আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আত্ম উন্নয়ন প্রক্রিয়া (পর্ব - ২)

এলোমেলো ভাবনা সারাক্ষণ মনকে আচ্ছন্ন করে রাখে

পারসোনালিটি এবং ক্যারেক্টার: মানুষের চরিত্র পরিবর্তন করা যায় না। কিন্তু ব্যক্তিত্ব পরিবর্তন করা যায় । একজন ব্যাক্তি কি করতে বা বলতে চায় তা তার প্রকাশের ধরণের মাধ্যমে বোঝা যায় । একই ব্যাক্তি বিভিন্ন মানুষের সাথে বিভিন্ন ধরনের আচরণ করতে পারে । কোন ব্যাক্তি কেমন হবে তা তার আচরণ দেখে নির্ণয় করা যায় ।

.. ‌‌পারসোনালিটি ইজ ব্রাশিং গোল্ড বাট ক্যারেক্টার ইজ এ পিচ অফ কয়েল'। এটাই বাস্তবতা। কয়লা যতই ধোয়া যাক না কেন তা কয়লাই থাকে । এটা পরিবর্তন হয় না । কার মধ্যে কতটা রিয়ালিটি আছে তা দেখতে হলে আগে নিজের মনকে প্রশ্ন করতে হবে ।

ভাল কিছু বিচার করতে মনই প্রধান হাতিয়ার হিসেবে কাজ করে। মানুষের বাহ্যিক আচরণ দিয়ে মানুষকে চেনা যায় না । তা অনেক েেত্র মুখোস হিসেবে কাজ করে। চক চক করলেই সোনা হয় না । আমরা উন্নয়ন কর্মী , তাই আমরা মানুষকে গভীরভাবে পর্যবেণ করব , আর এর মধ্যে দিয়ে বোঝা যাবে যে সে আসলেই উন্নয়ন এর পে কাজ করবে - না উন্নয়নের বিপে কাজ করবে ,তার চিন্তচেতনা দ্বারা আসলেই অন্যান্যরা উপকৃত হবে কিনা ।

এক্সপ্রেশন অফ চেঞ্জঃ কোন ঘটনা দেখার /শোণার সময়/পরবর্তীতে নিম্নোক্ত েেত্র ব্যাক্তির অনুভূতির পরিবর্তন ল্য করা যায় । ফেস (মুখমন্ডল): কোন কিছু দেখা বা শোনার পরে প্রথমত মানুষের পরিবর্তন আসে মুখে। ব্যাক্তির মুখমন্ডলে আত্ম বিশ্বাস ,অবিশ্বাস ,ভয় ইত্যাদি ফুটে উঠে। গেস্চার (অঙ্গভঙ্গি): মুখে পরিবর্তন আসার পর হাত ,পা অর্থাৎ সারা শরীরে পরিবর্তন ল্য করা যায়। পস্চার (ভাবভঙ্গি): তার আচার, আচরন, প্রকাশে পরিবর্তন ল্য করা যায় ।

ফিজিওলোজিক্যাল (দৈহিক ): সারা শরীরে পরিবর্তন ল্য করা যায় । ভোকাবোলারি: বলা , লেখা ,পড়া ,বাক্য বিন্যাসে পরিবর্তন ল্য করা যায় । বিহেভিয়ার ঃ বিহেভিয়ার তিন ধরনের । যথা : ১. প্যারেন্টাল বিহেভিয়ার (অভিভাবক সুলভ আচরণ): পেরেন্ট দুই ধরনের । যথা : ক্রিটিক্যাল পেরেন্ট : রাগ ,ভয়,শাসন,আদেশ , নির্দেশ ,অভিযোগ ইত্যাদির মধ্যে শিশুকে বড় করা হয় নার্সিং পেরেন্ট : স্নহ,মায়া মমতা, ভালবাসা ,বিবেচনা করে কাজ করা,স্বাধীন ভাবে চিন্তা করার সুযোগ দেয়া ইত্যাদির মধ্যে শিশুকে বড় করা হয় ২. এ্যাডাল্ট বিহেভিয়ার (প্রাপ্ত বয়স্ক আচরণ): এরা বিশ্লেষণাত্মক হয় ।

তারা বিচার বিবেচনা করে কাজ করে । ৩. চাইল্ড বিহেভিয়ার (শিশু সুলভ আচরণ): চাইল্ড দুই ধরনের । যথা : - এ্যাডাপ্টেড চাইল্ড : আদেশ ,নির্দেশ এর মধ্যে বড় হয়। এছাড়া তারা নির্দিষ্ট গন্ডির মধ্যে থাকে । যেমন ,শহরের শিশুরা প্রকৃতির ছোঁয়া পায় না ।

তারা বেশির ভাগ ঘরের মধ্যে থাকে । লেখা পড়াও মা বাবার ইচ্ছামত করতে হয় । লেখা পড়া, নাচ ,গান ,ছবি আঁকা ইত্যাদি বিষয়ে একই সাথে শিশুকে পারদর্শী করতে চেষ্টা করা হয়। এতে শিশুর মনের উপর চাপ পড়ে । তাদের স্বাভাবিক বিকাশ ঘটে না ।

