আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দাঁড়িয়ে আছি -২



.................আলাপের সতেরো বছর পাঁচ মাস তিন দিন পর ওর নিঃশ্বাসের হলকা আমার ঘাড়ের কাছে। কানের ঠিক নীচে। বুকের নরম গ`লে যাচ্ছে আমার বুকে। যে ঘরে আমরা শুয়ে আছি তার দরজার জায়গা বুজিয়ে ইঁটের দেয়াল, এক কোণায় খাট, ছাদ নেমে এসেছে অনেকটাই। কম পাওয়ারের বাল্ব ঘিরে হলুদ ডিম ওর শরীরের কাঁপন মেপে নিচ্ছে পিঠের উপর রাখা আমার বাঁ-হাত, খুঁজে বেড়াচ্ছে প্রতিটা খাঁজ যেখানে লুকোনো থাকে নেশাঝিমগুলো।

উমম্ ... আরামের মৃদু শব্দ ওর গলায় আটমাস ছ`দিন পর। আরো জড়িয়ে এলো। `কি ভাবছিস বলে ফ্যাল শালা ...` হীরো`র মুখটা মনে করার চেষ্টা করলাম। `... আজ তোমায় পেয়েছি ওস্তাদ। কোথায় তোমার সেই বিখ্যাত হাসিটি? একবার এসে দেখিয়ে যাও গুরু।

` জামার বোতাম খুলে ওর ডান-হাত আমার অনাবৃত শরীর খুঁজলো। `... সময় হয়েছে, বেরিয়ে আয় শালা`- নিজেকে শাসালাম আমি। ওর হাতটা ঘুরে বেড়াচ্ছে আমার বুকে। আমাকে জাগানোর চেষ্টা করছে। একটা চুমু দিলাম ওর চোখের পাতায়।

আড়ালে গালি দিলাম নিজেকে। স্বাগতার ঠোঁট এগিয়ে এলো আই হ্যাভ অলোয়েজ বিন এ্য বেটার ওয়ান। এগিয়ে থেকেছি ওর থেকে সব সময়। ছিটকে পড়েছিল আমার টক্করে পাথরডি`র ফুটবল ম্যাচে। সেই থেকে আমরা বন্ধু।

একই স্বপ্ন দেখেছি, সূর্যতপা`র ফেভার চেয়েছি, মেয়েদের হিড়িক দিয়েছি কলেজের গেটে দাঁড়িয়ে। কিন্তু জিতেছে হীরো। সবাই ওই নামেই ডাকতো। আসলে অনি, অনিকেত। ক্লাশে সারা বছর আমিই বেস্ট বয়।

এক্সামে ও মেরে বেরিয়ে গ্যাছে। আমরা সব গোপন কথা বলেছি একে অপরকে। জেনেছি আমরা যা পেয়েছি তা অন্যজন ছিল বলেই। দেখা হলেই কথা বলার জন্য তাড়াহুড়ো। জানতাম আগে বলে না ফেললে ও আমার কথাটাই শোনাবে আমাকে।

ওর কবিতাই প্রথম ছেপেছিল ঐশী`তে। আমরা দু`জনেই চাইতাম প্রথম হতে তপু`কে লুকিয়ে রাখতাম। তপু আমার, তপু ওর। `... দম ছেড়ে দিস লাস্ট লেগ-এ। তবু তোকেই বেশী ভালো লাগে আমার, শেষ দেখতে চাস বলে।

` জানি একই কথা তপু অনি`কেও বলতো। তপু`র ব্যাপারে আমরা হিংসা করেছি পরস্পরকে। ভালো হয়েছে তপু আমাদের কারো হয়নি। একমাত্র ওই জানতো ব্যাপারটা গলার কাছে ভেজা অনুভব। আমার স্বাদ নিচ্ছে স্বাগতার জিভ।

গালের উপর একটা সবুজ মাকড়সা, ওর নেলপলিশ, নখ। ছোট্ট কামড়। ওর হাত নাভি ছাড়িয়ে আমার বেল্টের হুকে। এক ঝটকায় উঠে বসলাম। জামার বোতাম আটকে ইঁটের দরজা ভেঙ্গে বেরিয়ে এলাম রাস্তায়।

অনি বেঁচে থাকলে ওর বৌ`টা আজ মরতো সোপান যে আকাশটা দেখছি তার কোন রঙ ও মেঘ নেই, সাদাটে। রাস্তার মাথা ছুঁয়ে সোজা উঠে গ্যাছে উপরে। দিনের আলো রয়েছে। একটু পরেই তার সমস্ত অন্ধকার নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়বে রাত। যদিও রাত ভালো লাগে না আমার, আমি ওদিকেই হাঁটছি।

আমি ওখানেই যাবো। সিঁড়ি ভাঙ্গছি। নেশাও তো ভালো লাগে না। তবু করি। সেও আসে ঐ রাতের মতোই।

যেন আসবেই - কিছু বলবি না? - বলবো, তৈরী হচ্ছি। - হয়ে গেলে জানাস। বসবি কোথাও? - তুই বস। আমি হাঁটি। আমাকে হাঁটতে হবে।

- না, চল আমিও যাই তোর সাথে। কিন্তু কত দূর? - ঐ যেখানে আকাশ। - পারবি? - পারবো। পারতেই হবে। - চল, আমি আছি।

আমি জানি ও নেই। ও আছে বিভাসের সাথে। ওরলি সী-ফেস অথবা মেরিন ড্রাইভে কোথাও। বিভাস আমার অফিসিয়াল রিলিভার। যেখানে আমি নেই সেখানে বিভাস আছে।

বিভাসের কাজই তাই। ইন ফ্যাক্ট, হি ইজ পেইড টু রিলিভ মী। কিন্তু ওটুকুই। আমার কাজ করে দেবার জন্য বিভাসকে রাখা হয়নি। ওর সাথে বিভাস আছে।

আমার সাথে ও। - চিঠিটা কবে পাবি? - যে কোনদিন। - পাবি তো? - পাবই। দ্যাটস্ দ্য টার্গেট। আমি টার্গেট মিস করি না।

- আজ আমার রিপোর্ট নিতে যাওয়ার কথা। - যা। - তুইও চল। আমার ভয় করছে। - কেন? - জানি পসেটিভ হবে, তাই।

- ভয় পাস না। এ তো সব মেয়েরই হয়। - হয়তো প্রথম বলেই। - তোকে দেখে তো কিছু বোঝা যাচ্ছে না? - দুর বোকা, আরো কয়েক মাস যাক। `.... কনগ্রাচুলেশন মাই বয়।

` চেম্বারের দরজায় মি. সান্যাল। `.... ম্যানেজমেন্ট হ্যাভ এ্যক্সেপটেড মাই প্রপোস্যাল টু প্রমোট ইউ টু জি.এম। কিন্তু এই শেষ নয়। কয়েক বছর পর তোমাকে বোর্ডরুমে দেখতে চাই। ` উঠে দাঁড়িয়ে চিঠিটা নিলাম ওঁর হাত থেকে।

আমি জানতাম হবেই। তেমনি জানি রিপোর্টাও পসেটিভই হবে। বিভাস হ্যাজ অলোয়েজ বীন এ্য গুড রিলিভার।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।