নোবেল প্রাইজটা কোন বাংলাদেশী হিসেবে ডঃ ইউনুসের আগে তেঁতুলতলা হাই স্কুলের ডেমোনস্ট্রেটর বিল্লাল মাষ্টার পেতে পারত। তবে তা ‘শান্তিতে’ নয়, ‘জীবতত্ত্ব বা চিকিৎসা শাস্ত্রে’। কিন্তু তা আর হবার নয়। কারণ আবিষ্কারটি উপস্থাপনের মত কোন তথ্য উপাত্ত মাষ্টার সাহেবের হাতে আর অবশিষ্ট নেই। তাছাড়া এই পর্যায়ে এসে শুরু থেকে শুরু করা একেবারেই অসম্ভব।
কারণ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংরক্ষিত রয়েছে শুধুমাত্র জসীমের মাথায়। জসীম তেঁতুলতলা হাই স্কুলের পিয়ন। তার বাবা ছিল মহেশখালী দ্বীপের বিখ্যাত কবিরাজ। জসীম লোকচক্ষুর অন্তরালে চলে গেছেন ঊনিশ’শ একানব্বই সালের ঊনত্রিশে এপ্রিল। মনে পড়ে দিনটির কথা? সেই যে প্রলয়ঙ্করী ঘুর্ণিঝড়?
জসীমের চাকরিস্থলটি চট্টগ্রাম শহরের প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত।
সে মাসে দু’মাসে একবার বাড়ী যায়। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে ঝড়ের দিন সে ছিল বাড়ীতে। তার বিয়ে সংক্রান্ত ব্যাপারটা ততদিনে সকলের কাছে একটি মুখরোচক গল্প হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কারণ তার বিয়ের স্বাভাবিক বয়স পার হয়ে গেছে বছর পনের আগে। বর্তমানে যেসব পাত্রীর সন্ধান আসছে তা প্রায় তার কন্যাসম।
বড়ভাইয়ের স্ত্রী আরো একটি কনে দেখা উপলক্ষ্যে তাকে বাড়ীতে ডেকে পাঠিয়েছে। তবে হ্যাঁ, লোকচক্ষুর অন্তরালে চলে যাওয়ার মানে এই নয় যে, সে মারা গেছে। আসলে সে অদৃশ্য হয়ে গেছে সেই ভয়াল রাতে। দৃশ্যমান থাকলে তার মহেশখালী যাওয়াটা সৌভাগ্যের কারণ হত নিশ্চয়ই। কারণ ততদিনে বিল্লাল মাষ্টারের নোবেল পাওয়ার পথ অনেকটাই প্রশস্ত হয়ে গিয়েছিল।
মাস্টার সাহেব নোবেল পেলে জসীমও নিশ্চয় রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে যেত।
হত দরিদ্র বিল্লাল মাস্টার সংসারের বারজন মানুষের খাওয়া পড়ার যোগান দিতে গিয়ে পাগলপ্রায়। এই দারিদ্রতাই তাকে এমন একটি গবেষনায় নিয়োজিত হতে উৎসাহিত করেছে। অবশ্য এক্ষেত্রে ‘উৎসাহিত’ শব্দটির চাইতে ‘বাধ্য’ শব্দটি অধিক যৌক্তিক বলে মনে হয়। এ্যমিবা নিয়ে এমন ঘোরতর গবেষনা পৃথিবীতে আর কেউ করেছে কিনা সেই বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহের অবকাশ রয়েছে।