তারা নির্ভরর্শীল হয় এবং যখন বড় হয় তখন অন্যের উপর বীত শ্রদ্ধা একটা ভাব পরিলতি হয় । এরা বেশির ভাগ একান্নবর্তী পরিবারে বড় হয় অর্থাৎ যে শিশু কৃত্রিম পরিবেশের মধ্যে বড় করে তোলা হয় তাকে আমরা এ্যাডাপ্টেড চাইল্ড বলি। - নার্সিং চাইল্ড : তাদের আদর ,স্নেহ ,ভালবাসা ইত্যাদির মধ্যে বড় করা হয় । তাদের সাথে স্বাভাবিক আচরন করা হয় । তাদের স্বাধীনভাবে বেড়ে উঠতে দেয়া হয় ।

শিশুদের যৌথ পরিবারে বড় নাির্সং করা হলে তাদের মানসিক বিকাশ ঘটে এবং অন্যের প্রতি দয়া ,মায়া মমতা ,ভালবাসা ,সহযোগিতা,ইত্যাদি থাকে। তারা প্রাকৃতিক ভাবে বড় হয়ে থাকে । ফলে তারা বিবেচক হয় এবং যে কোন ঘটনার বিচার বিশ্লেষণ করতে পারে অর্থাৎ যে শিশু স্বাভাবিক পরিবেশের মধ্যে বড় করে তোলা হয় তাকে আমরা নার্সিং চাইল্ড বলি । একটা শিশুকে জন্মের পর স্বাধীনভাবে চিন্তা করার এবং বাড়তে সুযোগ দিতে হবে । বাবা মা যদি শিশুর সব কাজ করে দেয় তাহলে সে শিশু নির্ভরশীল হয় ।

শিশুর সব কিছুকে বাধা দেয়া যাবে না । এতে শিশু মেনে নিলেও মনে নেবে না । ফলে তার বিকশিত হওয়ার সুযোগ বাধাগ্রস্থ হবে । একজন ব্যাক্তির মধ্যে অভিভাবক,প্রাপ্তবয়স্ক এবং শিশুসুলভ এই তিন ধরনের আচরণ থাকতে পারে । সময়ের ব্যবধানে তার প্রকাশ ঘটে ।

সমাজের তিন ধরনের লোকদের আচরণ দেখা যায়। যা নিম্নরূপ : পেরেন্টাল বিহেভিয়ার / অভিভাবকসুলভ ব্যাবহার ঃ ১. পারতপে দোষ স্বীকার করতে অভ্যস্ত নন ২. অন্যের থেকে নিজেকে বড় প্রমানেই শান্তি খোঁজে ৩. অন্যের থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে চায় ৪. অন্যকে উপদেশ দিয়ে শান্তি পায় , তা যুক্তিযুক্ত হোক আর না হোক ৫. সিদ্ধানত দিতে পারলে তৃপ্তি পান ৬. অন্যের প্রতি অভিভাবকত্ব প্রদর্শণে ব্যাস্ত থাকেন ৭. পুরাতনকে আকড়ে ধরেন , নতুনকে গ্রহণ করতে দ্বিধা করেন ৮. অন্যের দোষ খোঁজা ও তা নিয়ে আলোচনায় মজা পান ৯. কথাবার্তায় অন্যকে নিয়ন্ত্রন করতে চান ১০. অভিভাবকত্বের দাবীতে স্নেহ বর্ষণ করতে পছন্দ করেন এ্যাডাল্ট বিহেভিয়ার ঃ ১. যুক্তি পছন্দ করেন এবং অযৌক্তিক কোন সিদ্ধান্ত নেন না ২. কারো আবদারে যুক্তি থাকলে মেনে নেন বা মেনে নেয়ার চেষ্টা করেন ৩. পুরাতনকে আকড়ে থাকতে চান না ,পরিবর্তন প্রিয় ৪. যে কোন ঘটনার কারণ বিশ্লেষণ করতে পছন্দ করেন ৫. মেপে মেপে সুচিন্তিত কথা বলেন ৬. আবেগকে তেমন পাত্তা দেন না ৭. কোন কাজ করার আগে ভাল মন্দ বিচার করেন ৮. কোন কাজ বাস্তবায়নের আগে যৌক্তিকতা বিচার করেন ৯. সম্ভাব্যতা নিয়ে ভাবেন চাইল্ড বিহেভিয়ার / শিশুসুলভ ব্যবহার ঃ: ১. ভিতরে বেদনা ধরে রাখতে পারেন না , অবলীলায় প্রকাশে শান্তি পান ২. সব কিছুতে উৎসুক ভাব দেখান ৩. প্রতিক্রিয়া / প্রতিবাদ করেন ৪. সব কাজের সাথে সাথেই ধন্যবাদ পেতে পছন্দ করেন ৫. সব কিছুতে অন্যের উপর নির্ভর করে কাজ করে ৬. স্নেহ পেতে পছন্দ করে ৭. চলনে - বলনে শিশুসুলভ স্বত:স্ফুর্ত মনে হয় ৮. নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস কম । একা কিছু করতে ভরসা পান না ৯.অল্পেই আবেগ প্রবণ হয়ে ওঠেন (.............................. চলবে...............)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।