খুববেশি খোজাখুজি না করেও চৌধুরী সাহেবের বাসাটা পাওয়াগেল। পাবলিক ফিগ্যার কিনা। তবে এব্যাপারে বিশেষ প্রজাতির এক সবজীর নামে নামধারি ভুতপুর্ব ক্রীড়া পতিমনন্ত্রীর দুসম্পর্কের এক ভাগনের পরোক্ষ সহায়তা না পেলে কিছুতেই হয়ত এই গুণী, ব্যাপক জনপ্রিও, নন্দিত ক্রীড়া ধারাভাষ্যকার মানুষটির কাছে ভিড়তেই পারতাম না। বাসায় গিয়ে ডোরবেল দিয়ে কিছুক্ষন অপেক্ষা। চিকন মত ছোকরা টাইপ এক মেয়ে এসে দরজা খুলল।
আমাকে বসতে বলে ভিতরে গেল, ফিরেএসে বলে একটু বসেন স্যার রেডিহয়ে আসতেছেন। চৌধুরী সাহেব বেশিসময় নিলেননা। লুঙ্গি এবং স্যান্ডোগ্যাঙ্গি দেখে ভাবলাল কি এমন রেডি হয়েছেন। পরে দেখলাম ওনার মাথায় চুলগুলো প্রয়োজনের তুলনায় বেশী জেল্লা দিচ্ছে। লুঙ্গি ছেড়ে পাজামা না পরলেও ভদ্রলোক আলগা চুলটী মাথায় পরতে ভোলেননি।
পাঠকগন নিশ্চই বুঝতে পেরেছেন কার সাথে আমিদেখা করতে গিয়েছিলাম। হ্যা। ঠিক ধরেছেন। চৌধুরী জাফর উল্লাহ সরাফত।
আমার পরিচয় আগেই ওনাকে দিয়েছিলাম।
বলেছিলাম তার সাথে আমার কিছু অতিব গুরুত্ত্বপুর্ণ কথা আছে। পরিচয়ের সৌজন্যতা সেরে সরাসরি প্রসঙ্গে আসতে বললেন। আমিও এলেবেল কথা বাদ দিয়ে আসল কথা পাড়লাম। বললাম,‘স্যার যুগযুগ ধরে আপনি তো হাডুডু, কুতকুত, কানামাছি, ব্যাডমিন্টন, ক্রিকেট, ফুটবল, সাঁতার সহ সবধরণের খেলাতে অন্যন্ত স্যাফল্যের সাথে ধারাভাষ্য দিয়ে আসছেন আর এ ব্যাপারে দেশে বিদেশে আপনার যে খ্যাতি ছড়িয়..............আমাকে থামিয়ে দিয়ে বললেন, ‘আপনার উল্লেখিত প্রথম দিকের কিছু খেলার ধারাভাষ্য অনেক দিন দেবার সু্যোগ পাচ্ছিনা। আজকাল আর কেউ এগুলো খেলছেনা।
আমার মনে পড়ে আমি প্রথমে কুতকুত খেলার ধারাভাষ্য দিয়ে ক্যারিয়ারের শুরু করেছিলাম। ‘ ভদ্রলোক বেশ আবেগপ্রবন হয়ে পড়লেন।
আমি বললাম, ‘স্যার আমাকে সাহস দিলে একটা কথা বলতে পারি। আসলে যে কারনে আজ আপনার কাছে আশা। ‘ আমকে অভয় দিয়ে বললেন ঠকআছে বলেন।
আমি তখন পুলকিত হয়ে বললাম স্যার পুরনো খেলা চলে গ্যাছে সত্যি কিন্তু একটা নতুন ধরনের খেলা চালু হয়েছে যেখানে কমেন্ট্রি না থাকলেও কমেন্ট করার ব্যাপক সুযোগ আছে। “কমেন্ট” শুনেই ওনার চোখ চকচক করে উঠলো। আলগাচুলের উপরে অলতোভাবে হাত বুলিয়ে শরীরটা সোফাতে এলিয়ে দিয়ে আমাকে বললেন ব্যাপারটা কি একটু খুলে বলবেন।
আমিও সাগ্রহে বললাম স্যার নতুন এই খেলাটার নাম ব্লগিং ব্লগিং খেলা। কিছুটা ঝুকে ভ্রু কুচকে বললেন কেমন যেন শোনা শোনা মনে হচ্ছে তবে ব্যাপারটা আরো একটু ক্লীয়ার করেনতো।
আমি বললাম স্যার এইটা হল পৃথিবীর একমত্র খেলা যেখানে মাঠে খেলয়াড়ের চেয়ে কমেন্টেটর বেশি থাকে। আরো মজার ব্যাপার হলো চাইলেই যেকনো খেলোয়াড় খেলতে খেলতেও কমেন্ট্রি দিতে পারেন। আবার এই খেলার রেফারিরাও (মডু) শুধু খেলয়াড় না, কমেন্টেটরদেরকেও কারনে বা অকারনে সাময়িক বা স্থায়ীভাবে বহিস্কার করতে পারেন। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল অনেকমিলে একমাঠে খেলাধুলা করলেও কেও কাউকে দেখেনা। একদমে বলে থামলাম।
উনি বিস্মায়ে হতবাক হয়ে ফ্যালফ্যাল করে আমার দিকে তাকিয়ে থাকলেন। মুহুর্তেই সম্বিৎ ফিরে আমাকে বললেন কি বলেন এমন খেলাও আছে নাকি যেখানে কমেন্ট্রি দিতে আমাকে ডাকা হয়না? আর আপনার কাছে শুনে আমারতো খেলাটাকে বেশ ইন্টারেসটিং মনে হচ্ছে। আচ্ছা খেলাটা কি ইনডোর নাকি অউটডোর?’
