আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একটি ভাবনাঃ-মাটি রপ্তানি করা কি ঠিক হবে?

ও আমার দেশের মাটি... তোমার পরে .... মাথা।

বিভিন্ন পত্রিকায় গতকাল এবং আজকে দেখলাম আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মালদ্বীপে মাটি রপ্তানীর বিষয়ে ইতিবাচক ভাবে সাড়া দিয়েছেন!! তবে নদী ড্রেজিং এর সব খরচ মালদ্বীপ কে বহন করিতে হইবে। মালদ্বীপ জলবায়ুর পরিবর্তনের কারনে হয়তো ডুবে যেতে পারে। সেই আশণ্কা থেকে-ই মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মাটি আমদানী করে তার দেশ উচু করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমার প্রশ্ন হলো জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কি আমাদের দেশের কি কিছুই হবে না? অথচ আমাদের প্রধানমন্ত্রী ইতিবাচক সাড়া দেয়ার পরের দিন জাতি সংঘে ভাষন দিয়ে বিশ্ব নেতাদের জানিয়েছেন যে.., গ্লোবাল ওয়ার্মিং(জলবায়ু পরিবর্তনের) এর কারনে সমুদ্র পৃষ্টের উচ্চতা ১ মিটার বাড়লে বাংলাদেশের দক্ষিন অন্চলের ১৮ ভাগ নীচু ভূমি তলিয়ে যাবে! এবং দেশের মোট জনসংখ্যার ১১ ভাগ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

আমার মতামত হলো আমাদের নদ নদীতে জমে থাকা পলি মাটি কেন? আমাদের-ই নীচু ভূমি উচু করার পরিকল্পনা নেয়া হবে না? অথচ সেই পলি মালদ্বীপে রপ্তানী করা হবে ড্রেজিং করার বিনিময়ে!! হাঁ মালদ্বীপ আমাদেরই পাশের দেশ তাদের উপকার হবে কিন্তু আমাদের কি হবে? যদি জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে আমাদের দেশের কোন ক্ষতি হওয়ার সম্ভবনা না থাকতো তাহলে কোন আপত্তি ছিলো না। যেই সব দেশের তেমন কোন সম্ভবনা নাই তারা আমাদের জননেত্রীর মতো বিশ্ব নেতা নেত্রী হয়ে উঠতে পারে নি!! আজকে মালদ্বীপ এবং বাংলাদেশ সহ অন্যান দেশের যে ভয়ঙ্কর পরিনতির কথা বলা হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে অথচ তার জন্য তারা দায়ী নয়। তাহলে মালদ্বীপের মাটির চাহিদা সেই সব দেশের-ই বহন করা উচিত। যাদের স্বেচ্ছাচারিতার কারনে পৃথিবীর এমন অবস্হা। তা ছাড়া ও পৃথিবীতে এমনো দেশ রয়েছে যাদের তেমন কোন মারাত্বক ক্ষতির সম্ভবনা নাই জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে।

যেমন রয়েছে বাংলাদেশের, অথচ আমাদের প্রধানমন্ত্রী আমাদের নীচু ভূমি উচু অথবা অন্য কোন ব্যবস্হার কথা চিন্তা না করে রপ্তানীর চিন্তা করছে!! সত্যই বিচিত্র তুমি বাংলাদেশ। আমি যতটুকু জানি বাংলাদেশের নদ নদীর বালু এবং মাটি সিঙ্গাপুরে রপ্তানী করা হয়!!! আমার প্রশ্ন সিঙ্গাপুর কি পৃথিবীর আর কোন দেশ থেকে বালি-পলিমাটি আমদানী করতে পারে না? যাদের জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে তেমন কোন ক্ষতির সম্ভবনা নাই। আমাদের দেশের ভূমি নদী ভাঙ্গনের শিকার হচ্ছে প্রতিদিন। এই যে নদীতে জমা পলি মাটি কোন স্হান থেকে এসেছে? কিছু অংশ নদীর পানি বহন করে নিয়ে এসেছে চীন ভারত থেকে আর বাকী অংশ এই দেশেরই। টেকনাফের ঝাউ বাগান লুটপাটের মতো এই দেশের এক শ্রেনীর মানুষের লোভ লালসা এমন পর্যায়ে গেছে যে শুধু দেশের উপরের অংশ বিক্রি করে খুশি হবে না!! পারলে নদী-সাগরের নীচের যা কিছু আছে সব বিক্রি করে দিবে!! কিন্তু চিন্তা করে দেখবে না যে এইটা দিয়ে কি করা যাবে দেশের জন্য।

পৃথিবীর অনেক দেশের এমন ভূমি ও পড়ে আছে যা বাংলাদেশের মতো দশটা হবে! কোন জনবসতি নেই!! পাহাড় আর ধূ ধূ বালুচর অথচ তারা কেন চিন্তা করে না বিক্রির? আমি এই বিষয়ে তেমন কিছু জানি না! শুধু এতটুকু-ই বুঝি প্রকৃতির দেয়া বালু কণা ও সেই সীমানার সম্পদ অতএব তা নিয়ে ছেলে খেলা না করে সেই সীমানা বা দেশের জন্য কি করা যায় তা নিয়ে চিন্তা করো। আমাদের দেশ এমনে-ই প্রকৃতির নির্মমতার শিকার ঝড় ,বন্যা লেগেই আছে। তার উপরে আছে নদী ভাঙ্গন যা পৃথিবীর আর কোন দেশে মনে হয় এমন নেই! রয়েছে বিশাল নীচু ভূমি অথচ নদ নদীর পলি মাটি সেই নীচু ভূমি উচু না করে রপ্তানী করা হবে!!!! আমি আমাদের প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করতে চাই যে... ১. নদী ভাঙ্গন কিভাবে প্রতিরোধ করা যায় সে বিষয়ে দেশের বিজ্ঞানীদের কাজে লাগান এবং দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহন করুন। ২. বাংলাদেশের নদ নদীতে জমে থাকা পলি মাটি কিভাবে দেশেরই নীচু ভূমি উচু করা যায় অথবা কিভাবে সেই পলি মাটি দিয়ে ভূমি বৃদ্ধি করা যায় সে চিন্তা করুন। রপ্তানীর চিন্তা না করে।

জানি সব-ই ব্যয় এবং প্রচুর সময়ের ব্যাপার। অপব্যয় কম করে সঠিক কাজে ব্যয় করুন। অন্তত শুরু করা তো প্রয়োজন..... এখন ঠিক মনে পড়তেছে না! তবে কয়েক বছর আগে পত্রিকায় একটা লেখা পড়ে ছিলাম.. বাংলাদেশের নদ নদীর পলি মাটি দিয়ে ভূমি বৃদ্ধি করা যাবে এমন কিছু। কারো সংগ্রহে সেই লেখাটি থাকলে পোষ্ট করতে পারেন। আর ব্লগার ভাই বোনদের কাছে আবেদন আপনারা যারা এই বিষয়ে ভালো জানেন তারা যেন কিছু না কিছু লিখেন।

টিপাইমুখ,তেল-গ্যাস,এশিয়ান হাইওয়ের নামে করিডোর, টিফা। এখন নতুন আরেকটা আবিস্কার হয়েছে!! পলি-মাটি রপ্তানী।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.