আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সকল হাইব্রিড বীজ বন্ধ্যা নয়

কবিতা ও যোগাযোগ

শ্রদ্ধাভাজন মঞ্জুরুল হকরে পোস্ট পড়ার পর বেশ কিছু অভিমত দিচ্ছিলাম। ধান গবেষণা সম্পর্কে কিছুটা পূর্ব ধারণার বশে আমি ব্রি'র কিছু সফলতার কথা প্রকাশ করেছি। একপর্যায়ে মনে হলো এই বক্তব্য নতুন পোস্টে দেয়া যায়। সেই চিন্তারই ফসল এই পোস্ট। আমার জানামতে, সকল হাইব্রিড বীজ বন্ধ্যা নয়।

আমদানিকৃত হাইব্রিড বীজ বন্ধ্যা। কারণ তারা বীজ পুনরুৎপাদনের প্রযুক্তি দেয় নি। কিন্তু ব্রি'র বিজ্ঞানীরা চীনে গিয়ে ওদের শায়েদ্রি ভ্যারাইটরি উপর গবেষণা করে বীজ উৎপাদন প্রযুক্তি করে সব মিলিয়ে ৮ বছর গবেষণা করে বাংলাদেশে চাষ-উপযোগী এবং বীজ সংরক্ষণের সুবিধাসহ ২টি হাইব্রিড ধান উদ্ভাবন করে। যা বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সির (যে কোনো বীজের জন্য প্রত্যয়নের ক্ষমতাধারী সরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান - এসসিএ, গাজীপুরে প্রতিষ্ঠিত) অনুমোদন নিয়ে কৃষকদের জন্য উন্মুক্ত করেছে। ব্রি হাইব্রিড ধান বীজ রাখার উপযোগী না হলে এসসিএ তার অনুমোদন দিত না।

এইগুলোর ফলন এইচওয়াইভি বা উফশীর চেয়ে বেশি। তবে তা আমদানিকৃত হাইব্রিডের চেয়ে সামান্য কম। তবু বীজ রাখার সুযোগ এবং কম দামে বীজ পাওয়ার সুযোগের জন্য এই দুটি ধানের ব্যাপক চাষ বিদেশি হাইব্রিডের আমদানি বন্ধ করতে পারে। ব্রি'র বিজ্ঞানী ড. ফরহাদ জামিল ১৯৯২ সালেই মঙ্গা নিরসেনর জন্য ব্রিধান-৩৩ চাষের সুপারিশ করেছিলেন। কারণ এটি ২০দিন আগে ফলে।

আর মঙ্গার স্তিতিকাল ৩০ দিন। এতে ১০ দিন মাত্র মঙ্গা থাকার আশঙ্কা। তবে ১০দিন আগে চাষ করতে পারলে ওই ফাঁকটুকুও পূরণ করা সম্ভব বলে তিনি রায় দিয়েছিলেন। কিন্তু বীজ কোম্পানিগুলো এবং দারিদ্র্য ব্যাবসায়ীরা এই ধান চাষে উৎসাহ দেখায়নি। সরকারকেও তারা ভুল বুঝিয়েছে।

কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমালে রংপুরে কর্মরত ধানবিজ্ঞানী ড. আবদুল মজিদ গত বছর (২০০৭) এই ধানের কেরামতি দেখিয়ে কয়েকটি উপজেলায় মঙ্গা তাড়িয়েছেন। তারপর এই সরকার উত্তরবঙ্গে ওই জাতের ধান চাষের মাধ্যমে এবার মঙ্গা অনেকখানিই নিবারণ করেছেন। আমি বলতে চাইছি ব্রির অর্থাৎ দেশীয় প্রযুক্তিই আমাদের সমস্যা মেটাতে পারে। ১৯৭২ সালে যে পরিমাণ চাল আমদানি করতে হত, ২০০৮ সালেও সেই একই পরিমাণ চাল আমদানি করা হয়েছে। দ্বিগুণ মানুষের জন্য অর্ধেক জমিতে প্রয়োজনীয় চারগুণ ফলন কে করল? নিশ্চয়ই ব্রি'র ভ্যারাইটি এবং নতুন চাষপদ্ধতি।

হিসেবটা খুব বেশি জটিল নয়।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.