আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একটি মৃত্যুকে সামনে দেখে…



তখন কতটুকুই বা বুঝি । সদ্য চৌদ্দে পা দেয়া কিশোর । বুকের নিভৃতে জমাট বাঁধা আশাগুলোর রঙচঙে বুননে ধীরে ধীরে গড়ে উঠছে মনন আর চিন্তার আকাশ । তখনই প্রথম পরিচয় । সুরের ভূবনে চেনাজানা বৃত্তের বাইরে এক নবরূপ যেন ।

আমি, মেঘনা পাড়ের খোলা জমিনে বেড়ে উঠা কিশোর এক, অসুখি বাস্তবতার বাইরে একটু শান্তির পরশ পেতে বারবার ছুটে গেছি । কত গল্প শুনেছি, ছবি এঁকেছি আর ভেবেছি একদিন আমিও রাঙিয়ে দিব বিশাল জমিন, উদার আকাশ । স্বপ্ন বুননের দিনগুলো ঝরে যায় অকস্মাৎ, হঠাৎ । সত্যি বলতে কি, প্রথম কোথায় দেখেছি মনে নেই আজ । আসলে এত দেখা,কথা, আলাপচারিতার ভেতরে প্রথম দেখাটা যে একদিন আলাদা কোন গুরুত্ব নিয়ে হাজির হবে ভাবিনি কখনো ।

আর শেষ কবে দেখা হয়েছিল ? তাও, বিশ্বাস কর, মনে করতে পারছিনা আজ । আমার মনে শুধু একটাই চিন্তার ঝড় । তোমার একটা ইচ্ছে পূরণ করতে পারিনি । কিন্তু দেখো, ঠিকই আমি বাস্তব করে দেব তা । আমার যা সামর্থ, মেধা আর যোগ্যতা সবকিছু নিঙড়ে হলেও ওটা যে আমাকে করতেই হবে ! সারাজীবন নিঃস্বার্থ ব্রত নিয়ে যা করে গেছ, বিনিময়ে নয়, শ্রদ্ধায় এবং সম্মানে এতটুকু তো পেতেই পার তুমি !শুধু কিছু সময় ।

প্রভু ! আরো কিছু দিন বাঁচিয়ে রাখ তাকে । হাসপাতালের বেডে শুয়ে থাকা কতটা যন্ত্রনার – জেনেছি বহু আগেই । কিন্তু নিশ্চিত মৃত্যুকে সামনে দেখে এভাবে অপেক্ষা তো কখনো করিনি আমি । কিভাবে বুঝবো তা কতটা যন্ত্রনা কিংবা আনন্দের !আজ যখন তোমাকে নিয়ে কথা বলছিলাম, বিশ্বাস কর, চোখের পানি লুকাতে কষ্ট হচ্ছিল । অথচ দেখ, এখনো দেখতে যাইনি আমি।

শুধু চারপাশ থেকে খবর আসছে – শুনে যাচ্ছি । বুকে কষ্টরা ডালপালা মেলছে, সময় নয়, অন্য এক অপরাধবোধ আমাকে কুঁকড়ে রাখে অনুক্ষণ । কিভাবে দেখাবো মুখ ? আমার ভীরুতা, লজ্জা আর অপরাধবোধের অপরপিঠে যদি তৈরি হয় নতুন কোন মহৎ শিল্পকর্ম -তবেই হয়তো দেখাবো এ মুখ । নতুবা ? ব্যর্থ, হতাশ এক উত্তরাধিকারীর মুখ কি শেষ বেলায় দেখতে চাইবে তুমি ? তুমিতো দিয়েছো সব । আমি দিয়েছি কতটুকু ?


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.