ইদানিং খুব ঘাস খাই আর নির্বোধ গরু হয়ে উঠার স্বপ্ন দেখি,বঙদেশে গরুদের জন্য সব লক্ষীই হাত পেতে আছে । রাষ্ট্র ও সমাজযন্ত্র যখন সংকরিত গরুর গোয়াল ।
এখন সময় খুব প্যাচানো জালের মত মুক্তিচেতনাহীন। তাই বিভিন্ন আটকানো নি:শ্বাসে বাতাস ভারী,অসুস্থ। মনে হয় থ্রেশহোল্ড পেরিয়ে গেছি,ভেঙ্গে যাবো যে কোনোও সময়ে কেবল অপেক্ষায় আছ কখন ভাঙ্গবো।
আত্নহননে উত্সাহী মানুষরা সবসময়েই আত্নহননের সিদ্ধান্ত নেবার পর খুব আয়েশী হয়ে যায়। আত্নহননের কোনও চিন্তা মাথায় না আসলেও অস্তিত্বের প্রশ্ন (কেন দাড়িয়ে আছি বা কেনই দাড়িয়ে থাকব!)সব গুলো ধমনীর কপাটিকাতে আছড়ে পরে নিরন্তর জলোচ্ছাসের শক্তিতে,ক্রোধে। তাই মুখ লুকোতে হয় বালিশে অথবা প্রিয়ার কাম্য বুকে যদি কিছুটাও আলো আস্বাদনের সুযোগ ঘটে।
এইসব আকাশপাতাল বিভ্রান্তিকর চিন্তা করে আমি ভাঙ্গা,ফাটা,বিবর্ন ফুটপাথ দিয়ে হাটছিলাম। হাটার কোনোও কারন নেই কারন গন্তব্য হীন আমি।
একটা রিকশা নেব কি না ভাবছিলাম। দুর্দান্ত ঠান্ডা পড়েছে। আমার শীতের বোধ খুবই কম হওয়া সত্বেও(জবরজং vegitable দের যা হয়!)অস্থিমজ্জার ছন্দিত স্পন্দন শুনতে পাচ্ছিলাম। সময়টা সন্ধ্যা। ফুটপাথে ভাপাপিঠার ভাপে একরকম আনন্দের গন্ধ।
চিতই পিঠার সাথে আগ্নেয় ভর্তা। সামনেই একজোড়া(মানুষতো অবশ্যই,অথবা দেখায় মানবিক আকৃতির মতই,যে হারে অমানুষ উত্পাদন জরায়ু কারখানায় বাড়ছে,তাতে সাবধানতাই মূলমন্ত্র)ছেলেমানুষ আর মেয়েমানুষ চিতই পিঠার গোফদাড়িওয়ালা মামার নিকটে ক্রমাগত শীতের আইকন পিঠা সাটাচ্ছে। ঝালে ছেলেমানুষটার তেমন কিছু হয়েছে বলে মনে হয় না,কিন্তু মোটামুটি আকর্ষনীয় যৌবনজনিত খাজভাজ সম্মৃদ্ধ মেয়েমানুষটার অবস্থা তথৈবচ। চোখ থেকে কয়েকফোটা শোকতাপ হীন অশ্রু মুছে দিচ্ছে মুখের মেকআপস্তুপ। আমি ভাবলাম নীলাভ কষ্টক্ষরণের কি নিদারুন অপচয়।
কাদতে ভুলে গেছি কতকাল হল!মেয়েমানুষটার নীচের ঠোট যথেষ্ট আবেদনময়ী,কিন্তু সেটা তো ঐ পাহাড়ী গোত্রভুক্ত ছাগলের বংশধর ছেলেটা ,ফরাসী দাড়িওয়ালা,ঝালে কাবু না হওয়া ছেলেটার সম্পত্তি। (ছেলেটার সম্পত্তি!কি ভীষন পুরুষতান্ত্রিক বোধ!আমি নিজের মাঝে,মস্তিস্কের অন্ধ গলিতে লুকিয়ে থাকা পশ্চাতপদ রাক্ষসটাকে একটা জঘন্য গালি দিলাম)
ছেলেটার বিবর্তনজনিত পরিচয় নিয়ে সন্দেহ প্রকাশের কারন মেয়েমানুষটাকে পছন্দ হয়েছে,তাই ছেলেটাকে কতটুকু নিজের অহংবোধের দশটনী ট্রাকের নীচে ফেলে চিড়ে চ্যাপ্টা,থ্যাতলানো করা যায় সেটাই এখানে প্রাধান্য পাবে। আমিই যোগ্য পুরুষ!!
পাশে দাড়িয়ে পিঠা খাবার ছলে মেয়েমানুষটাকে আরেকটু দেখব কি না ভাবছিলাম। ঠিক তখনই ঐ মিসম্যাচজুটি(আমার মতানুসারে) পিঠাখাওয়ার রণে ভঙ্গ দিলো। একটা রিকশা ডাকলো।
ছেলেটা ডানপাশে বসলো,মেয়েটা বাম পাশে। ছেলেটা মেয়েটার হাত নিজের হাতে গুজে রাখলো,চোখে চোখ রাখলো আর রিকশার হুড তুলে দিয়ে কিছু তথাকথিত প্রাইভেসীর ব্যবস্থা করলো।
আর আমি কেনো আত্নহত্যা অযৈক্তিক তার পক্ষে কিছু শক্তিশালী যুক্তি মাথার মাঝে অন্ধ ভিখারীর মত হাতড়াতে লাগলাম।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।