উসাইন বোল্ট প্রমাণ করে দিলেন, ভোরের সূর্য সব সময় দিনের সঠিক পূর্বাভাস না-ও দিতে পারে। কখনো কখনো উল্টোটাও হয়। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের বছর। অথচ মস্কো বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ শুরুর আগেই অ্যাথলেটিকস বিশ্ব টালমাটাল হলো ডোপ কেলেঙ্কারির খবরে। ডোপপাপী আসাফা পাওয়েল, টাইসন গের মতো স্প্রিন্টাররা।
চোটের কারণে শুরুর আগে মস্কোর টুর্নামেন্ট থেকে সরে দাঁড়ান ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইয়োহান ব্লেকও। সময়ের অন্যতম সেরা তিন স্প্রিন্টারকে একসঙ্গে হারিয়ে অ্যাথলেটিকস বিশ্বে রীতিমতো হাহাকার। বোল্ট নিজেও মৌসুমের শুরুটা করেছিলেন হার দিয়ে। সব মিলিয়ে বর্ণহীন এক মৌসুমের শঙ্কাই পেয়ে বসেছিল!কিন্তু বাস্তব চিত্রটা ভিন্ন। শুরুর সেই হতাশা, নেতিবাচক খবর আর শঙ্কাকে এক পাশে সরিয়ে রেখে মৌসুমটি ঠিকই আলোকিত করেছেন বোল্ট।
মৌসুমের শেষে এসে আপনাকে বলতেই হচ্ছে, কী দুর্দান্ত একটা মৌসুমই না কাটালেন বোল্ট! বিশ্ব অ্যাথলেটিকসও নয় কি?রোমে মৌসুমে নিজের প্রথম মিটেই যুক্তরাষ্ট্রের জাস্টিন গ্যাটলিনের কাছে হেরে যান বোল্ট। হতাশার শেষও ওখানেই। এরপর লন্ডন-মস্কো-জুরিখ, যেখানেই স্প্রিন্টের আসর বসেছে, সেটি বোল্টময় হয়ে উঠেছে। জ্যামাইকান বজ্রবিদ্যুৎ মৌসুমের শেষটাও করলেন জয় দিয়ে। গত পরশু বেলজিয়ানের ব্রাসেলস ডায়মন্ড লিগ ছিল এ বছরে বোল্টের শেষ প্রতিযোগিতা।
প্রতিদ্বন্দ্বীদের স্পষ্ট ব্যবধানেই পেছনে ফেলে ১০০ মিটার জিতেছেন বোল্ট। সময় করেছেন ৯.৮০ সেকেন্ড। মস্কো বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের (৯.৭৭ সেকেন্ড) পর এ বছরে এটা বোল্টের দ্বিতীয় সেরা সময়। ৯.৯০ সেকেন্ড সময় করে দ্বিতীয় হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের মাইকেল রজার্স। সমান ৯.৯৪ সেকেন্ড সময় করলেও মস্কোতে রুপাজয়ী গ্যাটলিনকে টপকে তৃতীয় হয়েছেন বোল্টের স্বদেশি নেস্টা কার্টার।
ফুরফুরে মেজাজে ছুটি কাটাতে যেতে পারছেন বলে উচ্ছ্বসিত বোল্ট, ‘মৌসুমে এটা আমার শেষ দৌড়। সময়ও হয়েছে আমার মৌসুম-সেরার (৯.৭৭) কাছাকাছি। আমি খুবই খুশি। ’ ব্রাসেলস মিটটাই বোল্টের কাছে ছিল উপভোগ্য, ‘এটা ছিল ‘উসাইন বোল্ট ফ্যাশনে’র কাছাকাছি। শুধু মৌসুমের শেষ দৌড় বলেই নয়, দর্শকদের কারণেও।
সন্ধ্যাটি ছিল অসাধারণ এবং আমাকে উজ্জীবিত করেছে। ’যথারীতি শুরুটা ছিল বাজে। শেষ ৪০ মিটারে ঝড় তুলে প্রতিদ্বন্দ্বীদের ছিটকে দিয়েছেন। বোল্ট নিজেই বলেছেন, ‘সত্যিই এটা ছিল বছরের সবচেয়ে বাজে শুরু। তবে আমি খুবই নির্ভার ছিলাম এবং দৌড়টা উপভোগ করেছি।
’আর ট্র্যাকে নামার তাড়া নেই। সময় এখন ঘুরে বেড়ানোর। সেই পরিকল্পনাও করে ফেলেছেন বোল্ট, ‘মৌসুম শেষে আমার কোনো উৎকণ্ঠা নেই। আমি এখন পুরোপুরি নির্ভার। সময়টা মজা করে কাটাব।
প্রথমে বাড়ি যাব। বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করব এবং পরিবারকে সময় দেব। ’ এ বছর আর কোনো প্রতিযোগিতায় অংশ নেবেন না। আগামী বছরে কোনো বিশ্ব টুর্নামেন্টও নির্দিষ্ট নেই। যদিও ইঙ্গিত দিয়েছেন দৌড়াতে পারেন কমনওয়েলথ গেমসে।
পাখির চোখ করে বসে আছেন ২০১৬ রিও অলিম্পিককে, সে জন্যই ২০১৪ সালে নিজেকে চোটমুক্ত রাখার প্রচেষ্টা। কারণ বোল্ট জানেন বয়স থেমে থাকে না। এএফপি। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।