মাষ্টার সাহেব অনেকদিন ধরে ভাবছিলেন, হাইব্রিড এ্যমিবা উৎপাদন করা গেলে কেমন হয়? তখন তার স্থান আর মাইক্রোস্কোপের কাঁচের তলায় থাকবে না। সে একটি সাকার রূপ নিয়ে পৃথিবীতে আবির্ভূত হতে পারবে। আদীপ্রাণীটির বিভাজন প্রক্রিয়া শিক্ষার্থী এবং গবেষকদের খালী চোখের সামনেই ঘটতে থাকবে। সবচেয়ে বড় কথা, এই আকালের দিনে একটি সম্পূর্ণ নতুন জাতের ‘সবজি’ পাওয়া যাবে। এ্যমিবা যত দ্রুত বংশবিস্তার করে, তাতে নিশ্চয় অল্প সময়ে চারিদিকে সবজিতে সবজিতে সয়লাব হয়ে যাবে।
মাত্রাতিরিক্ত উৎপাদনের ফলে নিশ্চয় এর মূল্য থাকবে সর্বনিম্ন পর্যায়ে। কিংবা কোন ধরনের মূল্য নাও থাকতে পারে। হয়তো দেখা যাবে, যেকোন তরি তরকারীর দোকানে ‘ফ্রি’ হিসেবে এ্যমিবা দেয়া হচ্ছে। বর্তমানে যে হারে দ্রব্যমূল্য এবং ভেজালদ্রব্য বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে নিশ্চয় বিনামূল্যে এমন উন্নতমানের সবজি মানুষের দেহ মনে অনেকটা স্বস্তি ফিরিয়ে আনবে। তবে হ্যাঁ, সবজিটি কিভাবে আরেকটু বেশী মুখরোচক এবং পুষ্টিকর করা যায় সেদিকটায় একটু খেয়াল রাখতে হবে।
আরেকটি বিষয় বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে, যাতে গবেষনা কার্যে রাসায়নিকের চাইতে জৈবিক উপাদানের ব্যবহার বেশী থাকে।
মাস্টার সাহেবের পরিকল্পনা অনুযায়ী নতুন সবজিটি হবে অনেকটা বাঁধাকপির মত। তবে এটি বাঁধাকপির মত বাঁধা থাকবে না, থাকবে খোলা। এতে করে আকার আকৃতিও বাঁধাকপির চাইতে বেশ বড় হবে। জসীম যদিও এইট পাশ এবং বিল্লাল মাষ্টারের কাজে দীর্ঘদিন ধরে সহায়তা করে আসছে তবুও সে এই গবেষনার বিষয়ে তেমন কিছু জানত না।
কবিরাজ বাবার সাথে কাজ করার সুবাদে গাছগাছরা সম্বন্ধে ভাল ধারনা ছিল তার। বিশেষ করে পুঁইলতা আর তেঁতুল গাছ সংক্রান্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তার ভাল জানা ছিল। বিল্লাল মাষ্টার বলেছিলেন, গবেষনা সফল হলে তিনি গবেষনার ভেতর বাহির সব জসীমকে বুঝিয়ে দেবেন। পুঁইলতা অতিদ্রুত বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়। এই বৃদ্ধির জন্য যে উপাদানটি দায়ী সেই উপাদানটি জসীমকে দিয়ে সংগ্রহ করিয়ে নেন বিল্লাল মাস্টার।
সেই সাথে তেঁতুল গাছের মূল হতে সংগ্রহ করেন এক প্রকার পাচক রস (যা তেঁতুলকে টক করতে সহায়তা করে)। এটি মানুষের রক্তে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমাতে সহায়তা করবে। এই পাচক সংগ্রহ করা জসীমের জন্য খুবই কঠিন একটি ব্যাপার ছিল। বিল্লাল মাস্টার সহজ লভ্যতার কথা ভেবে তেঁতুল গাছ হতে সংগৃহীত রসের পরিবর্তে বাজারে প্রাপ্ত ভিনেগার ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সরাসরি প্রাকৃতিক নয় বলে এর দ্বারা মূল মিশ্রনের গুনাগুণ নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল।
