পাকিস্তানে রাজনৈতিক নেত্রী হিসেবে বেনজির ভুট্টোর জনপ্রিয়তার মূল কারণ ছিল তার রূপ, শিক্ষা এবং মেধা। তার ব্যক্তিগত ক্যারিশমা ভুট্টো-কন্যার পরিচয়কেও ছাপিয়ে গিয়েছিল। অঙ্ফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে তাকে সম্মান জানাতে গিয়ে বলা হয়েছিল 'ডটার অব দি ইস্ট' বা প্রাচ্যকন্যা। বেনজিরের আত্মকথামূলক বইটির নামও 'ডটার অব দি ইস্ট'।
পাকিস্তানের এক অবস্থাপন্ন পরিবারে ১৯৫৩ সালের ২১ জুন বেনজির ভুট্টোর জন্ম হয়।
তার বাবা জুলফিকার আলী ভুট্টো পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) প্রতিষ্ঠাতা। বেনজির ভুট্টো হার্ভার্ড ও অঙ্ফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাজনীতির ওপর পড়াশোনা করেন। শিক্ষা শেষ করে ১৯৭৭ সালে দেশে ফেরেন। তার অল্পদিন পরই ক্ষমতা দখল করেন সেনা শাসক জিয়া উল হক। ১৯৭৭ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিয়াউল হক কর্তৃক তার পিতা ভুট্টোকে একটি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত করে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলিয়ে হত্যার পর তিনি পাকিস্তানের রাজনীতিতে পা রাখেন।
জিয়াউল সরকার তাকে বহুবার অন্তরীণ করেছিলেন। ১৯৮৪ সালে তিনি আবার লন্ডন চলে যান, তারপর দেশে ফেরত আসেন ১৯৮৬ সালে। সরকার বিরোধী আন্দোলনে বেনজির ভুট্টো জনমত গঠন করেন এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে জয়ী হয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। তবে ৬ আগস্ট ১৯৯০ সালে তিনি বরখাস্ত হন। পুনরায় ১৯৯৩ সালের নির্বাচনে তিনি জয়লাভ করেন ও দ্বিতীয়বারের মতো পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।
১৯৯৬ সালের ৬ নভেম্বর তাকে পুনরায় বরখাস্ত করা হয়। ১৯৯৭ সালে অনুষ্ঠিত পরের নির্বাচনে তিনি হেরে যান। এরপর সুইজারল্যান্ডের একটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে ১৯৯৯ সালে বেনজির ও তার স্বামী আসিফ আলী জারদারিকে পাঁচ বছরের জেল ও ৮৬ লাখ ডলার জরিমানা করেন পাকিস্তানের একটি আদালত। পরে উচ্চ আদালত এই রায়কে পক্ষপাতদুষ্ট হিসেবে রায় দেন। আট বছরের স্বেচ্ছা নির্বাসন কাটিয়ে ২০০৭ এর অক্টোবরে বেনজির পাকিস্তানে প্রত্যাবর্তন করেন।
২০০৭ সালের ২৭ ডিসেম্বর রাওয়ালপিন্ডির এক নির্বাচনী সমাবেশ শেষে সভাস্থল ত্যাগ করার পর গাড়িতে আরোহণের পর মুহূর্তে আত্মঘাতী হামলায় তিনি নিহত হন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।