হাসানের সাথে যোগাযোগ বিহীন দিন গুলো কেটে যাচ্ছে মোহনার। উহহ, কি প্রচন্ড কষ্ট! কিছু ভালো লাগে না, এমন কনো মুহূর্ত নেই, যখন হাসানের কথা মনে হচ্ছে না। সারা কক্ষন মোবাইল ফোনের দিকে চেয়ে থাকে মোহনা, এই বুঝি একটা এস, এম, এস অথবা একটা কল আসলো হাসানের। নাহ, হাসান একটি বারও মনে করে না মোহনাকে। মাঝে মাঝে মোহনার ভয় হয়, হাসান ভালো আছে তো? মোহনা কিছু খেতে পারে না, খাবার সময় হলেই হাসানের কথা মনে হয়।
বিগত ৩ মাস মোহনা আর হাসান এক সাথে লান্চ, ডিনার করত। একজন না খেলে আর একজন খেত না। মোহনা শুধু মানষিক ভাবেই না, শারিরীক ভাবেও অনেক দুর্বল হয়ে পড়ছে দিনে দিনে। সব সময় আনমোনা হয়ে থাকে, কারো সাথে কথা বলে না। একদিন ভার্সিটি থেকে ফেরার পথে সিড়ি দিয়ে বাসায় উঠার সময় মাথা টা কেমন যেন ঘুরে উঠলো, পড়ে গেল হোচট খেয়ে, পা দিয়ে দর দর করে রক্ত ঝরতে থাকলো।
কোনভাবে বাসায় ফিরে শুয়ে পড়ল বিছানায়। আজ মোহনার নিজেকে খুব বেশি একা মনে হলো। কেউ নেই পাশে। সারা রাত কেটে গেল। সকালে পা ব্যথায় হাটতে পারছে না মোহনা।
ভার্সিটি যাওয়ার তো প্রশ্নই উঠে না। কোনো ভাবে একটা এস এম এস লিখল ল্যাবমেট কে সেন্ড করার জন্য,
"Last night I got an accident. I am sick now, Feeling pain in my leg and can’t walk properly because of the bleeding. So I will not go to UV today".
কিন্তু হায়! এস এম এস টা ভুল করে হাসানকে সেন্ড করে দিল মোহনা, কারন recently used no এর মাঝে প্রথমটাই ছিল হাসানের। মোহনা তার নিজের ভুল টা বুঝার সাথে সাথে হাসানকে আরো একটা এস এম লিখে জানিয়ে দিল, মোহনা ভুল করে এস এম এস টা হাসানকে সেন্ড করেছে।
মোহনা খুব অবাক হয়ে গেল। হাসানের কোন রিপ্লাই নাই।
হাসান এটা জানল, মোহনা অসুস্থ্য, তার পরও একবার খোজ নিল না। অথচ এই হাসানই মাত্র ক্য়টা দিন আগে মোহনার জন্য পাগোল ছিল। এটাই কি ভালোবাসা?
মোহনা জানে না, সে কেন এত কষ্ট পাচ্ছে, কার জন্য কষ্ট পাচ্ছে। সে যা চেয়েছিল, তাইতো হয়েছে, হাসান মোহনাকে ভুলে গেছে। কিন্তু মোহনা কেন পারছে না তার মনকে বোঝাতে? সারা রাত অনলাইনে বসে হাসানের জন্য অপেক্ষা করে সে।
যে ফেসবুকে হাসানের সাথে মোহনার দেখা হল সেই ফেসবুক থেকে হাসান চলে গেছে। মোহনাও ফেসবুক থেকে তার সব ছবি ডিলিট করে দিয়েছে। সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফেসবুক মোহনা আর ব্যবহার করবে না, কিন্তু প্রতিদিন ফেসবুক খুলে বসে থাকে সে। প্রতি রাতে হাসানের সাথে কথা বলতে বলতে ঘুমাতো মোহনা। এখন আর ঘুম আসে না তার।
ইয়াহু এর ভয়েস মেইল এ হাসানের কিছু ভয়েস মেইল ছিল। সেগুল ডাউনলোড করে প্রতি রাতে মোহনা ঘুমুতে যাওয়ার সময় শুনে এখন। আর সবসময় দুচোখ বেয়ে ঝরে যায় কান্নার বন্যা। হাসানের সাথে এই ৩ মাস এ ইয়াহুতে যত চ্যাটিং হয়েছে তার সব গুলো মোহনা সেভ করে রেখেছে। সেগুলো সব প্রিন্ট নিয়েছে সে।
তার পর সেগুলো বাধাই করে ৩০৫ পৃষ্ঠার একটা বই বানিয়েছে। আর হাসানের দেয়া এস এম এস গুলো ডায়েরী তে লিখে রেখেছে। এগুলো কখনো হারাতে চায়না মোহনা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।