তো প্রাপ্ত দু’টি উপাদানের সাথে নির্দিষ্ট অনুপাতে সোডিয়াম ক্লোরাইড আর বাঁধাকপি থেকে সংগৃহীত পুষ্টিগুণ মিশিয়ে, প্রায় পাঁচ বছর পরিশ্রম করে বিল্লাল মাস্টার একটি মিশ্রন আবিষ্কার করেন। তারপর শুরু হয় সৃষ্ট মিশ্রনটিকে এ্যমিবার ডি এন এতে স্থাপন করে এর গাঠনিক পরিবর্তন ঘটানোর মত জটিল এবং কষ্টসাধ্য কাজ। এটি ঠিকঠাক মত হলেই শুরু হবে বহুল প্রতিক্ষীত ‘এ্যমিবার বর্ধন প্রক্রিয়া’। গবেষনা কার্যটিকে সমাপ্তির পথে নিয়ে আসতে বিল্লাল মাস্টারের মোট সময় লেগেছিল সাত বছর। কিন্তু চূড়ান্ত ফল লাভের মুহুর্ত যখন সন্নিকটে তখনই ঘটে এক হৃদয়বিদারক ঘটনা।
বিল্লাল মাষ্টার কি কারণে যেন এপ্রিলের ঊনত্রিশ-ত্রিশ দুইদিন ছুটি নিয়েছিলেন। ওদিকে আবার পরের মাসের এক তারিখে মে দিবসের বন্ধ। সুতরাং এই তিনদিন জসীমও মাষ্টার সাহেবকে বলে ছুটির ব্যবস্থা করে নিয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরে ভাবী তাকে বাড়ী যাওয়ার জন্য পীড়াপীড়ি করছিল। ভাবীকে সে মায়ের মত শ্রদ্ধা করে।
তার বাড়ীতে আরো থাকে বড় ভাই আর দু’টি ভাতিজা। সে ভাবীকে জানিয়ে দিয়েছে ঊনত্রিশ তারিখ বিকেলে বাড়ী পৌঁছুবে। তবে এখন বিয়েশাদী হবে না। সে এখন একটি জরুরী গবেষনার কাজে ব্যস্ত।
জসীম ইদানিং নিজেকে এ্যমিবা শ্রেণীর বলে সন্দেহ করে।
বিল্লাল মাষ্টার জসীমকে বলেছিলেন এ্যমিবা নাকি পৃথিবীর একমাত্র মেদহীন-এককোষী প্রানী। জসীম ভেবে দেখেছে, সেও মেদহীন। হেংলাপাতলা-ছিপছিপে। এবং আশ্চর্য হয়ে লক্ষ্য করেছে সেও এককোষী। এককোষী বলেই লজ্জায় সংকোচে তাকে সব সময় বিয়ের প্রসঙ্গটি এড়িয়ে চলতে হয়েছে।
জসীম ঠিক করেছে, গবেষনার কাজটা শেষ হলে ডাক্তার দেখিয়ে অপারেশান করিয়ে সেই ঘাটতি কোষটি এবার লাগানোর ব্যবস্থা করবে। কোষ কোত্থেকে সংগ্রহ করবে তাও সে ঠিক করে রেখেছে। তবে কোষহীনতার এ কথাটি তার সবসময় মনে থাকে না। কেবল স্কুলের পৌঢ় কুকুরটির পেছনদিকটা দেখলেই মনে পড়ে। কুকুরটি এখন বয়সের ভারে ন্যূজ, সবসময় পেছনের বারান্দায় পড়ে থাকে।
