শিরিনের পোস্টে মন্তব্য দিতে গিয়ে দেখলাম অনেক বড় হয়ে যাচ্ছে, তাই আলাদা করে পোস্ট দিলাম।
Click This Link
এই পোস্টের মন্তব্যে রাগ ইমন বলেছিলেন "জন্মের সময় কেউই আমরা চুক্তি করে আস্তে পারি না যে আমার বিয়েটা একজন ফেরেস্তার সাথে হবে । আবার এইটাই নিশ্চিত না যে ফেরেস্তাদের পরিবর্তন হয় না। মানুষই তো বদলায় , তাই না? আসবাব পত্র তো বদলায় না ! বিশ্বাস করে কাউকে বিয়ে করাটা ঠিক আছে। কিন্তু কেউ কখনো বদলাবে না , প্রমানিত না হলেই সকলেই বাই ডিফল্ট "খুব ভালো মানুষ" এবং বাই ডিফল্ট প্রত্যেকেই স্ত্রী/ স্বামীকে ভালোবাসিয়া প্যাতাপ্যতা হইয়া যাইবে - এই ধরনের মাদক নিজে গেলা এবং ছোটবেলা থেকে শিশুদের, বিশেষ করে মেয়ে শিশুদের গেলানো একটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হওয়া উচিত ।
"
রাগ ইমনের কথার রেশ ধরেই বলছি। সংসারটা কিন্তু কোন কনফার্মড রূপকথার গল্প না! এখানে ভালোবাসা হয়, সে ভালোবাসা মরেও যেতে পারে। এখানে শুধু ঘৃণা নিয়ে দুজন মানুষ বছরের পর বছর এক ছাদের নীচে থেকে যায়।
আমি শুরু থেকেই বলছি-
বিয়ের ৩ বছর পর থেকে একটা মাসের ব্যবধানে কেন মনে হলো যে দূরে সরে গেছে? বা বড় কিছু হয়ে গিয়েছে? এর আগে কি মেয়েটা আসলেই কাছে এসেছিল? নাকি শুরু থেকেই সে ঢুকতেই পারেনি তাদের স্বপ্ন বাসরে?
মেয়েটি প্রশ্ন রেখেছে-"(আসলে ভালো বউয়ের সংজ্ঞাটা কী?"
আমদের দূর্ভাগ্য এদেশে এখনো সমাজ মেয়েদেরকে ভালো বউ বানাতেই সচেষ্ট থাকে! মোটামুটি পড়াশোনা করার পর থেকে মেয়েটিকে মন্ত্র পড়ানো হয়-' স্বামীর সংসার- আর সূখী পরিবারের গল্প'
কেউ বলেনা তুমি আগে স্বাবলম্বী হও, তুমি স্বপ্ন দেখো- তোমার স্বপ্নে তুমি নিয়ে আসো কাউকে- অন্যের স্বপ্নে ঢুকতে চেয়ো না!
বিয়ের পরপর মেয়েরা প্রেমিকা কিম্বা ছেলেদের স্বপ্ন দেখা রাজকন্যা থেকে থেকে আটপৌড়ে গৃ্হিণী আর 'লিসা-পলাশের 'মা হয়ে যায়। জড়িয়ে পরে গতানুগতিক দাম্পত্যে।
তেল-নুন, শশুর- ননদ, আর হেঁসেল ঠেলতে ঠেলতে হয়ে পরে অমুক ভাবী আর তমুক বাসার মেমসাহেব!
রোমান্টিক পুরুষ হয়ে পরে 'লিসা-পলাশের বাবা' কিম্বা - 'আপনার ভাই';
ভালবাসার স্বপ্নের গোলাপ কুঁড়ি কবে শুকনো হয়ে ঝড়ে পরে শুষ্কতায় দুজনের কেউ টের পায় না। ফিঁকে হতে থাকে অনুভুতিগুলির সুক্ষ্ণ বোধ!!
