বাগানে এক আপেল গাছের নিচে বসেছিলেন এক বিজ্ঞানী। হঠাৎ হলো কি -একটা আপেল টুপ করে পড়লো সে বিজ্ঞানীর পায়ের কাছে। স্কুল পড়ুয়া কোন বাচ্চার সামনে এই গল্প বললে তারা চেচিয়ে উঠবে, নিউটন নিউটন!
গল্পটি সবার জানা। বিখ্যাত সেই আবিষ্কার, বিখ্যাত সেই বিজ্ঞানী। ওপরে যতটুকু বলা হলো, তা আসলে গল্পের প্রথম অর্ধেক।
দ্বিতীয় অংশে রয়েছে সেই গাছ এবং তার বেঁচে থাকার কাহিনী।
নিউটনের সেই আপেল গাছ :
নতুন করে পাওয়া তথ্য প্রমাণাদি এবং ১৮০ বছরের পুরনো স্কেচ বলছে, আজো বেঁচে আছে সেই আপেল গাছটি। এখন তার বয়স ৩৫৮ বছর প্রায়! গাছটির অবস্থান ইংল্যান্ডের লিংকনশায়ার উইলসথর্প ম্যানরে। নিউটন যে গাছটির কথা বলেছেন তা চিহ্নিত করতে গিয়ে অনেকগুলো গাছকেই নির্বাচিত করা হয়েছে। গ্রান্থামের কিংস স্কুলের দাবী অনুসারে গাছটি স্কুল কর্তপক্ষ কিনে নিয়েছিল।
কিনে নেয়ার পর গাছটি উপড়িয়ে ফেলে প্রধান শিক্ষকের বাগানে পুনরায় লাগানো হয়। বর্তমানে উল্সথর্প ম্যানরের দায়িত্বে থাকা ন্যাশনাল ট্রাস্ট এই দাবী মেনে নেয়নি। তাদের মতে ম্যানরের বাগানেই গাছটি রয়েছে। এই গাছের একটি বংশধর কেমব্রিজের ট্রিনিটি কলেজের প্রধান ফটকের পাশে বেড়ে উঠতে দেখা যায়। নিউটন ট্রিনিটি কলেজে অধ্যয়নকালে যে কক্ষে থাকতেন তার ঠিক নিচেই গাছটি অবস্থিত।
নিউটনের সেই আপেল গাছটির কাণ্ড থেকেই গজিয়েছে এই গাছটি। এখানকার মাটি খুঁড়ে বাস্তবিকভাবেই পাওয়া যায় একটি পুরাতন আপেল গাছের কাণ্ড। মাটির নিচের কাণ্ডের সেই অংশবিশেষের কার্বন পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে। এ থেকেই পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া গেছে এই গাছটির ব্যাপারে।
গাছটির ইতিকথা :
প্রায় ৩৫৮ বছরের ইতিহাস এ গাছের জন্য সুখকর ছিল না।
১৮২০ সালে প্রচণ্ড এক ঝড় প্রায় ধ্বংস করে দেয় গাছটিকে। গাছের অধিকাংশ ডাল ভেঙে পড়ে যায় মাটিতে। তাও সেই মাধ্যাকর্ষণ বলের কারণেই। পরে সেসব অংশবিশেষ পাঠানো হয় বিশ্বের বিখ্যাত সব ইউনিভার্সিটিতে। সেখান থেকে আবার গজানো হয় আপেল গাছ।
আর গাছের গোড়াটি থেকে যায় যথাস্থানেই। সেখান থেকেই জন্মায় নতুন পাতা, নতুন ডাল।
আপেল গাছ সাধারণত ১০০ বছর কিংবা তার চেয়ে বেশি কিছুদিন বাঁচে। সে হিসেবে এই গাছটি দীর্ঘ সময় বেঁচে ছিল। তবে কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটির বোটানিক্যাল গার্ডেনের পরিচালক প্রফেসর জন পার্কার বলেছেন, যদিও এই গাছটি যথেষ্ট লম্বা সময় ধরে বেঁচে রয়েছে, তবুও এটা একেবারে অস্বাভাবিক নয়।
সৃষ্ট বিতর্ক :
গাছটিকে ঘিরে অনেক বিতর্কেরও ডালপালা মেলেছে। শুনতে পাওয়া গেছে ভিন্ন ধরণের কথাবার্তাও। ভিন্ন ধারার এ কথা বলেছেন মাইকেল হোয়াইট। তার বিতর্কিত জীবনী গ্রন্থ দি লস্ট সরসারাব -এ তিনি বলেছেন , বিজ্ঞানের চেয়ে নিউটন বেশি আগ্রহী ছিলেন অতিপ্রাকৃত বিষয়ে। তিনি তার অ্যালকেমি সংক্রান্ত গবেষণাকে চাপা দেয়ার জন্যই আপেল গাছের গল্প তৈরি করেছিলেন।
-তথ্যসূত্রঃ দি সানডে টাইমস, উইকিপিডিয়া
আমি পেলাম(সূত্র):- আমার অনলাইন ডায়েরী।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।