আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যে দেশটি কেবল অবহেলার

জীবন বুনে স্বপ্ন বানাই মানবজমিনে অনেক চাষ চাই

কিছুক্ষণ আগে আর টিভিতে নিউজ দেখছিলাম। অগ্নিঝরা মার্চ উপলক্ষে একটা নিউজের পরেই শুরু হল ‍ অবহেলা সংক্রান্ত একটি নিউজ। বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আবদুর রউফের বাড়ি ও তার স্মৃতি যাদুঘর অযত্ন অবহেলায় পড়ে আছে। মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত যে কোন নিউজের মধ্যে একটি নিউজ থাকে এই অবহেলা সংক্রান্ত। বীর শ্রেষ্ঠ যখন অবহেলার শিকার হন, তখন সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের যে কোন দাম নাই, সেটা বলাই বাহুল্য।

আর আমরা আম-জনতা কখনও অবহেলার বাইরে ছিলাম না, ভবিষ্যতেও থাকব না সেটা নতুন করে বলার কিছু নাই। মুক্তিযুদ্ধের কথা বলতে বলতে এই দেশের নেতারা মুখে ফেনা তুলে ফেলেন। মুক্তিযুদ্ধের কথা বলার জন্য সংস্কৃতিকর্মীরা দিনের পর দিন রিহার্সেল দেন। মুক্তিযুদ্ধের কথা বলার জন্য টিভি ক্যামেরার সামনে প্রতিযোগিতা লেগে যায়। মুক্তিযুদ্ধের কথা বলার জন্য পত্রিকাগুলো নানা রঙের সাপ্লিমেন্টারি বের করে।

তবু এই অবহেলার সংস্কৃতি দূর হয় না। আসলে এই অবহেলার ব্যপারটা আমরা মেনে নিয়েছি বলেই এই অবহেলা যায় না। দেশের নাগরিক হিসেবে আমরা সব সময়ই অবহেলিত। নাগরিক সুযোগ সুবিধা যা পাওয়ার কথা, কখনই পাই না, পাওয়ার চিন্তাও করি না। বরং চিন্তা করি অন্যের নাগরিক সুবিধা কিভাবে খর্ব করে নিজের সুযোগ সুবিধা বাড়িয়ে নেয়া যায়।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক একটি মন্ত্রণালয় আছে। একটি মন্ত্রণালয় থাকার পরও মুক্তিযোদ্ধারা তাদের সম্মান পায় না। কেননা কাগজে কলমে তাদের সম্মান দেয়ার কথা থাকলেও যাদের মাধ্যমে এই সম্মান দেয়ার ব্যপারটি বাস্তবতা পাবে তাদের অন্তরে মুক্তিযোদ্ধার জন্য কোন সম্মান নাই, মুক্তিযুদ্ধের প্রতি কোন দায়বদ্ধতা নেই। তারা তাদের কাজকে তাদের চাকুরি হিসেবে গ্রহণ করেছে এবং যত বেশি ফাকি দিয়ে চাকুরিটা রক্ষা করা যায় সেই ব্রত নিয়েছে। যখন অন্তরে শ্রদ্ধা থাকে না, বাহ্যিক আড়ম্বরে সেই শ্রদ্ধার প্রকাশের চেষ্টা একটি জোরাজুরি ব্যাপার হয়ে যায়, সেটা একটি বিকৃত ও জঘন্য আচরণে রূপ নেয়াই স্বাভাবিক।

এই অবস্থা দূর করার জন্য যারা সরকারী দায়িত্ব পালন করতে যান, সরকারী চাকুরি করলে মানুষকে যে সেবা দিতে হয় সেই কথা তাদেরকে বাধ্যতামূলকভাবে শিখাতে হবে। তাদের শিখাতে হবে তারা জনগণের সেবক, প্রভু নয়। জনগণকে এবং জনগণের সকল অর্জনকে শ্রদ্ধা জানানো তাদের অবশ্য কর্তব্য। পাশাপাশি জনসেবা, জনদাবি ও ইতিহাস-ঐতিহ্যকে অবহেলা করলে সেটার শাস্তির ব্যবস্থাও করতে হবে। তবেই এই অবহেলার সংস্কৃতি থেকে আমরা বেরিয়ে আসতে পারব।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.