সূবর্ণা একটা সাক্ষাতকারে বলেছিল- ' এই সময়গুলিতে হঠাৎ তৃ্তীয় কেউ এসে জানান দেয়- আসলে কি ছিল, কি ভাবা হয়েছিল- কি হারিয়ে যাচ্ছে!! চমকে উঠে পুরুষ, চমকে উঠে নারী। এখানেই মানুষের সেই চিরন্তন টানাপোড়েনের সুত্রপাত হয়। যারা হারানোর দলে নেই তারা সিদ্ধান্ত নেয় নিঠুরভাবে। সবকিছু দলিত করে, হয়তো কিছু মিছে মায়ায়ও।
নিজের জন্য ভাবতে গিয়ে আহত করে ফেলে তার চারপাশ। আর কেউ কেউ এক ঝটকায় ফিরে আসে রুঢ় বাস্তবতায়। নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে আসে চেনা গন্ডিতে- দুই ভুবনের দুই বাসিন্দা হয়ে কাটিয়ে দেয় সারাটা জীবন।
প্রাচ্য এবং পাশ্চাত্যের তথাতটা এখানে প্রকট। ওরা সম্পর্কের ঠুনকো রূপ কে মেনে নিতে পারেনা।
আর আমরা সম্পর্কের বাইরে ভাবতে পারিনা। দুই ভাবেই ক্ষতিগ্রস্থ হয় আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম।
প্রসঙ্গে ফিরে আসি-
এখানে লেখিকা কোথায় নিজেকে পরাজিত মনে করছেন?
১। অন্য একজন মেয়ের কাছে তার অনুভুতির পরাজয়? কই লেখার কোথাও তো উনি তার স্বামীর প্রতি ভালবাসার কোন উল্লেখ করেননি?!
২। স্বামীর শঠতা? হ্যাঁ- এটা ঠিক আছে, কারণ শশুর বাড়ির সবাই ব্যাপারটা যেনেও পক্ষাবলম্বন করেছিল- এবং এতে বউটিকে তারা একেবারেই কোন ভাবনায় রাখেনি।
তারা সমঝোতার কোন চেষ্টা করেনি- বরং চতুরতার আশ্রয় নিয়েছে। তারা কেন ধরে নিল যে এই সম্পর্ককে টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়?
৩। সন্তানের প্রতি অবহেলা? এই সব ঘটনায় দুঃখ জনক হলেও সত্যি সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয় বাচ্চারা! কেউ ভাবেনা তাদের কথা। আমদের লেখিকার ক্ষেত্রে সন্তানের পিতার ভূমিকা জানিনা। কিন্তু উনি কি তার সন্তানকে সঠিক শিক্ষা দিতে যাচ্ছেন?
"আমি তাকে ছোট থেকে জানাব, তার বাবা মারা গেছে।
এই সমাজ যেন তাকে আঙ্গুল উঁচিয়েনা বলে, তার বাবা চরিত্রহীন। " কেন?
কেন এতো বড় মিথ্যে নিয়ে সে বেড়ে উঠবে? দুজন আলাদা হয়ে যাওয়া মানুষের কি তাদের সন্তানের প্রতি ভালবাসা থাকেনা? এই বাচ্চাটা বড় হয়ে কি পুরষদের প্রতি বিদ্বেষ নিয়েই থাকবে না?
অনেকে হয়তো আমাকে ভুল বুঝতে পারেন এই ভেবে যে- আমি একজন নষ্ট পুরুষের সাফাই গাইছি। আমি কিন্তু আমার লেখার কোথাও সেই পিতাকে কিম্বা স্বামীর পক্ষ নিয়ে আলোকপাত করছি না। সে খুব সাধারণ মিড এজ ক্রাইসেসের একজন রিপু আক্রান্ত পুরুষ হয়তো। নিজের ভালোলাগার অনুভুতিকে কিম্বা স্বার্থের জন্য যে সন্তানের প্রতি বাৎসল্যকে উপেক্ষা করেছে।
আমার মূল আলোকপাত একজন নারীর জন্য- যে নিজেকে বড় হয়ে উঠতে দেখতে চায়। সম্পর্কের সূচনা যেমন হয়, নষ্টও হয়ে যেতে পারে খুব সহজাতভাবেই। সেটা যেন মানুষের মূল লক্ষ্যকে বিচ্যুত না করে। সব মেয়েরই উচিত নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করে নিজের পায়ে দাড়ানো ( সেটা বিপর্যয়ের পরে নয়- আগেই) সম্পর্কের উঠা নামাকে মেনে নিয়েই সেটাকে যদি চলমান রাখা যায় কিছু স্বার্থ ত্যাগ করে হলেও (দুই পক্ষ থেকেই)। আর যদি নেহাতই আলাদা হয়ে যেতেই হয়, সেটা যেন সমোঝতার ভিত্তিতে হয়, ভবিষ্যত প্রজন্মকে সুন্দর সময়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে - দুই পক্ষ থেকেই।
বদলে যাওয়া সময়-সমাজের এ ব্যাপারগুলি থেকে আমাদের বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকার কোন সুযোগ নেই।
একটু অগোছালো হয়ে গেলো লেখাটা, পূর্ববর্তী প্রস্তুতি না থাকায়। পাঠকের মতামত কাম্য।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।