আগামী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন কালে সরকারের মন্ত্রিসভা বহাল, মন্ত্রীদের নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা অব্যাহত থাকলে নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকবে না বলে মত দিয়েছেন সাবেক নির্বাচন কমিশনারসহ দেশের বিশিষ্ট নাগরিকরা। তারা বলেছেন, সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন হলে সব প্রার্থী সমান সুযোগ পাবেন না। তাই এই ব্যবস্থায় চাইলেও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হবে না। গত কয়েকদিন ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে কথা বলছেন। তিনি বলেছেন, ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলোর আদলেই দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের সময় মন্ত্রিসভা সীমিত আকারে বহাল থাকবে। সংসদ বহাল থাকলেও অধিবেশন বসবে না। এদিকে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) জাবেদ আলী গতকাল বলেছেন, যুক্তরাজ্য, ভারতসহ বহির্বিশ্বে 'অন্তর্বর্তী সরকারের' মাধ্যমে যেভাবে নির্বাচন হয় আগামী দশম সংসদ নির্বাচনও সেভাবেই হবে। তিনি বলেন, সব দল ও প্রার্থীর জন্য সমান সুযোগ রেখে সবার অংশগ্রহণে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের ব্যবস্থা নেবে ইসি। সব রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, নির্বাচনী প্রচারণায় সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরির দায়িত্ব ইসির। যে নির্বাচনে জনগণ যাকে ইচ্ছে ভোট দেবে এবং ভোটের যথার্থ প্রতিফলন ঘটবে। নির্বাচনকালীন সরকার কাঠামো কেমন হবে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, পলিসি মেকিংয়ের সর্বোচ্চ ব্যক্তি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি পরিষ্কার করেই বলেছেন। তার বক্তব্য নতুন করে ব্যাখ্যা করার প্রয়োজন নেই। সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সংসদ বহাল রেখে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে নির্বাচনে 'লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড' থাকবে না। সব দলকে সমানভাবে নির্বাচনে সমান সুযোগ দেওয়াও সম্ভব হবে না। বিদেশের আদলে বাংলাদেশে নির্বাচন করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, আমাদের দেশে সবাই চায় ক্ষমতা খাটিয়ে হলেও নির্বাচনে বিজয়ী হতে। তাই চাইলেও সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না এবং সব প্রার্থী সমান সুযোগ পাবেন না। সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম. সাখাওয়াত হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বর্তমান আচরণ বিধিতে সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন হলে সবাই সমান সুযোগ পাবে না। তবে শুধু নির্বাচনী আচরণবিধি সংশোধন করলেই হবে না এজন্য আরপিও সংশোধন করতে হবে। আর সংসদ নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ীই করতে হবে। তবে দেখা যাক নির্বাচন কমিশন কি ধরনের আচরণ বিধি করে। এর পরে এ বিষয়ে ভালো বলা যাবে। তিনি বলেন, সংসদ ভেঙে যাওয়ার পরের ৯০ দিনে নির্বাচন হলে বিরোধী দল অপেক্ষাকৃত কম বৈষম্যের শিকার হবে। বিশ্বের অনেক দেশেই এ রীতিতেও নির্বাচন হয়। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, একটি নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য প্রত্যেক প্রার্থীর সমান সুযোগ থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করা খুব জরুরি। কিন্তু সরকার ক্ষমতায় বহাল থেকে নির্বাচন করলে সব প্রার্থী সমান সুযোগ পাবে না। এটি নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বড় প্রতিবন্ধক।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।