সিনেমা অনেক দেখি। প্রচুর ডিভিডি কিনি। প্রায় সব রকম সিনেমার অলিগলিতে আমার যাতায়াত। তাও কিছু pattern (বা Genre) আমাকে আলাদা করে টানে। আমার সব থেকে বেশী কালেকশন হচ্ছে আ্যানিমেশন আর সাইকো/ভয়ের সিনেমার।
আমার কাছে এই সম্পূর্ন বিপরীতমুখী দু'টো পছন্দের কোনো ব্যাখা নেই। দু ধরনের সিনেমাই আমার সমান ভালো লাগে। তাই ভাবছি আমার দেখা কিছু সিনেমার কথা আপনার সাথে ভাগ করে নি। আসলে আমার একটা পাকাপাকি ব্যবস্থার দোকানদার আছে। ও সিনেমা নিয়ে এসে আমায় দেয়।
তাই বেশীর ভাগ সিনেমাই আমি আগে থেকে তার ব্যাপারে কিছু না জেনে দেখি।
সেরকমই দুটি সিনেমা হলো Hostel I আর Hostel II।
দুটো সিনেমা না দেখলে মোটিভ টা বোঝা মুশকিল। আপনারা অনেকেই হয়ত দুটো সিনেমাই দেখেছেন। তাও গল্পটা ছোট্ট করে বলার লোভ সামলাতে পারছিনা।
কয়েক জন আমেরিকান ছোকরা ইউরোপ ঘুরতে বেড়িয়ে এসে পড়ে আমস্টারডামে। সেখান এক রাশিয়ান তাদেরকে বলে স্লোভাকিয়ায় যেতে।
সেখানে একটা হস্টেলে নাকি প্রচুর মেয়ে পাওয়া যায় যারা আমেরিকান দেখলেই গলে যায়। লোভী বালক কূল চলে যায় সেই হস্টেলে। তার পর তাদের মধ্যে থেকে লোক উধাও হতে থাকে।
আসলে একটা সক্রিয় দল ছিল যারা লোকেদেরকে অপহরন করে নিয়ে এসে একটা পুরনো কেল্লায় আটকে রাখত।
তারপর তাদের বিবরন আর ছবি দিয়ে mail/mms পাঠাত ক্লায়েন্টদেরকে।
ক্লায়েন্টরা বিড করত অপহৃতদের ওপরে। যে অকশনে জিতত' তাকে নিয়ে আসা হত ঐ কেল্লাতে। একটা ঘরে সেই অপহৃতকে বন্দী করে রাখা হত।
আর ঐ ঘরে ভরে দেওয়া হত ক্লায়েন্টের পছন্দের জিনিসপত্রে। ক্লায়েন্ট ঐ সব জিনিস দিয়ে বন্দীকে খুন করবে। যতটা সম্ভব কষ্ট দিয়ে। কিন্তু শর্ত একটাই। না মেরে যদি কোনো ক্লায়েন্ট ঘর থেকে বেড়িয়ে আসে তাহলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে জ্যান্ত,ক্ষুধার্ত কুকুরদের মুখে।
মনে পড়েছে! যারা এই দলের সদস্য, তারা পরিচিত হতেন একটি স্থায়ী ট্যাটুর মাধ্যমে,যাতে খোদাই করা থাকত দলের নাম - "এলিট হান্টার্স"!!!
মোটামুটি এটাই ঘটনা। তবে কয়েকটি হত্যার দৃশ্য রীতিমত শিঁড়দাঁড়ার লোম দাঁড় করিয়ে দেয়। এক দুটো লেখার চেষ্টা করছি।
১.একটি বৃদ্ধ ক্লায়েন্ট তার বন্দীকে জানায় যে তার সখ ছিল মেডিক্যাল সার্জেন হওয়ার। সে তার এই অপূর্ন সখ মেটাতে চায় ঐ ছেলেটির মৃত্যুর মাধ্যমে।
তার জন্য সে ছেলেটির গোড়ালির রগ কেটে দিয়ে ওর হাত খুলে দেয়। ছেলেটি স্বভাবতই চেষ্টা করে পালাতে,কিন্তু রগ কাটা থাকার কারনে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। তারপর তাকে লোকটি ঠান্ডা মাথায় খুন করে।
২.একটি মেয়েকে অপহরন করা হয়। তারপর তাকে নগ্ন করে হাত,পা,মুখ বেঁধে একটি ঘরে উল্টো করে ঝুলিয়ে রাখা হয়।
তার ঠিক নীচে রাখা থাকে একটি শুকনো বাথটাব,যার ধারে ধারে লাগানো রয়েছে মোমবাতি। দুটি লোক অক্সিআ্যসিটিলিন দিয়ে মোমবাতিগুলো জ্বালিয়ে দিয়ে ঘর থেকে বেড়িয়ে যায়। তার পর ঘরে ঢোকেন একটি মাঝবয়সী মহিলা,গায়ে বাথরোব জড়িয়ে। তিনি বাথরোবটা খুলে শুয়ে পড়েন বাথটাবে। পাশ থেকে তুলে নেন একটি দীর্ঘ,সুঁচালো কুড়ুল।
চিড়তে থাকেন ঝুলতে থাকা মেয়েটির উন্মুক্ত পিঠ। রক্ত ঝড়তে থাকে ধারায়। তার পর ঐ কুড়ুলের সাহায্যেই ছিঁড়ে দেন মেয়েটার মুকের ফেট্টি। মেয়েটি চেচাঁতে থাকে। কিন্তু বেশীক্ষন চলে না তার আকুতি।
কুড়ুলের আরেক নির্মম ঝটকায় কাটা যায় মেয়েটির গলা। ফিনকি দিয়ে বেড়িয়ে আসে রক্ত। রক্তের ফোঁটা নিভিয়ে দেয় কিছু কাঁপা কাঁপা জ্বলতে থাকা মোমবাতির শিখাকে। বাথটাবে শোয়া মহিলাটি স্নান করতে থাকেন সেই রক্তের ঝর্নায়!
প্রতিটি হত্যার দৃশ্যই রোমহর্ষক। আর লিখতে ভাল লাগছে না,তাই দুটো বিবরনে সীমিত থাকুক।
এই ফাঁকে কয়েকটা শুকনো তথ্য দিয়ে দি -
সর্বত্র সিনেমা দুটোই এডাল্ট দের জন্য মুক্তি পায়।
ইউ কে তে এটি extreme pornography বলে ঘোষিত হ্য়।
ঐ মহিলার রক্তস্নানের দৃশ্যটি ১৬শ শতাব্দীর সিরিয়াল কিলার Elizabeth Báthory র আদলে করা হয়েছে। (এখানে বিস্তারিত পাওয়া যাবে -
http://www.abacom.com/~jkrause/bathory.html)
Hostel I ২০০৬ সালে Empire Award for Best Horror Film পায়।
আজ তাহলে এটুকুই থাক।
আবার কাল লেখা যাবে।
ভালো থাকবেন সবাই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।