আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পাদুকা কাহিনী (সত্য ঘটনা অবলম্বনে রচিত)

সাধারণ মানুষ

অদ্য প্রাতঃকালে পাদুকার গোড়ালি খসিয়া গিয়া দিবসে শুভ সূচনা হইল তাও যদি হঠাৎ করিয়া নির্জনে খসিয়া পড়িত। আপিসে খুশিমনে প্রবেশ করিব এমন সময়ে প্রহরীর সামনে বাম জুতার তলাখানি খসিয়া পড়িল কোনমতে তলাখানি হতে নিয়া লিফটের দিকে দৌড় দিলাম, ভাগ্য সুপ্রসন্ন বলিয়া লিফটে আমি ভিন্ন আর কেউ ছিল না আপিসে প্রবেশ করিয়াই স্ট্যাপলার দেখিয়া মাথায় ১০০ ওয়াটের বাতি জ্বলিয়া উঠিল। ভাগ্য বিরীপ উহাতে গুলি মানে পিন নাই। কষ্ট করিয়া স্ট্যাপলারের পিন জোগাড় করিলাম, তাহার পর জুতার সাথে দিলাম স্টাপল করিয়া। কিন্টু সুখ বেশিক্ষণ স্থায়ী হইল না, আবার খুলিয়া পড়িল আমি এইবার ডাবল পিন মারিলাম, কিন্তু কপাল আবার খুলিয়া পড়িল।

এইবার স্কচটেপের শরণাপন্ন হইলাম, গোড়ালির দুপাশে টেপ লাগাইয়া মূল জুতার সাথে আটকাইয়া দিলাম। এক বড়ভাই দেখিয়া মন্তব্য ছাড়িলেন, "কেন বাপু বৃথাই মুচির অর্থনাশ করিতেছ, গিয়া ডক্তার দেখাও না কেন?" যাই হোক এবার টেপ পায়ে বিপুল উৎসাহে ঘুরিতে লাগিলাম, দুপুরে যখন সহকর্মীদের সাথে খাইতে যাব, তখন হাঁটিতে হাঁটিতে আবার আমার পাদুকার গোড়ালি বিশ্বাসঘাতকতা করিল কি আর করা লজ্জার মাথা খাইয়া অন্যদের সামনে রিক্সায় আরোহন করিলাম, লাজুক হাসি দিয়া বলিলাম, আমার জুতা আরকি ফিরিয়া আসিবার পর আরেক সহকর্মী আগাইয়া আসিলেন; শুধিলেন, "গোড়ালিতে ব্যাথা বুঝি?" "না, ভাই আমার জুতার গোড়ালিতে ব্যাথা" ভাবিয়াছিলাম কোন মতে বাসায় গিয়া আপৎকালীন জুতার আশ্রয় নিব। অনিবার্য কারণে, বাসার আগে আরেক জায়গায় যাইতে হইল, তাই অক্ষয় কোপানীর দোকান (মানে বাটা র দোকান) এ ছুটিলাম। আগে বাটা ছিল দেশ ও দশের জুতার দোকান। মূল্য দেখিয়া আমার চক্ষু বিস্ফোরিত হইল।

একি দেখিতেছি, ৫০০০টাকা, ৬৯০০ টাকা এমনকি ৮০০০ টাকার জুতা শোভা পাইতেছে বাটার দোকানে। পরে বুঝিলাম এইগুলা বিদেশি। যাইহোক, অবশেষে, ১৮০০ টাকা ব্যয় করিয়া একজোড়া জুতা কিনিয়া, ঐজোড়া পরিধান করিয়া নাচিতে নাচিতে বাহির হইয়া গেলাম। ( সুখে না দুঃখে নাচিতে ছিলাম জানি না) এইবার চুপি চুপি আগের পাদুকার কাহিনী খানিকটা বলি: দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ() শপিং সেন্টারের একটি দোকান হইতে ডিসকাউন্টে মাত্র ৫৫০টাকায় উহা খরিদ করিয়াছিলাম। তখন অনেকে বলিয়াছিলেন, "সস্তার তিন অবস্থা।

" আজ তৃতীয় অবস্থার শেষটি কিরূপ তাহার স্বাদ পাইলাম। সবাইকে শুভেচ্ছা।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.