.
আকাশটা আজ অনেক বিশাল। আকাশের বুকে মস্ত বড় একটা ইটের ভাটা। অনেকগুলো মেঘদল ছড়ানো ছিটানো।
একজন হাঁটু গেড়ে বসে পড়েছে, হাঁত বাঁধা পেছনে, পেটানো শরীর, মুখে চাপা ক্রোধ...আরেকজন দুহাত মেলে দিয়েছে দুপাশে--মুক্তির আশায়...
ঘাস ছিঁড়লাম, বালু উড়ালাম। ইটের ভাটা মাথায় রেখে ছবি তুললাম।
স্নানরতাদের সংকোচ এড়িয়ে গেলাম খামাখা একটা গল্প জুড়ে দিয়ে।
আমরা হাঁটতেই থাকলাম, হাঁটতেই থাকলাম...
তারপর আবার দুপাশের স্রোতে আঙুল বোলালাম। ঘোলা জলের লাজুক স্রোতে। সিমেন্টের বড় বড় ব্লকগুলোতে নৌকা ভিড়ল, আমাদের নৌকা, কচুরিপানার আয়োজন সেখানে। আমাদের দিকে নির্বাক তাকিয়ে রইল বিশাল আকাশ।
আকাশে তখন একটা বিকেল, একটা মস্ত বড় আকাশ, আর একটা ক্লান্তসূর্যাস্ত--একটা ব্রিজের ফাঁকে--নীচের জলে স্পষ্ট সন্ধ্যা, লালচে আলো। কিন্তু দেখলাম কেবল আমি একাই। একজন কিছুটা ভান করল। বাকিরা সবাই ধোঁয়াচ্ছন্ন।
হঠাৎ দেখায় মাটির দেয়াল লজ্জা পেল না! আমি লজ্জা পেলাম।
মনটা বিষণ্ণ হয়ে গেল। একটা স্নিগ্ধ সারল্য পরশ বুলিয়ে গেল আমার সবটুকু জুড়ে। আমি ভীষণ মুগ্ধ হলাম। মা'র মনে করিয়ে দেয়া 'লজ্জাবতী'র কথা আমার আর বলা হলো না। আমি বেমালুম ভুলে গেলাম।
মাটির দেয়ালের লজ্জা দেখে। খসে পড়া দেয়ালের কান্না শুনে। মশারির স্ট্যান্ড-এ ঝোলানো মলিন কাপড়গুলোও চোখ নামিয়ে রইল। এক কোনায় ধুলোপড়া বইয়ের তাকে এলোমেলো বইগুলোও চোখ এড়িয়ে গেল না। কিংবা মাটির মেঝেতে পা ঘষানোর শীতল অনুভূতি।
টুকটুকে লাল লজ্জাগুলো উড়ে উড়ে চলে গেল। কিচিরমিচির করতে লাগল আশেপাশেই। মাথার উপর গোছানো চুলের গোছা দুষ্টুমি করতে থাকল একটানা।
শাড়ির আঁচল এগিয়ে এলো ধীরপায়ে। এবং কোনো অনুযোগ ছাড়াই একটুকরো অজুহাত।
তারপর আঁধার চিরে এগিয়ে চলল আমাদের-দুচোখ। বৃষ্টি এলো না। একটু একটু সোঁদা গন্ধ এলো নাকে। ভেজা ভেজা। আজ প্রথম বারের মতো।
যদিও চমকে গিয়েছিলাম প্রথমে। ভূত দেখার মতো করে। তবু মোমবাতির আলো একটুও কাঁপল না।
বিষণ্ণতা চলে গিয়ে একটুকরো হাসি এলো মুখে। আমার খুব ভালো লাগল।
ফিরতে ফিরতে বৃষ্টি এলো। বা-হাতে ধরা ছাতা বেয়ে বেয়ে অমনি আমার জিন্স উঠে গেল হাঁটু পর্যন্ত, আর স্যান্ডেলজোড়া ডানহাতে। ভরদুপুরের পিচগলা রাস্তাটাকে ভীষণ নিরীহ মনে হলো বৃষ্টিভেজা স্পর্শ পেয়ে। অবাক বিস্মিত চোখজোড়াগুলোকে এড়িয়ে গেলাম। অনেকগুলো কেরোসিনকুপি দেখলাম দূরে সারি সারি।
পাশাপাশি অনেকগুলো হলুদ আলো। বৃষ্টিভেজা। মাছের বাজারের। এক পশলা বৃষ্টিবেলায় কুঁকড়ে যাওয়া মাছের বাজার।
কিন্তু রাস্তায় জমে যাওয়া জলগুলোর মন ভালো করে দিতে পারলাম না আমি...সারাদিনের ব্যস্ত ক্লান্ত বোবা ঘোলাজল...
২৬০৭০৯০১৪৭
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।