আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্বাধীনতায় হাত দিবি না, চিবিয়ে খাব

First I do then I think what I should do...... শাহবাগের আন্দোলন নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই শাহবাগ সহ সারা দেশ উত্তাল। শুধু তাই নয় সারা বিশ্বেও আজ গণজাগরনের জোয়ার। দেশের আপামর জনসাধারণ এর পক্ষে থাকলেও কিছু মানুষের রয়েছে বিরূপ মন্তব্য। তারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চায় কিনা জানিনা, তবে বিচার তাদের হতেই হবে। সাংবাদিকতা আর বাবার বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসার সুবাদে প্রায় প্রতিদিনই শাহবাগ যেতে হচ্ছে।

২৪ ঘন্টা তারুণ্যের উদ্দামতা দেখে নিজেকে ঠিক রাখতে পারিনা, ছুটে যাই সমাবেশে। প্রতিটা শ্লোগান যেন প্রতিটা মর্টারশেল। গায়ের লোম দাঁড়িয়ে যায়, যখন দেখি ষাটোর্দ্ধ বৃদ্ধরাও এই আন্দোলনে। গত পরশুদিন একজন লোক বললেন, সরকারের ভাড়া করা কিছু বিপথগামী ছোকড়ারা রাস্তা আটকিয়ে নাটক জুড়ে দিয়েছে। আমি আপনাদের গালি দিব না, শুধু কিছু কথা জিজ্ঞাসা করতে চাই, যেসব গুলিবিদ্ধ মুক্তিযোদ্ধারা রাস্তায় বসে, না খেয়ে পড়ে আছে তারা কি ভাড়া করা? তাদের বুকে, পিঠে গুলির চিহ্ণ কি ভাড়া করা? তরুণ প্রজন্ম যারা ছাত্র রাজনীতির ধার ধারেনা তারা কি ভাড়া করা? জবাব দিন, জবাব চাই।

আজ অফিস থেকে ফেরার পথে শান্তিনগর মোড় থেকে রিকশা নিই। আমি তখনও বুঝতে পারিনি রিকশাচালক একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ২ নং সেক্টওে সম্মুখ যুদ্ধ করেন। তার সাথে কথা হল বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে। তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন আজ শিবিরের তান্ডব নিয়ে।

আমি তাকে বললাম কোথায় কোথায় হামলা হয়েছে। তিনি আমাকে বললেন, আমরা যুদ্ধ করে সম্বল এই তিন চাকা আর যারা আমার ভাইদের পুড়াইয়া মারল তারা হয় নেতা। বলে কিছুক্ষণ চুপ করে রইলেন তিনি, কিছুক্ষণ পর দেখলাম চোখ মুছলেন। বুঝলাম তিনি কাঁদছেন। উনাকে স্বান্তনা দেয়ার জন্য বললাম দেশ আজও স্বাধীন হয় নাই, আমরা স্বাধীন করব।

তিনি বললেন, শেখ মুজিব বেঁচে থাকলে আজ এই অবস্থা হত না। আমি বললাম কিভাবে? উনি বললেন, শেখ মুজিব থাকলে ৮৫ এর আগেই এই রাজাকারদের বিচার হত। এখন মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পাই তিন হাজার টাকা, উনি থাকলে আমরা রিকশা চালাইতে হত না। কথা বলতে বলতে গন্তব্যস্থলে চলে আসি। উনাকে ভাড়া দিতে যেয়ে আমার হাত কাঁপছিল।

একজন মুক্তিযোদ্ধা, যার কারণে আজ আমি মুক্ত বাতাসে, তাকে ভাড়া দিতে যেয়ে লজ্জায়, ক্ষোভে মাথা নিচু হয়ে আসছিল। শেষ পর্যন্ত নিজের আবেগকে ধরে রাখতে না পেরে তাকে জড়িয়ে ধরলাম। রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা কিছু পুলিশের একজন বুঝতে পেরে এগিয়ে এসে আমাদের সাথে হাত মেলালেন। একজন যুদ্ধফেরত সৈনিকের বুকে নিজের বুক রেখে চোখ ভিজে এল। তাকে বললাম, এ দেশ স্বাধীন হবে।

শুধু ৭১ এ রাজাকারেরা না, বর্তমানের আধুনিক রাজাকারসহ সবাইকে হার মানতে হবে, এটা বীরের দেশ, কাপুরুষের দেশ না। আর যারা ঘরের বারান্দায় বসে, পত্রিকা হাতে নিয়ে আন্দোলনকারীদের গালি দেয়, তাদের বলি, ৫২ তে কেউ ভাড়া করে নাই, ৭১ এ করে নাই আর আজ ২০১৩ তে করার সাহস নাই। বাঙালীর জন্ম আন্দোলনে, বাঙালী বাঁচে আন্দোলনে। কোটি বাঙালীর গর্জন শুন ঐ- স্বাধীনতায় হাত দিবি না, চিবিয়ে খাব। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.