আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার রূপালী রাত্রি



বিছানায় শুয়ে আছি, হাতে ম্যানেজমেন্ট বইটা। শত অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও চোখ বুলিয়ে যাচ্ছি এলোমেলো ভাবে। হুট করে কারেন্ট চলে গেল। কিছুক্ষণের জন্য নিজেকে হারিয়ে ফেললাম নিকষ কালো অন্ধকারে। তার অল্প কিছুক্ষণ পরেই টের পেলাম আজকে পূর্ণিমা, কারণ, আমার বিাছানার কাছের জানালাটা দিয়ে চাঁদের আলো পড়েছে বিছানার উপর।

জানালার কাছে গিয়ে গ্রিলে দুই হাত রেখে তাকালাম আকাশের দিকে। আকাশে শোভা পাচ্ছে পূর্ণ চাঁদ, আর সে চাঁদের আলোয় ভেসে যাচ্ছে সম¯- প্রকৃতি। তোমাদের এই ব্য¯- নগরীতে চাঁদ দেখতে হয় জানালার গ্রিল ধরে ! জানালা থেকে সরে এসে দরজার কাছে এসে দাঁড়ালাম। সবাই এখন ঘুমে। খুব আ¯ে- করে দরজাটা খুললাম, তারপর নিঃশব্দে ছাদের দিকে দিলাম ছুট ।

ছাদে উঠেই ¯-ব্ধ আমি আরও বেশি ¯-ব্ধ হয়ে গেলাম। অপূর্ব ! অপূর্ব জোছনায় ভেসে যাচ্ছে চারিদিক, তার মাঝে একা দাঁড়িয়ে আমি। নিশ্চুপ প্রকৃতি, নিশ্চুপ আমিও। পরিষ্কার আকাশে কয়েকটা তারা জ্বলজ্বল করছে, কিছু সাদা মেঘও চোখে পড়ল তখন। আকাশ ছেড়ে চোখ ফেরালাম বাসার পাশের মাঠটার দিকে।

অল্প পানিতে ডুবে আছে সেটা এখন, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পানায় ভরে গেছে সম¯- মাঠ। তুমি এই মাঠটাকে বলতে নর্দমা, আমি বলতাম এটাই আমার সমুদ্র। পানিতে চাঁদ দেখতে আগে খুব ভালো লাগতো। অনেকদিন পানিতে চাঁদ দেখা হয় না, আজকে দেখতে খুব ইচ্ছে করছিল, কিন্তু উপায় কই ? পানার জন্য তো পানিই দেখা যায় না, পানিতে আবার চাঁদ দেখবো কিভাবে ? ছাদের রেলিং-এ হেলান দিয়ে বসে পড়লাম। পকেট থেকে মোবাইলটা বের করলাম।

ভাবলাম একটা এস.এম.এস করি তোমাকে। লিখলাম একটা এস.এম.এস- দু-হাত পেতে জোছনা ধরো, বাইরে অপূর্ব জোছনায় ভেসে যাচ্ছে সম¯- পৃথিবী। কিন্তু মেসেজ সেন্ট হলো না। অনেকদিন থেকেই তো তোমার মোবাইলটা বন্ধ। মনেই ছিল না।

বুঝতে পারলাম সবকিছু এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে আমার। মনটা খারাপ হয়ে গেল তখন, আমি চুপচাপ বসে জোছনা দেখছি, তুমি কি করছো কে জানে ? জোছনা দেখছো হয়তো মুগ্ধ হয়ে অথবা ব্য¯- আছ কোনো কাজে। মোবাইলটা পকেটে ঢুকাতে গিয়েই মনে পড়লো- আজকে আমার জন্মদিন ছিল! অবাক হয়ে গেলাম, আজকে আমার জন্মদিন ছিল অথচ আমার মনে নেই! মোবাইলটা পকেট থেকে বের করলাম সাথে সাথেই। মেসেজ ইনবক্সটা ঘেটে দেখলাম অনেকবার। নাহ্, কোনো এস.এম.এস আসেনি।

শুভ জন্মদিন, এই কথাটা লিখে কেউই পাঠায়নি। সবাই ব্য¯- এখন নিজেকে নিয়ে, এতো কিছু কি আর মনে থাকে ! শেষ পর্যš- ‘শুভ জন্মদিন, ভালো থেকো !’ এই কথাটা লিখে পাঠিয়ে দিলাম নিজের নম্বরেই। সেকেন্ড কয়েক পরই মোবাইলটা বেজে উঠল, এস.এম.এস টা এসেছে। নিজের পাঠানো এস.এম.এস ‘শুভ জন্মদিন, ভালো থেকো !’ পড়লাম। তারপর মনটা ভালো হয়ে গেল, অনেক ভালো ! জোছনা দেখার সময় মন খারাপ করে থাকতে নেই, জানো ? এই ছিল গতকালকের রাত্রি, আমার রূপালী রাত্রি !



এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।