আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দাঁড়িয়ে আছি -১



যেখানে দাঁড়িয়ে আছি সেখান থেকে কুড়ি গজ তফাতে মুম্বাই ইউনিভার্সিটির বাউন্ড্রিরেলিং ঘেঁষে চলছে একটা ছবির এক্সিবিশন। আর্টিস্ট মেয়েটি কোণায় দাঁড়িয়ে একটি প্রায় সমাপ্ত ছবিতে রং চড়াচ্ছে। মনে হয় `রিয়ালিস্ট`। অন্ততঃ আমার মতো ফাইন আর্ট সমজদারের তাই ধারণা। ছবিগুলি সবই মানুষের প্রতিকৃতি, পুরুষ অথবা নারী।

বাস্তব থেকে সরে। অন্য কথায় বাস্তবের বিস্তৃতিতে, সমগ্রতায়। প্রায় সমাপ্ত ওই ছবিটি আমারই। পরণে হাফ নোংরা পাজামা-পাঞ্জাবী, বাঁ-কাধে ঝোলানো শান্তিনিকেতনী ব্যাগ থেকে উঁকি মারছে কিছু কাগজ ও একটি ফনা তোলা সাপ, বাঁ-হাত আদরের ভঙ্গিতে নামানো ফনার উপর, হেঁটে আসছি সমুদ্রের উপর দিয়ে, চারপাশে অসংখ্য ঢেউ ও ফেনা। মনে পড়লো অনেকদিন আগে এরকম একটা ছবিতে ঠাকুর শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণকে দেখেছিলাম হেঁটে যেতে।

হঠাত্ নিজেকে নিয়ে গর্ব হল আমার। আমিও তাহলে কোন ছবির বিষয় হতে পারি। এসময় পাশে থাকলে সূর্যতপা বলতো - বলেছিলাম না যে তোর কবিতায় এমন কিছু আছে যা পাঠককে দিয়ে আঁকিয়ে নেয় নিটোল একটা ছবি। আর আমিও সঙ্গে সঙ্গে ঢুকে পড়তাম কোন অফিসে ইন্সিওরেন্স ফেরী করতে। অথবা জোগান দিতাম বড়া-পাও কোর্ট ফেরতা কয়েদীদের।

ছবি সম্পর্কে অবশ্য একটা কথা বলতেই হয়, মেয়েটি দারুণ ধরেছে আমার দৃষ্টি, বারো বছর আগে, কলেজষ্ট্রিট থেকে ফেরার পথে মেয়েটি দেখেছে আমাকে। আঁকা থামিয়ে দেখছে ছবির চরিত্রটিকে ব্লু-জীনস্ আর লাল টি-শার্টে কেমন লাগতো। অনেকটা ক্লান্তি ছড়িয়ে হাসলো মেয়েটি - আপনি কী জে জে কলেজের? - না, কলকাতা। - ছবি বিক্রী করতে? - সেটা মাথায় ছিল। তবে এসেছিলাম জাহাঙ্গীরে শো করতে।

- উল্টো ফুটে কেন? - লম্বা লাইন। ঠাঁই নেই। ফিরতে হবে। - এ ছবির নাম কি? - বিপনি। - ফসিল ও হতে পারতো।

পরেরদিন। মেয়েটি একই জায়গায়। ক্লান্ত। রাস্তার পিপিলিকা স্রোত উজানমুখী। অংশ নয় বলেই দেখতে পাচ্ছে বালিয়াড়ী ও অনেকটা সরে যাওয়া সমুদ্র - ফিরছি কাল।

- বিক্রী হলো কিছু? - বিপনি, পাঁচশো। হাসলাম। কলেজষ্ট্রিট, কবিতার বই, পঞ্চাশ পার্সেন্ট ডিসকাউন্ট, আড়াই মাস, চার কপি ও স্বপন..........................

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।