ইচ্ছেমতো লেখার স্বাধীন খাতা....
বৃটেনের দোকানদাররা অন্যরকম। কেউ যতোই ময়লা পোশাকে দোকানে যাননা কেন জিনিসপত্র দেখাতে কার্পণ্য করে না। হাসিমুখে কথা বলে। আমি অবশ্য বাংলাদেশের মানুষ। দামী দোকানে ঢুকতে ভয় পাই।
কে জানে, কোন ঝামেলা হয়ে যায়।
ঢাকায় একবার এক প্রবাসী বন্ধুর সঙ্গে দোকানে আইপড দেখতে গিয়েছিলাম। দামটা কোনোভাবেই জানতে পারিনি। দোকানদার জানিয়েছিল কিনবেন না যখন, দাম জেনে কি করবেন.... । যাই হোক, দামী জিনিসপত্র তো আর ভালোমতো না দেখে কেনা যায়না।
হকার্স মার্কেটও অবশ্য ভাল না। ফার্মগেটে একবার একজন ডাক্তারকে হকাররা পিটিয়ে মেরে ফেলেছিল। ওনার সাথে হকারদের দামাদামি করতে গিয়ে কথা কাটাকাটি হয়েছিল। পরে সম্ভবত দুইজন হকারের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছিল।
বাংলাদেশ থেকে বৃটেনে আসলাম অনেকদিন হলো।
কতো কিছু দেখি। কিন্তু ছবি তুলতে পারিনা। ক্যামেরা নাই। মোবাইল ক্যামেরার ছবিতে পোষায় না।
দরকার ছিল একটা ভালো কমপ্যাক্ট ক্যামেরা।
যেটাকে পকেটে করে কাজেকর্মে নিয়ে যাওয়া যাবে। আবার ভাল ছবিও তোলা যাবে।
ঢাকার এক বড়ভাইয়ের পরামর্শে ক্যানন জি৯ ক্যামেরাটাই পছন্দ হয়েছিল। এ দেশের সব ভালো দোকানের তথ্যই ইন্টারনেটে পাওয়া যায়। চেক করলাম।
এ ক্যামেরাটার দাম তিন ধরনের। সবচেয়ে কম হচ্ছে অনলাইন স্টোরে (যেমন আমাজন ডট কম), মোটামুটি হচ্ছে আর্গোস (লো কোয়ালিটি), আর আছে পিসি ওয়ার্ল্ড, কমেট (মোটামুটি), জেসোপস (ভাল)।
আমাজন থেকে কিনার পরিকল্পনা বাদ দিলাম। কারণ ক্যামেরায় কোনো সমস্যা হলে তা ঠিক করা ঝামেলা।
ক্যামেরাটা দেখার জন্য আর্গোসে ইন্টারনেটে বুকিং দিলাম।
দোকানে যাওয়ার পর তারা খুব ব্যস্ততার মাঝেও কোনো ঝামেলা না করেই ক্যামেরাটা বের করে দেখালো। জিজ্ঞাসা করলাম, এক বছরের ওয়্যারেন্টি? তারা পরিষ্কারভাবে ওয়্যারেন্টিটা স্বীকার করছিল না। তিন বছরের ওয়্যারেন্টির জন্য অতিরিক্ত ৪০ পাউন্ড চাইছিলো। ভাবলাম দূর, অন্য জায়গায় যাই। তাছাড়া এদের জিনিসের কোয়ালিটিও ভাল হয়না বলে শুনেছি।
গেলাম এ এলাকার সবচেয়ে ভাল দোকান, জেসোপসে। লোভীর মতো ক্যামেরাগুলোর দিকে তাকিয়েছিলাম। ক্যানন জি৯ দেখছি দেখেই দোকানদার ক্যামেরাটা বের করে হাতে ধরিয়ে দিল। দোকানদারের মহানুভবতায় বেশ অবাক হলাম। ইন্টারনেটে দেখেছি, এখানে এ ক্যামেরাটার দাম আর্গোসের চেয়ে ৩০ পাউন্ড বেশি।
তবু জিজ্ঞাসা করলাম দাম? জানালো ৩০০ পাউন্ড। আমি তো অবাক। আর্গোসের সমান দাম কেন? বললো, ডিসকাউন্ট চলছে। আর ওয়্যারেন্টি? এক বছরের ম্যানুফ্যাকচারার্স। এর পর দোকানদারের মহানুভবতায় আমি আরো অবাক হলাম।
না চাইতেই তিন বছরের ব্রেক ডাউন ওয়্যারেন্টি তিনি আমাকে অর্ধেক দামে দিয়ে দিলেন। প্রেমের বিয়েতে রাজি হওয়ার মতোই আমি কোনো কথা না বলে ব্যাংক কার্ডটা তার দিকে বাড়িয়ে দিলাম।
আজকে বিকালে অ্যাসটন পার্কে তোলা ফুলের ছবিগুলো।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।