আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নীলাকাশের শূণ্যতা (২৩)



হাসানের সাথে আর কোন যোগাযোগ নেই মোহনার। মোহনা জানে না হাসান কেমন আছে, কোথায় আছে। অসহ্য কষ্টের মাঝে মোহনা বার বার ভেংগে পড়ে, আবার নিজেই নিজেকে গড়ে তোলে। তার অবিরাম চেষ্টা নিজেকে ৩ মাস আগে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার। এই ৩ মাসে হাসানের ফ্যামিলির সাথে মোহনার আর মোহনার ফ্যামিলির সাথে হাসানের একটা ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

মাঝে হাসানের বোন তুলির সাথে কথা হয় মোহনার। মোহনা ভাবে, যত সমস্যা হাসানের সাথে, কিন্তু তুলি আর হাসনের মা এর সাথে যে সম্পর্ক হয়েছে তাতে তো কোন সমস্যা নেই। মোহনা বিশ্বাস করে, কারো সাথে সম্পর্ক গড়ে ওঠলে সেটাকে টিকিয়ে রাখা উচিৎ। মোহনার মা মাঝে মাঝে হাসানের কথা জানতে চায় মোহনার কাছে। মোহনা বলে, হাসান ভালো আছে।

মোহনা কখনো বলে না হাসানের সাথে তার কোন যোগাযোগ নাই। একদিন মোহনার মা মোহনাকে ফোন করে বললো, হাসান আগে তার সাথে প্রায়ই কথা বলতো, এখন আর ফোন করে না। হাসান ভালো আছে তো? উনার খুব দুশ্চিন্তা হচ্ছে কারন বিডিআর বিদ্রোহের পর আর্মি অফিসারদের ভেতরে কি হচ্ছে, এসব নিয়ে বাইরে অনেক ধরনের গুজব শোনা যাচ্ছে। মোহনার মা আরো বললেন, উনি কয়েকবার হাসানকে ফোন করেছেন, কিন্তু হাসান ফোন ধরে না। এসব কথা শুনে মোহনারও খুব দুশ্চিন্তা শুরু হলো হাসানের জন্য।

হাসান কি কোন বিপদে আছে? মোহনা হাসানের ছোট বোন তুলি কে ফোন দিল। তুলির স্বাভাবিক হাস্যোজ্জল কথা শুনেই মোহনা বুঝতে পারলো, হাসান ভালো আছে। কিছুখন কথা বলার পর মোহনা হাসানের কথা জানতে চাইল, সে কেমন আছে। তুলি বললো, ভাইয়ার তো বিয়ে, আপনি জানেন না? ভাইয়া আপনাকে কিছু বলে নি? মোহনা খুব অবাক হয়ে জানতে চাইল, তাই নাকি? না, আমি জানি না তো। কবে বিয়ে? কার সাথে বিয়ে? তুলি হঠাৎ করে কিছু একটা ভেবে কথা উলটে ফেললো।

বললো, না, বিয়ে এখনো ঠিক হয়নি, মেয়ে দেখা হচ্ছে। এরকম মেয়ে দেখা তো প্রতি মাসেই হয়। কোন কিছু ঠিক হলে আমি আপনাকে জানাবো। মোহনার বুঝতে বাকি রইল না, হাসানের বিয়ে পুরোপুরি ঠিক হয়ে গেছে। মোহনার খুব অবাক লাগছে।

বুকের ভেতরটা কেন যেন হাহাকার করে উঠলো। এ কিসের কষ্ট? মোহনা তো এটাই চেয়েছিল। ৩ মাস ধরে মোহনা হাসানকে একটা কথাই বুঝিয়েছে, একটা জিনিসই চেয়েছে আর সেটা হলো, হাসান যেন বিয়ে করে সংসারি হয়। এত দিনে মোহনার সেই ইচ্ছা পূরন হতে যাচ্ছে। মোহনা নিজেকে বুঝালো, আজ তোমার আনন্দর দিন মোহনা।

হঠাৎ করে মনে হলো, হাসানের কাছে মোহনার অনেক ছবি আছে, আর ইয়াহুতে যত চ্যাটিং করেছে, সব গুলো সেভ করা আছে হাসনের কাছে। মোহনা ভাবলো, হাসান নতুন জীবন শুরু করছে যাচ্ছে। মোহনার স্মৃতি গুলো হাসানের কাছে থেকে সরিয়ে নেয়া দরকার, কারন হাসান বলেছিল, হাসানের কাছে মোহনার যা কিছু আছে সেগুলো সারাজীবন যত্ন করে রাখবে। এবার মোহনাকে শেষ অভিনয় টা করতে হবে হাসানের সাথে। মোহনা হাসানকে ফোন দিল।

কিন্তু নাহ, হাসান ফোন ধরে না। এবার একটাই উপায় মোহনার, হাসানকে ইমেইল করা। মোহনা হাসানকে লিখলো, "তোমার কি ধারনা, আমি তোমার সাথে প্রেমালাপ করার জন্য কল করেছিলাম? তুমি নিজেকে কি মনে করো? নিজেকে এতোটা important ভাবার কি আছে? তোমার সাথে contact করার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা আমার নেই। তুমি একদিন বলেছিলে, “u were a nightmare in my life”. Its 100% true. তাই আমি চাইনা তোমাকে মনে করতে। তোমার কনো ছায়া আমার জীবনে পড়ুক, এটা আমি চাইনা।

আমি তোমাকে কল করেছিলাম শুধু একটা কথা জানার জন্য, তোমাকে এই অধিকার কে দিয়েছে যে তুমি আমার আম্মুকে অপমান করো? ছিঃ হাসান, তুমি এত নীচ আমি বুঝতেও পারি নি। আমি জানতামনা আম্মু তোমাকে কল করে, জানলে অনেক আগেই নিষেধ করতাম। Sorry হাসান, আমার ফ্যামিলির লোকজন তোমাকে অনেক বিরক্ত করেছে, আমি তোমার ২ পা ধরে ক্ষমা চাইছি। আমি আমার বাসার সবাইকে নিষেধ করেছি, তোমার সাথে আর যোগাযোগ করবে না। তোমার আর আমার মাঝে অনেক পার্থক্য আছে।

আমি নিজেকে মানুষ মনে করি কিন্তু আমার মনে হয়না তোমার মধ্যে কোন মনুষত্ববোধ আছে। আর আমি জানি কোন রিলেশন create হলে সেটা কিভাবে maintain করতে হয়। তাই তুমি যা পারো, আমি তা পারি না, I know how to respect the relations, আমি চাইনা, তোমার কাছে আমার বিন্দু পরিমান কিছু থাক। Not a single substance, আশা করি তুমি বুঝতে পারছ, আমি কি বলতে চাইছি। I m very happy becoz I could pick “NO”. bye" কিছুখন পর হাসান রিপ্লাই করলো, "if you dont know anything, dont argue, I send a sms to aunty. whatever, its for your understanding, because you can think a lot, I was in BDR investigation when she was calling. ask my mom, how many times could I call her last 7 days." আর কোন রিপ্লাই মোহনা করলো না, বির বির করে শুধু বললো, আমি জানি হাসান, তুমি অনেক ভালো একটা ছেলে।

তুমি অনেক সুখী হও।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।