আমি বললাম স্যার খেলাটা ইনডোর কিন্তু জাতীয় এবং আর্ন্তজাতিক উভয় পর্যায়ে একমাঠে খেলাহয়। আর আপনাকে কমেন্ট্রির দওয়াত দেবার জন্যই তো আমি এসেছি। উনি সাগ্রহে রাজী হয়ে গেলেন।
আমি তাকে বাংঙালীদের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাঠ সমুতে নিয়ে গেলাম। উনি কমেন্ট্রি শুরু করার আগে বললেন বিশেষজ্ঞ হিসেবে আমাকে তার সাথে থাকতে হবে অন্তত প্রথমবার। আমিও রাজী হয়ে গেলাম।
চলুন দেখাযাক কিভাবে তিনি কমেন্ট্রি দিয়েছিলেনঃ
চৌ জ়া উ সঃ সুধি দর্শক শ্রোতা, সবাইকে আন্তরিক ভাবে অভিনন্দন জানিয়ে আজকের ব্লগিং ব্লগিং খেলার কমেন্ট্রি শুরু করছি। হাটে, মাঠে, ঘাটে, আড়ালে আবডালে, চীপায়-চাপায়, অফিসে বা বাড়িতে, দেশে-বিদেশে যে যেখানে বসেই ব্লগিং ব্লগিং খেলছেন আপনাদের সবার সাথে আছি আমি চৌধুরী জাফর উল্লাহ সরাফত এবং আমার সাথে সহকারী হিসেবে আছেন নবীন খেলয়াড় নিজের আলু।
দুঃখিত নিজের আলু নয় নিদ্রালু। সুন্দর ঝকঝকে রংবাহারী, দেখতে বড়ই চমৎকার, দৃষ্টিনন্দন এই সয়াহ্যয়ারইনের মাঠ, মনরম পরিবেশ.........কিন্তু মাঠের ডান দিকে একটা খালি রিক্সা কিকারনে দাড় করান আছে ব্যাপারটা আমার মাথায় আসছেনা। কতৃপক্ষ নিশ্চই ব্যাপারটার দিকে নজর দিবেন।
এদিকে এইমাত্র মাঠে নেমেছেন (পুস্টাইছেন) খ্যাতিমান ব্লগার অমি রহমান পিয়াল এসেই একটি প্লাস। অক্ষরকে দেখা যাচ্ছে সারামাঠ জুড়ে খেলছেন।
প্রচুর প্লাস দিয়ে চলেছেন বিভিন্ন পোষ্টে। বলতে বলতে মাঠে আগমন আরিফ জেবতিকের এসেই একটা লং............পোষ্ট দিলেন সাথে সাথেই শুরু হয়ে গেলো প্লাসের বন্যা। ইতিমধ্যে পিয়ালের প্লাসের সংখ্যা বেড়ে দাড়িয়েছে ১২।
হাসিব ,খুশবু, মামুন, মানুষ, প্রলয়, সাঁঝবাতি, ফিউশন ফাইভ, মিলটনকে তাদের নিজেদের যায়গায় থেকে আস্তে আস্তে খেলতে দেখাযাচ্ছে। মেঘ, আরিফুরকে বেশ আক্রমনাত্ত্বক মনে হচ্ছে।
একটা ব্যাপার হয়ত আপনি লক্ষ্যকরে থাকবেন নিদ্রালু সেটা হল নতুন খেলয়াড়দের পোষ্ট পড়ার ব্যাপারে আগ্রহের কিছুটা ঘাটতি দেখাযাচ্ছে।
নিদ্রালুঃ আপনি ঠিকই ধরেছেন আমিও তাই দেখেছি কিন্ত..................
চৌ জ়া উ সঃ আপনি যখন কথাবলছিলেন তখনই আর এক খ্যাতিমান খেলোয়াড়ের আগমন। ওই রাগিব যার কথা না বললেই নয় যিনি ঘরয়া এবং আন্তর্জাতিক ভাবে বিশাল খ্যাতি অর্জন করার যোগ্যতা অর্জন করেছেন। এসেই তিনি তার প্লাসের খাতা খুললেন।
এবারে কিন্তু............... আউট আউট।
অনেকক্ষন ধরে খেলছিলেন মদন তিনি কিন্তু এইমাত্র অউট (লগ অউট) হয়ে ফিরে গেলেন।
নাস্তিকের ধর্মকথাকে দেখাযাচ্ছে কেতাবি ঢংয়ে খেলে চলেছেন। সময় যতই গড়াচ্ছে খেলা কিন্তু ততই জমে উঠছে। এদিকে অনেক নতুন খেড়োয়ারের আনাগোনা দেখা যাচ্ছে। এবং অউটের পরিমানও বেড়ে চলেছে......
বিঃ দ্রঃ আমি নতুন ব্লগার তাই খুববেশি দূর নিতে পারলামনা কমেন্ট্রিকে ।
আশাকরছি আপনারা আরো সমৃদ্ধ করবেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।