আর জসীম থাকে স্কুলঘরের কোণের একটি কামরায়। মূলত এই কামরাটি বিল্লাল মাস্টার গবেষনার কাজে ব্যবহার করে থাকে। আরো সুস্পষ্টভাবে বলতে গেলে বলতে হয়, ছোট্ট একটি ব্যাগের মধ্যেই রয়েছে বিল্লাল মাস্টারের মূল গবেষনাগারটি। হেড মাস্টারের ভয়েই এই সতর্কতা। হেড স্যারের কড়া নির্দেশ, বিল্লাল মাস্টারকে ফের যদি কখনো ঐসব ফালতু গবেষনায় সময় নষ্ট করতে দেখা যায় তাহলে তিনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
বিল্লাল মাস্টারের সেই গবেষণাগারে ছিল একটি ডায়রী, পেন্সিল, কলম, গোটা চারেক টেষ্ট টিউব, একটি কাঁচের বৈয়াম, কাঁচি, আরো টুকিটাকি কিছু যন্ত্রপাতি। যাবতীয় তথ্য উপাত্তগুলি সংরক্ষিত থাকে ঐ ডায়রীতে। জসীমের ব্যাগ আর মাস্টার সাহেবের গবেষনার ব্যাগটি দেখতে প্রায় একই রকম হওয়ায় একদিন গোল বাঁধে।
জসীম বাড়ীতে রওনা দেয়ার সময় ভুলবসত তার ব্যাগের পরিবর্তে গবেষনার ব্যাগটি নিয়ে যায়। প্রচণ্ড মাথা ব্যাথা নিয়ে জসীম যখন বাড়ী পৌঁছায় তখন সন্ধ্যা।
সেদিন আবহাওয়া ছিল প্রচণ্ড গুমোট। সমুদ্র আর নদী বন্দর গুলোতে চলছিল সর্বোচ্চ সতর্কতা সংকেত। কোনমতে ব্যাগটা ভাঙ্গা টেবিলটার উপর রেখে সে বিছানায় শুয়ে পড়ে। রাত ন’টা সাড়ে ন’টার দিকে তার ভাবী কামরায় ঢোকে নতুন পাত্রীর ছবি নিয়ে। কিন্তু জসীমকে ঘুমন্ত দেখে আর ডাকে না।
তখন সে চিন্তা করে, জসীমকে চমকে দিলে কেমন হয়! সে ছবিটিকে জসীমের ব্যাগে পুরে রাখার কথা ভাবে। ভাবতে ভাবতে ব্যাগ খুলে একটি পুরনো ডায়রী দেখতে পায় সে। ডায়রী খুলে ছবিটি রাখতে গিয়ে তার চোখে পড়ে ঘনিভূত সবুজাভ মিশ্রনের বৈয়ামটি। এবং কৌতুহলী নারীটি খোলা ডায়রী খোলা রেখেই বৈয়াম খুলে আচার ভেবে কিছু দ্রব্য জিহ্বা দিয়ে চেখে দেখে। তারপর তো তার চোখ ছানাবড়া।
বাহ্! চমৎকার! স্বাদটা তেঁতুল তেঁতুল, দেখতে অনেকটা শুষ্কপ্রায় বাটা মেহেদির মত। লবন দিয়ে খেতে নিশ্চয় আরো ভালো লাগবে। ভাবী এক দৌঁড়ে রান্না ঘর থেকে লবন নিয়ে এসে সেই মেহেদি সদৃশ্যের সাথে ভালভাবে মিশিয়ে দেয়। মনে মনে জসীমকে ধন্যবাদ দিতে দিতে এবং জিহ্বা আর তালু দিয়ে ঠাস্ ঠাস্ শব্দ করতে করতে প্রায় পুরো বৈয়ামটাই খালি করে ফেলে নিমিষে।
অবশেষে বৈয়ামটি উপুর করে ঝাড়তে গিয়ে তলানির কিছু মিশ্রন ডায়রীর উপর ছড়িয়ে পড়ে।
সেখান থেকে মুছে নিতে গিয়ে সেসব ছোট্ট ডায়রীর সারা গায়ে লেপ্টে যায়। বিল্লাল মাস্টারের তৈরী মিশ্রনে সোডিয়াম ক্লোরাইড পূর্বেই মেশানো ছিল। ভাবী আবার সেখানে লবন মেশানোতে লবনাক্ততার পরিমান মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে যায়। ফলে মিশ্রনের গুনাগুণ যায় উল্টে। বিল্লাল মাস্টারের আবিষ্কারের উদ্দেশ্য ছিল বিভাজনের মাধ্যমে বস্তুর সম্প্রসারন ঘটানো।
