কুষ্টিয়ার বিভিন্ন উপজেলা ও পৌরসভায় বিএনপির আহবায়ক কমিটি গঠন নিয়ে চরম কোন্দলের সৃষ্টি হয়েছে। জেলার মিরপুর উপজেলা বাদে প্রতিটি উপজেলা ও পৌরসভায় দুটি করে আহবায়ক কমিটি গঠন করে তা অনুমোদনের জন্য কেন্দ্রের কাছে জমা দিয়েছে। প্রকাশ্য বিবাদমান দুটি পক্ষ। তারা দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় কর্মসূচী ও আলাদা ভাবে পালন করছে। সাবেক সাংসদ সোহরাব উদ্দিনকে আহবায়ক ও ৯ জন যুগ্ম-আহবায়ক করে জুলাই মাসে জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির অনুমোদন করে কেন্দ্রীয় কমিটি।
এতে ত্যাগী নেতাদের নাম না থাকায় কোন্দল শুরু হয়। পরে দু’দফায় আহবায়ক কমিটির সদস্য বাড়িয়ে ৬০ জন করা হলে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়। এর পর ৫টি উপজেলা ও ৪টি পৌরসভার আহবায়ক কমিটি গঠন করা নিয়ে নতুন করে কোন্দল শুরু হয়। বিবাদমান দুই পক্ষের একাংশের নেতৃত্বে রয়েছেন জেলা কমিটির আহবায়ক সোহরাব উদ্দিন এবং অন্য পক্ষে যুগ্ম-আহবায়ক মিনহাজুর রহমান আলো। সোহবার উদ্দিনের তত্বাবধানে গঠিত আহবায়ক কমিটি গুলোর মধ্যে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা ও পৌর কমিটিতে তৌহিদুল ইসলাম ও কুতুব উদ্দিন আহম্মেদ, কুমারখালী উপজেলা ও পৌর কমিটিতে গোলাম মোহাম্মদ ও কে এম আলম, খোকসা উপজেলা ও পৌর কমিটিতে সৈয়দ আমজাদ হোসেন ও আলাউদ্দিন খাঁন।
ভেড়ামারা উপজেলা ও পৌর কমিটিতে ইয়াসিন আলী ও এনামূল হক। এবং দৌলতপুর উপজেলা কমিটিতে সাবেক সাংসদ রেজা আহাম্মেদ কে আহবায়ক করা হয়েছে। অন্যদিকে জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক মিনহাজুর রহমান’র নেতৃত্বে গঠিত কমিটি গুলোর মধ্যে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা পৌর কমিটিতে ফিরোজ আফতাব উদ্দিন ও এম এ শামিম, কুমারখালী উপজেলা ও পৌর কমিটিতে পৌর মেয়র নুরুল ইসলাম প্রামানিক ও আব্দুল কাদের, খোকসা উপজেলা ও পৌর কমিটিতে মজিবর রহমান মাষ্টার ও পৌর মেয়র আনোয়ার আহাম্মেদ খাঁন। ভেড়ামারা উপজেলা ও পৌর কমিটিতে মহসিন রেজা ও মনোয়ারুল আলম। এবং দৌলতপুর উপজেলা কমিটিতে আলতাফ হোসেন কে আহবায়ক করে পাল্টা কমিটি গঠন করা হয়।
সবগুলো কমিটিই অনুমোদনের জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যেই দুই পক্ষই পৃথকভাবে দলের প্রতিষ্ঠাবাষিকী, চেয়ারপারসনের কারামুক্তি দিবস, দলে নতুন সদস্য সংগ্রহ সহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করছে। বিএনপি নেতা এম এ শামিম অভিযোগ করেন জেলা আহবায়ক সোহরাব উদ্দিন দলীয় চেয়ারপারসনের নির্দেশমতো তৃনমূল পর্যায়ে কোন কর্মীসভা ছাড়াই ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে মনগড়া ভাবে বিভিন্ন কমিটি গঠন করেছে। কুষ্টিয়ার পৌর বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক কুতুব উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডের তৃনমূল নেতাকর্মীদের মতামতের ভিক্তিতে কমিটি গঠন করা হয়েছে। এবং তা জেলা আহবায়ক কমিটির অনুমোদনের পর কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।
দৌলতপুর বিএনপির একাংশের প্রবীন নেতা আলতাফ হোসেন অভিযোগ করেন দৌলতপুরে তৃনমূল নেতাদের সঙ্গে বৈঠক ছাড়ায় এ কমিটি করা হয়। এজন্য তৃনমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে পাল্টা কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলা কমিটির আহবায়ক সাবেক সাংসদ সোহরাব উদ্দিন বলেন, বিচ্ছিন্ন কিছু কর্মী আমার বিরোধিতা করছে। তারা সংখ্যায় খুবই কম। কেন্দ্রীয় ভাবে আমাকে জেলা আহবায়ক করা হয়েছে।
আমি চেয়ারপারসনের নির্দেশমতো দলীয় কর্মসূচী চালিয়ে যাচ্ছি। কমিটিতে দলের ত্যাগী নেতারা বাদ পড়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সবাই কে দিয়ে তো আর সব কাজ করা যায় না। যুগ্ম-আহবায়ক মিনহাজুর রহমান বলেন, জেলা আহবায়ক মনগড়া ভাবে পকেট কমিটি গঠন করেছেন। তাই তৃনমূল পর্যায়ের নেতা কর্মীদের নিয়ে পাল্টা কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এদিকে তৃণমুলের নেতা-কর্মিদের মধ্যে ক্ষোভের কারণে কুষ্টিয়া জেলা বিএনপিতে বিরাজ করছে স্থবিরতা।
কোথাও কোন কমিটি গঠন বা কার্যক্রম সুষ্ঠভাবে চলছে না। প্রতিপক্ষ থাকার কারণে অনুমোদিত বলে দাবী করা কমিটির নেতৃবৃন্দ কোন কর্মসূচি দিলে তার পাল্টা কর্মসূচি দিচ্ছে অন্য গ্রুপ। এ নিয়ে সমপ্রতি কুমারখালীতে উভয় পক্ষের মধ্যে অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেছে। সে ঘটনার পরে অন্য উপজেলা এমনকি কুষ্টিয়া সদরেও কোন কার্যক্রম দেখা যাচ্ছে না।
দৈনিক সময়ের কাজজের সৌজন্যে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।