অতীত খুড়ি, খুঁজে ফিরি স্বজাতির গুলিবিদ্ধ করোটি
আমাদের পাড়ায় সেলুন একটাই। সেখানকার প্রতিটি শীলই সুশীল। তাই অন্য সেলুনে শীলদের যেমন বাধা খদ্দের থাকে, আমাদের এখানে সেই ঝামেলা নাই। সবাই সুশীল বলে সবারই সমান কদর ক্ষৌরি করাতে আসা লোকজনের কাছে। মুড়ি মুড়কির একদর।
সকালে মেয়ের অষুধ কিনে ঢু দিলাম। চেয়ার সব দখলে। পরে আসতে পারি, কিন্তু ৫ তলা উঠানামার ভয়ঙ্কর পরিশ্রম ও উপজাত ক্লান্তির কথা ভেবে ক্ষ্যামা দিলাম। এতক্ষণ মোটামুটি মুরগি আর মাছের দরে আলোচনা ঘুরপাক খাচ্ছিলো। আমাকে দেখেই সেটা মান্নায় টার্ন নিলো।
মামা, অনেক মানুষ হইছে তো মান্নারে দেখতে। আমি বলি হ। দোকানে একটি পত্রিকা রাখা হয়, আলাপচারিতার জন্য সুশীলদের সেটা অবশ্যপাঠ্য শুধু নয়, ঠোটস্থ থাকাটাও জরুরী। নতুন চাকুরিতে ঢোকা এক সুশীল সে প্রমাণ দিতেই এফডিসির ভিড়, লাঠি চার্জ থেকে শহীদ মিনার- ৫ মিনিটের এক ঝড়ো বিবৃতিতে সে বলে গেলো একনাগাড়ে।
মাঝে এক কাস্টোমারের সংযুক্তি- কাজী হায়াত সবচেয়ে বেশী কানছে।
তার তো অনেকগুলা ছবি ছিলো মান্নার। এইগুলা পুরা পানিতে। আরেক সুশীল প্রথম আলো কোট করল- মান্নার ছেলে বলছে সব টাকা ফিরত দিবো, কিন্তু বাবারে গাইল পাইরেন না। মান্নার যে একটা মেয়ে আছে সেটাও আমি তাদের কাছে শুনলাম। মান্নার বউ কই ছিলো, কেন দেরিতে আসলো সেগুলাও।
আইচ্ছা মান্না কি নেশাপানি করতো নাকি? এক খদ্দেরের প্রশ্নের জবাবে বড় সুশীল যিনি দোকানের মালিকও বলল- শোনেন স্যার। বাংলাদেশে নাটক যারা করে সবাই একটু গাঞ্জা মদ খায়। না খাইলে সম্মান থাকে না। নবাগত সুশীল যোগ করে- সবচেয়ে বেশী খায় পুর্নিমা, সে তো ইয়াবার ব্যবসা করে। এখন পুলিশের হাত থেকে বাচতে এক আমেরিকানরে বিয়া করছে।
ছেলের বাড়ি চট্টগ্রাম, আমাদের ওইখানে।
আলোচনা ঘুরে মোড় নিলো মান্নার সম্ভাব্য উত্তরসূরীতে। বড় সুশীল বললেন-এইবার আলেকজান্ডারের (বো) কপাল খুলবে। সে ছাড়া আর রাজনীতি ডায়লগ দেয়ার মতো নায়ক নাই। মাঝারি সুশীল বলল, না দাদা।
আমিন খান আছে, অমিত হাসান আছে। ছোটো সুশীল তীব্র প্রতিবাদ করে বলল, আমিন খান আর অমিত হাসান বুড়া হইচে। তাদের মাংস টান খাইয়া গেছে। তাদের মানাইবো না। ফেরদৌস তো হিন্দি ছবি করে।
রিয়াজ-শাকিবরে প্রেমের ছবি ছাড়া মানাবে না। দাদায় ঠিক বলছে, আলেকজান্ডার।
এই পর্যায়ে এসে বউর জরুরী ফোন পেয়ে আমাকে স্থান ত্যাগ করতে হয়। তাই আলোচনার সিদ্ধান্ত জানা হয় নাই। পরেরবার খোজ নিয়া জানাবো তারা কারে মান্নার সম্ভাব্য উত্তরসূরী হিসেবে মানলো।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।