সাথে তার শিক্ষা, আর্থসামাজিক অবস্থান, রাষ্ট্র, পরিবার, সম্পর্ক ইত্যাদিই তৈরি করে দেয় ভেতরের পুলিশটিকে।

এখন অনুসন্ধিৎসু পাঠক রচনাটি বা বাক্যটি পাঠ করে কিন্তু বুঝে নিতে পারে তা ঠিক কোন ধরনের পুলিশী কার্যক্রম অতিক্রম করেছে। এজন্য ফ্রয়েডকে হাজির করার পরোয়ানা দেয়া সম্ভব। সাদির সংবেদনা যে চৈতণ্যের জন্ম দেয় তার সচ্ছন্দ প্রকাশে সে সক্ষম। তার মনোজগতে এমন কোন পাহারাদার থাকে না যে বা যারা চিন্তাচেতনার প্রকাশে বিঘ্ন ঘটাবে। তার কবিতার ভাষা স্বচ্ছ, সাবলীল এবং ভারমুক্ত।

যা পাঠ পূর্বক সমাজে ঘাপটি মেরে থাকা অবদমনের স্মৃতিময় জিনগুলোকে । ঈষৎ চঞ্চল করে তোলে। সাদী বেশ ভালোভাবেই জানে মানুষের কোন কোন প্রাচীন আবেগগুলো নিয়ে তাকে খেলতে হবে। কারণ বাংলা ভাষায় জীবনানন্দ দাশকে পাই আমরা, যিনি বিদ্রোহ বা বিপ্লব করেন না বটে আবার সেই অর্থে আক্রমনাত্মকও নন। কিন্তু তিনি এক অপর চেতনার বাহক।

যাকে (অপরকে) তিনি ইতিহাসের ভেতর জমাটবাঁধা অন্ধকারে প্রত্যক্ষ করে তোলেন। আজকের এক কেন্দ্রিক পৃথিবীতে স্বাধীনতা যতটুকু ক্ষমতা দেয় তা দিয়ে কবি কান্নাকাটি করতে পারেন, ব্যর্থতার গান গাইতে পারেন, পাপ ও দুঃখের ফিরিস্তি দিতে পারেন তাৎক্ষনিক কিছু উত্তেজনা বা কষ্ট নিয়ে রচনা লিখতে পারেন, পাওয়া না পাওয়ার গীতও গাইতে পারেন। এতে তিনি আইনানুগ বাহবাও পেতে পারেন। কিন্তু 'অপর' চেতনাটি এতে উদ্ভাসিত হয় না, হয়ে থাকে অবদমিত। সাদী বারবার বাস্তবতা থেকে সরে যেতে চায় প্রকৃতির পরিসরে।

কিন্তু বাস্তব এমনই যে সে রাজনৈতিক হয়ে ওঠে- পাঁচ জোড়া হাত ডুবে আছে সাম্যবাদে, ধ্রুপদীর বুকে মহাভারতের প্রতি রাতে তোমাকে আসতেই হবে চে,... অপর বাস্তবের বিবরণ দিতে গিয়ে সে বলে- আকাশে বেশ কাছে অশোক কানন, মৃগনাভী মেঘ আর অনিন্দ্য হুরীরা সমপ্রেমে জুটি হবে গেলমান যুবা এমই তার অস্থিরতা। ভূমিতে বিপ্লবীকে ডাক দিয়ে সে সরে যায় অশোক কাননে। মুখস্ত মুখের সাদৃশ্যতা অভিন্ন মাংসের স্বাদ আর শ্রেণী বিভাজন ; পান্থশালা, কামকলা আর মুখোশের হাটে বিবেকানন্দের বাহুমূলে মাথা রেখে আর কতদিন ঘুমানো যায়। জোরদার দাবি ওঠে 'রাজ্য চাই আজ রাজকণ্যাসহ'। এখানে রাজকণ্যার 'অপরটি' অনাবিস্কৃতই থেকে যায় আমাদের পুরুষ পৃথিবীতে।

যা অনেকটা আলমাহমুদীয় কৃষিভিত্তিক সমাজতান্ত্রিক চেতনার পূর্বাবস্থা। লাল পিপড়ের ট্রেনে আকাশের দিকে চিনির চালান চলে গেলে দুরারোগ্য অসহ্যতায় ভুগেও - প্রথম থেকে বাঁচতে চায় প্রতিটি মানুষ, প্রতি প্রাতে, প্রতি পদে... আর - তার জন্যই কাঁটা তার, বাতাস বন্দর, মানুষের মানচিত্র আর তের নদীর ওপার থেকে উড়ে আসা জুড়ে বসা পুঁজির প্রভাব এখানেই পালাবার হাতছানি, নিয়তির চুলে বিলি কাটে অদৃশ্য বাতাস। তখন যাবতীয় স্বপ্নকে মনে হয় অতি প্রিয় প্রহসন। তথাপি বাঙালী মধ্যবিত্তের শিক্ষিত মরমী মানস স্বপ্ন দেখার সাধ এবং প্রয়াস চালিয়ে যায়। ঐতিহাসিক ভাবেই স্বপ্ন ও সাধ এবং প্রয়াসের ত্রিমাত্রিক সংঘাত জারি থাকে যাতে সে রক্তাক্ত হয় বারবার।

স্বীকারোক্তি- আমি একটি ছুরির সাথে কাটিয়েছি সারারাত গলায় গলায়। সাদির কবিতা প্রেম, অপ্রেম, বিচ্ছিন্নতা, আধ্যাত্মিকতা, বিশ্বাস-অবিশ্বাস, নিয়তি, কাম, রাজনীতি, প্রার্থনা সর্বোপরি ব্যক্তির ভেতর দিয়েই এক রক্তাক্ত পথের ইশারা দেয়। কিন্তু কোন উদ্ধার দেয় না। এক অনিদৃষ্ট পথে সে ছেড়ে দেয় তার সুখ ও যন্ত্রণার তুঙ্গস্পর্শী সংবেদনগুলো। লেখাটায় প্রচুর বানান ভুল আছে, ক্ষমা কইরেন)


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.