কিন্তু পরিবর্তিত মিশ্রনটি ঘটাচ্ছে বস্তুর সংকোচন। ডায়রী একটি মৃত কোষ। তাই সেখানে কোন এন্টিবডি তৈরী হয় না। এঅবস্থায় ডায়রীতেই প্রথম আক্রমন করে বসে মিশ্রনটি। ভাবীর অলক্ষ্যে ডায়রীটি ছোট হতে হতে চুপসে গিয়ে এক পর্যায়ে নাই হয়ে যায়।
অতি উৎসাহী ভাবীর হাত থেকে পড়ে বৈয়ামটি হঠাৎ ভেঙ্গে যায়। বৈয়াম ভাঙ্গার শব্দে ঘুম ভেঙ্গে জেগে ওঠে জসীম। বিছানায় শুয়ে ফ্যাল ফ্যাল করে একবার ভাবীর দিকে একবার বৈয়ামের দিকে তাকায়। ভাবী তাকে ‘আচার খাইবা ছোট মিয়া’ বলে তার আঙ্গুলে লেগে থাকা মিশ্রনের অবশিষ্ট অংশ একটু করে খাইয়ে দেয় জসীমকে।
ইতিমধ্যে বাইরে শুরু হয়ে যায় ঝড়।
চারিদিকে চিৎকার চেঁচামেচি। আশেপাশের বাড়ীঘর থেকে মানুষজন সামনের আশ্রয় কেন্দ্রে ঠাঁই নেয়ার জন্য ছুটছে প্রাণপনে। বৃদ্ধি পেতে থাকে দরিয়ার গর্জন। ঢেউ গুলো বিশাল থেকে বিশালতর হতে থাকে। বাইরে ঝড়ের তাণ্ডব চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়তে থাকে হু হু করে।
আর সেই সাথে পাল্লা দিয়ে ভেতরে চলতে থাকে অন্তর্হিত হওয়ার এক মর্মান্তিক স্বল্পদৈর্ঘ্য আখ্যান। হঠাৎ করে অবাক জসীমের চোখের সামনে ভাবীর সংকোচন কার্য শুরু হয়। বাকরুদ্ধ জসীম দেখতে পায়, ভাবী কিভাবে যেন অতি দ্রুত ছোট থেকে ছোটতর হতে হতে নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে। কিছুক্ষণপর সে নিজেকে অবাক করে দিয়ে নিজেই সংকুচিত হতে শুরু করে। কিন্তু তার সংকোচন প্রক্রিয়া ঘটে ভাবীর তুলনায় কিছুটা ধীর লয়ে।
তবে তকেও শেষ পর্যন্ত ঐ ভাবীর পরিণতিই বরণ করতে হয়। (আশেপাশে কোন কুকুরের পশ্চাদাংশ দেখা না গেলেও, শেষ মুহুর্তে হঠাৎ কেন যেন তার একটু করে সেই ঘাটতি কোষের কথা মনে পড়েছিল। ) তাদেরকে জসীমের বড় ভাই আর ভাতিজারা সব জায়গায় তন্ন তন্ন করে খুঁজে না পেয়ে, অবশেষে নিজেরা নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে আশ্রয় কেন্দ্রে গিয়ে আশ্রয় নেয়।
পরদিন নদীর ধারে অসংখ্য স্বজন হারা মানুষের ভীড়। বিশ ত্রিশ ফুট উঁচু ঢেউ ভাসিয়ে নিয়ে গেছে ঘরবাড়ী, মানুষ।
দূরে ভেঙ্গে পড়া শতবর্ষী বটের একটি ডালে বসে আছে জসীমের ভাই আর ভাতিজারা। তাদের হৃদয় শূন্য। দৃষ্টি নিবদ্ধ হয়ে আছে দিগন্তে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।