আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অজানায় অভিসার

কুড়াই প্রহরব্যেপে স্মৃতিলগ্ন ধূলি

এই শহরের ফালতু এসব ঝুট-ঝামেলা ব্যস্ততা আর ভাল্লাগে না একটুও আমার অল্প ক'দিন সবার কাছে আয় না দু'জন নিই গো ছুটি? ইচ্ছে মতো উড়াল দিয়ে বিজন কোনো সরোবরে গা ভিজিয়ে উল্টা-সিধা সাঁতার কাটি? দু'জনাতে হাত ধরে ওই কুয়াকাটার সাগরপাড়ে দিগন্তে সই দৃষ্টি মেলে ক্ষণিক হাঁটি? কক্সবাজারের ঝাউবাগানের পাশটি ঘেঁষে বালুর চরে আছড়ে পড়া ঢেউয়ের সাথে আহ্লাদে খাই লুটোপুটি... চল্ না ক'দিন কাটাই ছুটি? গাঁয়ের কোনো পথের ধারে কিংবা কোনো সখের মালির যত্নে গড়া ফুলবাগানে আমরা দু'টি যুগল কুসুম একটি একা বৃন্তে ফুটি বিরল সুখের উছল ছোঁয়ায় হই না হেসে কুটিকুটি? খা খা কোনো দুপুর বেলা মাঠের পারে সবুজ পাতার প্রাচীন বটের শাখার পরে টং বানিয়ে দখিন হাওয়ায় গা এলিয়ে মুখোমুখি প্রাণ খুলে সই গল্প-কথায় কুসুম কুসুম খুনসুটিতে দিন গড়িয়ে বিকেল আসুক সন্ধ্যা নামুক আমরা তবু চোখের ভেতর চোখ চুবিয়ে মগ্ন রবো পুণ্যতোয়া প্রাণের স্নানে চমক ভেঙে চোখ ফেরাবো কিচির-মিচির নীড়ে ফেরা মুখচেনা সব পাখির গানে। তুই না ইতু? বেজায় ভীতু। কিংবা তোকে বলতে পারি সত্যিকারের লম্বা মতোন নাদুস-নুদুস ভীতুর সে ডিম অলীক ভয়ে নিজের ভেতর নিজেই কি-না যাস হয়ে হিম। এই সমাজের মরচে পড়া জীর্ণ শতো শাসন-বারণ তার যে হাজার ফসকা গেরো হৃদয়টাকে খামচে থাকা দ্বিধা এবং আড়ষ্টতার আঁকশি ক'টা যাক না উড়ে তুড়ির তোড়ে আর কতোদিন সংস্কারের গ্যাঁড়াকলে নিজের গড়া কাঠগড়াতে দাঁড়িয়ে নিজে হাকিম সেজে এজলাসে ফের নিজকে নিজে করবি জেরা? চলবে কতো এমনি করে ঘুরে-ফিরে নিত্য একই বৃত্তে ফেরা? তুলবি নিজে চতুর্দিকে বাধার প্রাচীর থাকবি তাতে বন্দী হয়ে কাঁদবি আবার অঝোর ধারায় নীরবে তুই কষ্ট সয়ে? পূর্ণিমার ওই পূর্ণ-শশী আজকে যদি ভর-জোয়ারে উছলে উঠে শুষ্ক নদী জল থেকে তুই বাঁচিয়ে শরীর তবু কিরে থাকবি বসে সেই সে অসার করুণ তীরে? ওই যে সখি ডাকছে সাগর আকুল হয়ে আয় দু'জনে অকূল জলে ভাসান ভাসাই অবাধ স্বাধীন তরঙ্গে আজ মুক্ত প্রাণের বাওটা ওড়াই অমিয় সেই কাঙ্ক্ষিত সুখ আস্বাদনে তুরীয় এক বাসর সাজাই সীমার বাঁধন তুচ্ছ করে যত্তোটুকু সাধ্যে কুলায় উপচে পড়া পুলক পিয়ে ব্রহ্মনাদে শঙ্খ বাজাই। আচ্ছ দেখি বলতো আমায় দু’জন মিলে ছোট্ট কোনো ডিঙি চড়ে কেমন হবে জ্যোৎস্নারাতে চাঁদে পাওয়া, আউলা-ভোলা-হারিয়ে গেলে চলনবিলে? তেমন কোনো স্বপ্ন কি তোর মনের ভেতর হঠাৎ হঠাৎ নড়ে-চড়ে? দেয় কি উঁকি জলের পিঠে জীয়ল মাছের ঘাইয়ের ছলে? কিংবা কি পাস দেখতে হঠাৎ একটুখানি ঝিলিক কি তার বেখেয়ালে ফসকে পড়া একফোঁটা ভুল চোখের জলে? চল্ দু'জনে আজকে না হয় এই গোধূলির আবছায়াতে আলিঙ্গনের পাগলা দোলায় যাই গড়িয়ে মাড়াই করা সদ্য তোলা ধানের খড়ে? এই শহরের কলুষ মাখা কালো ধোঁয়ায় পিঁপড়ে মতোন লোকের ভিড়ে আর কতো বল ঊর্ধ্বশ্বাসে ছুটবো মিছে ক্লান্তি বয়ে শ্রান্তি সয়ে স্বস্তি নামের নাস্তি মরীচিকার পিছে? এই জগতের কোথাও কি নাই তোর আর আমার একটুকু ঠাঁই যেখানটাতে শরণ নিয়ে ভুল করে হোক ভাববো দু'জন সেই সে আদিম আদম-হাওয়া? এতোই কৃপণ এই পৃথিবী মিটবে না এই একটু চাওয়া! আর পারি না রুটিন মতো খাটতে টানা ভুতের বেগার সব তো লাগে মিছেই কেবল কী আছে এর সারাৎসার? কাজের চাপে কাজের ভারে উঠছে কেবল নাভিশ্বাস জীবনযাপন করতে গিয়ে সইছে না আর নরকবাস। আয় লো সখি আয় দিন যে বয়ে যায় এই বাড়ালাম চরণ আমার আয় না পায়ে পা'য়।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।